পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
আল জাজিরাঃ ২৪ মে ইসরাইল তার ভাষায় ‘জেরুসালেম দিবস’ উদযাপন করেছে। জেরুসালেমকে ইসরাইল তাদের রাজধানী ঘোষণা করেছে। ১৯৬৭ সালে সিরিয়া, মিসর ও জর্দানের সাথে যুদ্ধের পর সে পূর্ব জেরুজালেম দখল করে নেয়। কিন্তু জেরুসালেম ইসরাইলের রাজধানী নয়।
এ দিন পালনকালে ডানপন্থী মূলত তরুণ ইসরাইলিরা পূর্ব জেরুসালেমের পুরনো শহরের চারপাশে ভাংচুর করে । তারা ইসরাইলি পতাকা বহন করছিল এবং ফিলিস্তিন বিরোধী, আরব বিরোধী ও মুসলিম বিরোধী বর্ণবাদী ¯েøাগান দিচ্ছিল।
কেউ কেউ জেরুসালেমে আরবদের মৃত্যু, ধ্বংস এবং ফিলিস্তিনিদের সম্পূর্ণ নির্মূলকরণের দাবি করে আরবদের মৃত্যু চাইছিল। তারা বিপুল সংখ্যায় পুরনো শহরের মুসলিম এলাকার মধ্য দিয়ে মিছিল করে যাচ্ছিল এবং ফিলিস্তিনি দোকানপাট ও বাড়িঘরে হানা দিয়ে তাদের উস্কানি দিচ্ছিল।
ইসরাইল ১৯৪৮ সালে আরব-ইসরাইল যুদ্ধে জেরুসালেমের পশ্চিম অর্ধেক দখল করে। তারা এ দিনটিকে পূর্ব ও পশ্চিম জেরুসালেমকে তাদের রাজধানী হিসেবে পুনরেকত্রীকরণ দিবস রূপে পালন করে।
পূর্ব জেরুসালেম দখলের ফলে কার্যত গোটা শহরটিই ইসরাইলি নিয়ন্ত্রণে এসেছে। তবে ইসরাইলের জেরুসালেম দখলকে যুক্তরাষ্ট্রসহ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় স্বীকার করে না।
ফিলিস্তিন-ইসরাইল বিরোধ নিরসনে জেরুসালেমের মর্যাদা অন্যতম অমীমাংসিত বিষয় হয়ে আছে।
১৯৪৭ সালের জাতিসংঘ বিভক্তি পরিকল্পনার অধীনে ঐতিহাসিক ফিলিস্তিনকে ইহুদি ও আরবদের মধ্যে ভাগের সময় জেরুসালেমকে বিশেষ মর্যাদা দেয়া হয় যার অর্থ হচ্ছে শহরটিকে আন্তর্জাতিক সার্বভৌমত্ব ও নিয়ন্ত্রণের অধীনে স্থাপিত হয়। বিশেষ মর্যাদার ভিত্তি ছিল তিনটি প্রধান ধর্মÑ ইহুদি, খ্রিস্টান ও ইসলাম।
ফিলিস্তিনকে বিভক্ত করার জাতিসংঘের সুপারিশের পর ১৯৪৮ সালের যুদ্ধে ইসরাইল পশ্চিম জেরুসালেম দখল করে এবং তাকে তাদের রাষ্ট্রের অংশ হিসেবে ঘোষণা করে। ১৯৬৭ সালের যুদ্ধে ইসরাইল বাকি অর্ধেকাংশ তথা পূর্ব জেরুসালেম দখল করে ( যা তখন জর্দানের নিয়ন্ত্রণে ছিল) ইসরাইলের অঙ্গীভূত করে এবং আন্তর্জাতিক আইন লংঘন করে সেখানে ইসরাইলি রাষ্ট্রীয় আইন বলবত করে।
১৯৮০ সালে ইসরাইল ‘জেরুসালেম আইন’ পাশ করে। তাতে বলা হয় যে জেরুসালেম সম্পূর্ণ ও ঐক্যবদ্ধ তা হচ্ছে ইসরাইলের রাজধানী। এভাবে পূর্ব জেরুসালেমকে আনুষ্ঠানিকভাবে ইসরাইলের অঙ্গীভূত করা হয়।
এর জবাবে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদ বিষয়টিকে বাতিল ঘোষণা করে ১৯৮০ সালে ৪৭৮ নং প্রস্তাব পাশ করে।
যুক্তরাষ্ট্রসহ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় সরকারীভাবে পূর্ব জেরুসালেমকে অধিকৃত এলাকা বলে গণ্য করে। একমাত্র রাশিয়া ছাড়া বিশে^র কোনো দেশই জেরুসালেমের কোনো অংশকে ইসরাইলের রাজধানী হিসেবে স্বীকার করে না। এ বছরের গোড়ার দিকে রাশিয়া পশ্চিম জেরুজালেমকে ইসরাইলের রাজধানী বলে স্বীকার করে।
তবে এখন পর্যন্ত সকল বিদেশী দেশের দূতাবাস তেলআভিভে রয়েছে।
পূর্ব জেরুসালেমকে অবৈধ ভাবে ইসরাইলের অঙ্গীভূতকরণ আন্তর্জাতিক আইনের কতিপয় নীতি লংঘন করেছে যাতে বলা হয়েছে যে কোনো দখলদার শক্তি কোনো ভূখন্ড দখল করে থাকলে তাতে তার সার্বভৌমত্ব প্রতিষ্ঠিত হয় না।
ইসরাইল কার্যত পূর্ব জেরুসালেম দখল করে রাখলেও সেখানে বসবাসরত ফিলিস্তিনিদের ইসরাইলি নাগরিকত্ব দেয়া হয়নি। আজ পূর্ব জেরুসালেমের ৪ লাখ ২০ হাজার ফিলিস্তিনিকে স্থায়ী আবাসিক আইডি দেয়া হয়েছে। তারা জাতীয় পরিচিতি নম্বরসহ অস্থায়ী জর্দানি পাসপোর্টও বহন করতে পারে। এ অর্থ তারা পূর্ণ জর্দানি নাগরিক নয়, জর্দানে কাজ করতে হলে তাদের ওয়ার্ক পারমিটের দরকার হয়। তারা সরকারী চাকুরি ও সুবিধা পাবে না , যেমন হ্রাসকৃত শিক্ষা ফি’র সুযোগ তাদের জন্য নয়।
ফিলিস্তিনি জেরুসালেমিরা অবশ্যই রাষ্ট্রহীন, তারা আইনি জটিলতায় আটকে আছে, তারা ইসরাইলের নাগরিক নয়, কিংবা তারা জর্দান বা ফিলিস্তিনেরও নাগরিক নয়।
ইসরাইল পূর্ব জেরুসালেমিদের বিদেশী াভিবাসী হিসেবে গণ্য করে যারা সেখানে রাষ্ট্রের দয়ায় বাস করে , যেখানে তাদের জন্ম সেখানে তাদের কোনো জন্মগত অধিকার নেই। আবাসিক মর্যাদা রক্ষার জন্য তাদের বিভিন্ন প্রয়োজনের একটি বিশেষ কোটা পূর্ণ করতে হয় এবং নাগরিকত্ব বাতিলের সার্বক্ষণিক ভয়ের মধ্যে থাকতে হয়।
কোনো ফিলিস্তিনি যদি নির্দিষ্ট সময় জেরুসালেমের সীমানার বাইরে থাকে , তা সে বিদেশ হোক আর পশ্চিম তীর হোক, তাহলে সে জেরুসালেমে বাস করার অধিকার হারাতে পারে।
যারা প্রমাণ করতে ব্যর্থ যে জেরুসালেমে তাদের জীবনের কেন্দ্র নয় তারা সেখানে একটানা ভাবে বাস করলেও তারা তাদের জন্মশহরে বাস করার অধিকার হারাতে পারে। অন্য কোনো দেশের নাগরিকত্ব লাভ তাদের বসবাসের মর্যাদা বাতিলের কারণ হতে পারে।
বিশে^র যে কোনো স্থানের ইহুদির ইসরাইলে বাসের অধিকার আছে এবং ইসরাইলের ল’ অব রিটার্ন অনুসারে তারা ইসরাইলি নাগরিকত্ব পাবে।
১৯৬৭ সাল থেকে ইসরাইল ১৪ হাজার ফিলিস্তিনির নাগরিকত্ব বাতিল করেছে বলে ইসরাইলি অধিকার গ্রæপ বি’ টিসেলেম জানায়।
পূর্ব জেরুসালেমে ইসরাইলের বসতি স্থাপন নীতিও আন্তর্জাতিক আইনে অবৈধ বলে বিবেচিত হয়েছে যার লক্ষ্য হচ্ছে শহরের উপর ইসরাইলের নিয়ন্ত্রণ সংহত করা।
জাতিসংঘ কয়েকটি প্রস্তাবে নিশ্চিত করেছে যে ইসরাইলের বসতি নীতি চতুর্থ জেনেভা কনভেনশনের সরাসরি লংঘন। এতে কোনো দখলদার দেশকে তার দখলকৃত এলাকা থেকে জনগণের স্থানান্তর নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
যদিও ইসরাইল জেরুসালেমকে তার অবিভক্ত রাজধানী বলে দাবি করে কিন্তু সেখানে যারা বাস করেন তাদের সাথে এ দাবির কোনো মিল নেই।
ফিলিস্তিনিরা বর্ণবাদ সদৃশ পরিস্থিতিতে বাস করে, সেখানে ইসরাইলিরা স্বাভাবিক জীবন কাটায় যার নিশ্চয়তা বিধান করে রাষ্ট্র।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।