Inqilab Logo

রোববার ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ০৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২১ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

ভেষজ ওষুধ তৈরীর ক্ষেত্র হতে পারে সুন্দরবন প্রয়োজন গবেষণাগার

| প্রকাশের সময় : ২৪ মে, ২০১৭, ১২:০০ এএম

রবিউল ইসলাম কালিগঞ্জ (সাতক্ষীরা) উপজেলা সংবাদদাতা : পৃথিবী মহান সৃষ্টিকর্তার এক রহস্য জনক সৃষ্টি। এর আদি অন্ত রহস্য সৃষ্টি লগ্ন থেকে আজও মানুষের পক্ষে জানা সম্ভব হয়নি।তবে এ কথা সত্য যে যেখানে যা কিছু সৃষ্টি হয়েছে তা মানুষের কল্যানের জন্য সৃষ্টি করেছেন আল্লাহ। পাহাড়,পর্বত,সাগর,নদী,নালা তার সাক্ষ্য বহন করে। বঙ্গোপসাগরের তীর ঘেষে গড়ে ওঠা সুন্দর বন আমাদের জন্য এক মহা নিয়ামত। সুন্দরবন সৃষ্টির পরবর্তী সময় থেকে আজও অবধি উপকুলবর্তী জনপদকে পরম মমতায় মায়ের আচলের মত আগলে রেখেছে সবধরনের প্রাকৃতিক দুর্যোগের হাত থেকে।কোন দেশের মোট আয়তনের ২৫-৩০ শতাংশ বনভূমি থাকা প্রয়োজন। আমাদের এ প্রিয় মাতৃভূমির সে অভাব কিছুটা হলেও পুরন করেছে এ বন। প্রাণীক‚লের বেচে থাকার জন্য অত্যন্ত প্রয়োজনীয় উপাদান অক্সিজেন যা গাছ বায়ুতে ছেড়ে দেয় এবং পরিবেশের ক্ষতিকর উপাদান কার্বন ডাই অক্সাইড গ্রহণ করে পরিবেশকে দূষন মুক্ত রাখে।এ দিক দিয়ে এ বন ভুমির ৬০১৭ বর্গ কিঃমিঃ জায়গা জুড়ে সুবিস্তৃত ৩৩৪ প্রজাতির গাছ অগ্রনী ভুমিকা পালন করছে।হাজার হাজার জেলে,বাওয়ালী, মৌয়ালী পেশার মানুষের কর্মসংস্থান এ বন থেকেই হচ্ছে। সুন্দরবনের মোট আয়তনের মধ্য ৪৫০ টি নদী নালা ও খাল আছে।জেলেরা এ নদীতেই বার মাস ২১০ প্রজাতির সাদা মাছ,১৩ প্রজাতির কাকড়া ২৬ প্রজাতির চিংড়ী আহরন করে জীবিকা নির্বাহ করে।এ বনে আছে ৩৭৫ প্রজাতির অধিক প্রাণী। চিত্রল হরিনের পিঠে বাননের গমন, বানর পাতা ভেঙ্গে হরিনকে দেওয়া দৃশ্য, রয়েল বেঙ্গল টাইগারের ও কুমিরের কদাচিৎ দেখা, গহীন অরণ্যে ২৪ প্রজাতি পাখির বিচরণ, দুচোখের দৃষ্টি সীমা যতদুর যায় সবুজ বনের মনোরম নয়নাভিরাম দৃশ্য, কখন নদীর নীরব স্তবদ্ধতা কখন বা জোয়ার ভাটার কুল কুল ধ্বনি, নদীতে পাল তোলা নৌকার মনোহরী দৃশ্য,প্রকৃতির প্রাকৃতিক দৃশ্য সব সময় ভ্রমন পিপাসু মানুষকে আকর্ষন করে। কে না দেখতে চায় এত সব দৃষ্টি নন্দিত দৃশ্য।কিন্তু দেখার উপযুক্ত মাধ্যম না থাকায় সরকার কোটি কোটি টাকার রাজস্ব হারাচ্ছে।সুন্দরবনে যদিও ১২টি পর্যটন কেন্দ্র আছে তবুও সা¤প্রতিক সময়ে সুন্দর বনের উপকন্ঠ গড়ে ওঠা আকাশনীলা ইকোট্যুরিজ স্পট এদেশ বাসীর কর্ণকুহরে ব্যাপকভাবে সাড়া জাগিয়েছে। কিন্তু এখনো সফলভাবে বাস্তবায়িত হয়নি নির্মাণাধীন আছে এর কর্যক্রম।পরিপূর্ণ গঠনশৈলির মাধ্যমে এ ট্যুরিজম স্পট যৌবনপ্রাপ্ত হলেই
দেশি, বিদেশি পর্যটকদের আনাগোনার মধ্য দিয়ে প্রমানিত হবে যে কত অপূর্ব শোভাময় রুপমাধুরির অনন্তযৌবনা সুন্দরবন। সবদিক দিয়ে আমাদের প্রিয় এ সুন্দর বনের গুরুত্ব ও অবদানের কথা লিখে বহিঃপ্রকাশ করা সম্ভব নয়, যা অন্তর আত্মা দিয়ে উপলব্ধি মাত্র।গুরুত্বের দিক
দিয়ে এ বনের পরিধি আরও বেড়ে যাবে যদি এ বনের জন্মান লতা গুল্মাদি তথা ৩৩৪ প্রজাতির গাছ পালার উপর গবেষনা করার পন্থা বাহির করা যায়। মানুষ সৃষ্টির উষালগ্ন গাছ গুল্মাদি লতা পাতা ভেজস ঔষধ হিসাবে ব্যবহৃত হয়ে আসছে। বর্তমানে আধুনিক সভ্য সমাজের মানুষের কাছে এ ভেজস ঔষধ বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। আধুনিক পদ্ধতিতে গাছ লতা পাতা দিয়ে এ ঔষধ তৈরীর ফলে পাশ্বপ্রতিক্রিয়া মুক্ত হওয়ায় মানুষের কাছে চাহিদাও দিন দিন বাড়ছে যা বিভিন্ন পত্র প্রত্রিকা থেকে জানা যাচ্ছে।তাই পরীক্ষা নিরীক্ষার করার যথাযথ মাধ্যম সৃষ্টি হলে আমাদের এ প্রিয় সুন্দর বন থেকে অমুল্য গাছের সন্ধান পাওয়া যেতেও পারে যা মানুষের জীবন রক্ষাকারী ঔষধ হিসাবে ব্যবহৃত হতে পারে।বনের গহীনে অবহেলায় পড়ে থাকা লতা,গুল্ম,বিভিন্ন প্রজাতির গাছ থেকে ভেজস ঔষধ তৈরীর সুসংহত ক্ষেত্র হওয়ার উজ্জ্বল সম্ভাবনাময় আমাদের প্রিয় এ সুন্দর বন। তাই প্রধানমন্ত্রীর কাছে এ বনের গুরুত্ব তুলে ধরে বন সংলগ্ন গবেষনাগার স্থাপনের জন্য সংশ্লিষ্ট উদ্ধর্তন কতৃপক্ষের হস্থক্ষেপ কামনা করেছেন উপকূলীয় সুন্দরবন এলাকাবাসী।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ