পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
বিশেষ সংবাদদাতা, চট্টগ্রাম ব্যুরো : বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট গভীর নিম্নচাপটি ঘনীভূত হয়ে শক্তি সঞ্চয় করে গত মধ্যরাতের পরই রূপান্তরিত হয়েছে সামুদ্রিক ঘূর্ণিঝড়ে। ঘূর্ণিঝড়টির নাম দেয়া হয়েছে ‘মোরা’। এটি এখন পর্যন্ত গতিবিধি অনুসারে বাংলাদেশ উপকূলের দিকেই ধেয়ে আসছে। ‘মোরা’র গতিমুখ চট্টগ্রাম-কক্সবাজারের দিকে রয়েছে। তবে সেই সাথে উত্তর-পূর্ব ভারত ও মিয়ানমারের একাংশেও আঘাত হানতে পারে ঘূর্ণিঝড়টি। এর প্রভাবে বিশেষত এটি কেটে গেলে বৃহত্তর চট্টগ্রামসহ দেশের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলে অতি ভারী বর্ষণ হতে পারে। এ কারণে এসব এলাকায় পাহাড়ি ঢল, ভূমিধস এবং আকস্মিক বন্যার আশঙ্কা রয়েছে। ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে গুমোট আবহাওয়ার মধ্যে আজ দুপুর থেকে চট্টগ্রামে কোথাও কোথাও গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টিপাত হয়। তবে তা সাময়িক।
ঘূর্ণিঝড় ‘মোরা’ আঘাত হানতে পারে আগামীকাল মঙ্গলবার সকালের দিকে চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার উপকূলভাগে। সাগর প্রচণ্ড উত্তাল রয়েছে। চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার সমুদ্র বন্দরে ৭নং বিপদ সঙ্কেত দেখাতে বলা হয়েছে। আর মংলা ও পায়রা সমুদ্র বন্দরকে ৫নং বিপদ সঙ্কেত দেখাতে বলা হয়েছে। ঘূর্ণিঝড় ‘মোরা’র কারণে দেশের উপকূলভাগে ৪-৫ ফুট উঁচু জলোচ্ছ্বাস সৃষ্টি হতে পারে।
এদিকে ঘূর্ণিঝড় ‘মোরা’র সক্রিয় প্রভাবে সমগ্র সাগর উপকূল, চর ও দ্বীপাঞ্চলে গুমোট এবং থমথমে হয়ে উঠেছে আবহাওয়া। উপকূলবাসী এ মুহূর্তে দুর্যোগের চরম আতঙ্কে রয়েছে। দেশে গত ১৯ মে থেকে টানা ১০ দিনের তাপপ্রবাহ, ভ্যাপসা অসহনীয় গরমের পরই সাগরে সৃষ্টি হলো ঘূর্ণিঝড় ‘মোরা’। বঙ্গোপসাগরে ঘূর্ণিঝড়ের আলামত তৈরি হয়েছে মর্মে প্রথম সংবাদ প্রকাশিত হয় গত শুক্রবার ইনকিলাবে। ঘূর্ণিঝড়ের ‘মোরা’ নামটি দেয়া হয়েছে থাইল্যান্ডের নামানুসারে।
এদিকে ঘূর্ণিঝড় ‘মোরা’ বাংলাদেশের দিকে এগিয়ে আসা এবং ৭ নং বিপদ সঙ্কেত ঘোষণার প্রেক্ষিতে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ, সিটি কর্পোরেশন, জেলা প্রশাসন এবং দেশের বিভিন্ন উপকূলীয় জেলা-উপজেলা প্রশাসন জনগণের জানমাল এবং গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনাসমূহে সম্পদ রক্ষায় জরুরী সভাসহ বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ শুরু করেছে। কিছুক্ষণের মধ্যেই সেসব বিভাগে জরুরী সভা হবে।
এদিকে আজ সকালে সর্বশেষ আবহাওয়ার বিশেষ বুলেটিনে জানানো হয়, পূর্ব-মধ্য বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থানরত ঘূর্ণিঝড় ’মোরা’ আরও সামান্য উত্তর ও উত্তর-পূর্ব দিকে অগ্রসর হয়ে পূর্ব-মধ্য বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন উত্তর বঙ্গোপসাগর এলাকায় (১৭.৫ ডিগ্রি উত্তর অক্ষাংশ এবং ৯১.৩ ডিগ্রি পূর্ব দ্রাঘিমাংশ) অবস্থান করছিল। এটি আজ সোমবার সকাল ৯ টায় চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে ৫২৫ কিলোমিটার দক্ষিণ ও দক্ষিণপশ্চিমে, কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে ৪৪৫ কিমি দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পশ্চিমে, মংলা সমুদ্রবন্দর থেকে ৫৮০ কিমি দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এবং পায়রা সমুদ্রবন্দর থেকে ৫১০ কিমি দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব দিকে অবস্থান করছিল। এটি আরও ঘনীভূত ও উত্তর দিকে অগ্রসর হয়ে ৩০ মে মঙ্গলবার সকাল নাগাদ চট্টগ্রাম-কক্সবাজার উপকূল অতিক্রম করতে পারে। ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের ৫৪ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ৬২ কিমি, যা দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়ার আকারে ৮৮ কিমি পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে। ঘূর্ণিঝড়ের নিকটবর্তী এলাকায় সাগর খুবই উত্তাল রয়েছে। চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার সমুদ্র বন্দরকে ৪নং স্থানীয় হুশিয়ারি সঙ্কেত নামিয়ে তার পরিবর্তে ৭নং বিপদ সঙ্কেত দেখাতে বলা হয়েছে। উপকূলীয় জেলা চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, ফেনী, চাঁদপুর এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরসমূহ ৭ নম্বর বিপদ সংকেতের আওতায় থাকবে। মংলা ও পায়রা সমুদ্র বন্দরকে ৪নং স্থানীয় হুশিয়ারি সংকেত নামিয়ে তার পরিবর্তে ৫নং বিপদ সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে। উপকূলীয় জেলা ভোলা, বরগুনা, পটুয়াখালী, বরিশাল, পিরোজপুর, ঝালকাঠি, বাগেরহাট, খুলনা, সাতক্ষীরা এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরসমূহ ৫নং বিপদ সংকেতের আওতায় থাকবে।
ঘূর্ণিঝড় ‘মোরা’র প্রভাবে উপকূলীয় জেলা কক্সবাজার, চট্টগ্রাম, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, ফেনী, চাঁদপুর, বরগুনা, ভোলা, পটুয়াখালী, বরিশাল, পিরোজপুর, ঝালকাঠি, বাগেরহাট, খুলনা, সাতক্ষীরা এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরসমূহের নিম্নাঞ্চল স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে ৪-৫ ফুট অধিক উচ্চতার জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হতে পারে।
ঘূর্ণিঝড় ’মোরা’ অতিক্রমকালে কক্সবাজার, চট্টগ্রাম, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, ফেনী, চাঁদপুর, বরগুনা, পটুয়াখালী, ভোলা, বরিশাল, পিরোজপুর জেলাসমূহ এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরসমূহে ভারী থেকে অতি ভারী বর্ষণসহ ঘণ্টায় ৬২ থেকে ৮৮ কিমি বেগে দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে। উত্তর বঙ্গোপসাগর ও গভীর সাগরে অবস্থানরত মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলার সমূহকে পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত নিরাপদ আশ্রয়ে থাকতে বলা হয়েছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।