Inqilab Logo

রোববার ১৭ নভেম্বর ২০২৪, ০২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৪ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

ঘূর্ণিঝড় ‘মোরা’ চট্টগ্রাম উপকূল ছুঁয়ে উত্তর দিকে অগ্রসর হচ্ছে

অনলাইন ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ৩০ মে, ২০১৭, ১১:২৫ এএম | আপডেট : ১১:৩৬ এএম, ৩০ মে, ২০১৭

অনলাইন ডেস্ক : পতেঙ্গা আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে ঘূর্ণিঝড় ‘মোরা’ মঙ্গলবার (৩০ মে) ভোর ৬টা থেকে কুতুবদিয়ার হয়ে কক্সবাজার-চট্টগ্রাম উপকূল ছুঁয়ে আরও উত্তর দিকে অগ্রসর হচ্ছে।

বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন পতেঙ্গা আবহাওয়া অফিসের ডিউটি অফিসার মাহমুদুল আলম। তিনি বলেন, ঘূর্ণিঝড়টি কুতুবদিয়ার নিকট হয়ে কক্সবাজার-চট্টগ্রাম উপকূল ছুঁয়ে আরও উত্তর দিকে অগ্রসর হচ্ছে। ঘণ্টায় বাতাসের গতিবেগ ৮৯ থেকে ১১৭ কিলোমিটার বেগে প্রবাহিত হচ্ছে। কোথাও কোথাও বৃষ্টি হচ্ছে। বাতাসের সাথে ভারী বর্ষণ হওয়ারও সম্ভাবনা রয়েছে।

জেলা প্রশাসনের কন্ট্রোলরুমের দায়িত্বে থাকা জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট হাসান বিন আলী বলেন,বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড় মোরা থেকে বাঁচতে চট্টগ্রামের ১৪ উপজেলার মধ্যে ৭টি উপজেলাকে উপকূলীয় এলাকা হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। জেলার ৪৭৯টি আশ্রয়কেন্দ্রে প্রায় লক্ষাধিক মানুষ আশ্রয় নিয়েছেন। তাদের রক্ষণাবেক্ষণে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসনের দায়িত্বপ্রাপ্ত নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটগণ রয়েছেন। এখনো কোথাও কোন দুর্ঘটনার খবর পাওয়া যায় নি।

বাঁশখালী উপজেলায় খবর নিয়ে জানা গেছে, সেখানে মাঝারি ধরনের বাতাস প্রবাহিত হচ্ছে। সাথে রয়েছে বৃষ্টিও। বাতাসে উপকূলীয় ইউনিয়ন ছনুয়া, বাহারছড়া, রত্নপুর, খানখানাবাদ, গণ্ডামারা এলাকায় বাতাসে গাছপালা ভেঙ্গে গেছে ও ঘরের চাল উড়িয়ে নিয়ে গেছে। তবে বড় ধরনের ক্ষয়ক্ষতির খবর এখনো পাওয়া যায়নি।

প্রাথমিকভাবে কুতুবদিয়া, কক্সবাজার, টেকনাফ ও সেন্টমার্টিনে বেশ কিছু কাঁচা ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত হওয়ার খবর এসেছে। এর মধ্যে সেন্টমার্টিনেই দেড় শতাধিক বাড়িঘর বিধ্বস্ত হয়েছে। ঝড়ে বিধ্বস্ত হয়েছে বহু গাছ। সড়কে গাছ পড়ে কিছু এলাকায় সড়ক যোগাযোগও বিঘ্নিত হচ্ছে। বিভিন্ন এলাকায় বন্ধ রয়েছে বিদ্যুৎ সরবরাহ। উপকূলীয় জেলাগুলোর নিম্নাঞ্চল স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে বেশি উচ্চতার জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হয়েছে। তবে ভাটার সময় ঝড় উপকূল অতিক্রম শুরু করায় জলোচ্ছ্বাস ভয়ঙ্কর হয়ে উঠতে পারেনি।

জেলা প্রশাসনের সহকারী কমিশনার ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) আছিয়া খাতুন বলেন, জেলা প্রশাসকের নির্দেশনায় নগরীর লালখান বাজার মতিঝর্ণা পাহাড় এলাকা থেকে শতাধিক পরিবারকে সরিয়ে নেয়া হয়েছে। ঝুঁকিপূর্ণ পাহাড়ের পাদদেশ থেকে সরিয়ে নিরাপদ স্থানে চলে যেতে মাইকিং চলমান রয়েছে। পার্শ্ববর্তী লালখানবাজার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় আশ্রয় কেন্দ্রে সোমবার রাত থেকে শতাধিক এলাকাবাসী আশ্রয় নিয়েছে। তবে ঝুঁকিপূর্ণ অনেক লোকজনকে এখনো সরানো যাচ্ছে না বলেও জানান তিনি।

মোরার প্রভাবে উপকূলীয় জেলাগুলোতে বৃষ্টি চলছে। কক্সবাজার ও চট্টগ্রামে ঝড়ো হাওয়ার সঙ্গে চলছে ভারি বর্ষণ। উপকূলীয় জেলাগুলোর নিম্নাঞ্চল স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে ৪ থেকে ৫ ফুট বেশি উচ্চতার জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হতে পারে বলে আভাস দিয়ে রেখেছে আবহাওয়া অফিস। বুয়েটের ইন্সটিটিউট অব ওয়াটার অ্যান্ড ফ্লাড ম্যানেজমেন্ট বলছে, ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে মঙ্গলবার সকাল থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টায় কক্সবাজার ও আশপাশের এলাকায় ১২৮ মিলিমিটার থেকে ২৫৬ মিলিমিটার পর্যন্ত বৃষ্টি হতে পারে। অতি ভারি বর্ষণে চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের পাহাড়ি এলাকার কোথাও কোথাও ভূমিধসেরও আশঙ্কা থাকে। সাগর উত্তাল থাকায় বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত সব মাছ ধরার নৌকা, ট্রলার এবং সমুদ্রগামী জাহাজকে পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত নিরাপদ আশ্রয়ে থাকতে হবে।

গত ২৬ মে দক্ষিণ-পূর্ব বঙ্গোপসাগরে একটি লঘুচাপ সৃষ্টি হওয়ার পর ২৮ মে সকালে তা নিম্নচাপে এবং মধ্যরাতে ঘূর্ণিঝড়ের রূপ নেয়। সোমবার সন্ধ্যায় তা প্রবল ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হয়।



 

Show all comments
  • Nur- Muhammad ৩০ মে, ২০১৭, ২:০১ পিএম says : 1
    হে আল্লাহ আমাদিগকে এই বিপদ থেকে রক্ষা করুন। আপনি মহান, বাঁচা ও মরার মালিক আপনি। তাই দেশ ও জাতীয় র বিপদে আপনার কাছে প্রর্থনা করছি। বাঁচার আকুতি জানচ্ছি। আমিন।
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ