Inqilab Logo

শুক্রবার, ০৫ জুলাই ২০২৪, ২১ আষাঢ় ১৪৩১, ২৮ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

অ্যাকশনএইড বাংলাদেশের গবেষণা প্রতিবেদনে

| প্রকাশের সময় : ২১ মে, ২০১৭, ১২:০০ এএম

নগর কাঠামো নারীবান্ধব নয়
স্টাফ রিপোর্টার : গণপরিবহন, রাস্তাঘাট, ফুটপাত, পাবলিক টয়লেট, পার্কের মতো গণপরিসরে নারীদের ব্যবহার উপযোগিতা সীমিত। রাজধানীর বিভিন্ন অবকাঠামো ও স্থাপনা নারীবান্ধব না হওয়ায় শঙ্কা, নিরাপত্তাহীনতা ও সহিংসতার ভয়ে গণপরিসর এড়িয়ে চলতে হয় নারীদের। আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থা একশনএইড বাংলাদেশের নারী সংবেদনশীল নগর পরিকল্পনা শীর্ষক এক গবেষণা প্রতিবেদনে এ চিত্র উঠে এসেছে। গতকাল শনিবার গুলশানে সংস্থাটির কার্যালয়ে বিশ্ব নিরাপদ নগরী দিবস উপলক্ষে এ গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়।
অনুষ্ঠানের শুরুতেই গবেষণার প্রেক্ষাপট ও মূল বিষয় তুলে ধরেন একশনএইড বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর ফারাহ কবির। তিনি বলেন, নগরীর অর্ধেক জনসংখ্যা নারী হলেও নগর পরিকল্পনা ও উন্নয়নে নারীর চাহিদা ও আকাক্সক্ষার বিষয়টি সক্রিয়ভাবে বিবেচনায় আসে না। নগর উন্নয়নে সিদ্ধান্ত গ্রহণ, পরিকল্পনা প্রণয়ন, প্রকল্প ডিজাইন, বাস্তবায়ন ইত্যাদি বেশির ভাগ কাজে নারীদের সংখ্যা কম। তাই নারী ব্যবহার বান্ধব নগর কাঠামো তৈরি হয় না।
ফলে রাস্তাঘাট, ফুটপাত, মার্কেট, শপিংমল, পরিবহন ব্যবস্থা, পাবলিক টয়লেট, পার্ক, উন্মুক্তস্থানসহ সব গণপরিসরে নারীদের ব্যবহার উপযোগিতা সীমিত ও ঝুঁকিপূর্ণ।
পরে এ গবেষণায় যুক্ত ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) নগর ও অঞ্চল পরিকল্পনা বিভাগের অধ্যাপক আক্তার মাহমুদ প্রতিবেদন উত্থাপন করেন।
গবেষণায় দেখা যায়, ঢাকা শহরে বসবাসকারী ৫৬ শতাংশ নারী ভালো পরিবহন ব্যবস্থা না থাকার কারণে বাইরে যেতে চান না। আবার অতিরিক্ত ভিড়ের কারণে ৫৮ শতাংশ নারী গণপরিবহনে উঠতে পারেন না। এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে নিরাপত্তাহীনতা ও নগর উন্নয়ন পরিকল্পনায় নারীকে বাদ দিয়ে কাঠামো তৈরি করা।
আর রাজধানীর গণপরিবহন নিয়ে ৮৬ শতাংশ নারী যানজট নিয়ে হতাশ প্রকাশ করেছেন। ৭৮ দশমিক ৫ শতাংশ নারী বলেছেন বাসের সংখ্যা অপ্রতুল। আর ২২ দশমিক ৫ শতাংশ নারী বাস সহকারী, চালক, সহযাত্রীর মাধ্যমে যৌন হয়রানির শিকার হন।
ফলাফল তুলে ধরে অধ্যাপক আক্তার মাহমুদ বলেন, ঢাকা পুরুষতান্ত্রিক শহর হিসেবেই গড়ে উঠেছে। ফলে নারীরা বাড়ির বাইরে যেতে চান না কিংবা কর্মক্ষেত্রে পূর্ণ ক্ষমতা প্রয়োগ থেকে বঞ্চিত। এতে অর্থনৈতিকভাবেও ক্ষতির শিকার হন তারা। গবেষণা প্রতিবেদন নিয়ে স্থপতি ইকবাল হাবিব বলেন, আমাদের ফুটপাতগুলো জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত করতে পারিনি। নারীদের খেলাধুলার জন্য একটি জায়গাও তৈরি করিনি।
পথে-প্রান্তরে টয়লেট তৈরিতে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানকে প্রয়োজনে বাধ্য করতে হবে। এজন্য অবশ্যই উদ্যোগী হতে হবে সরকারকে। প্রকল্প নারীবান্ধব, শিশুবান্ধব ও প্রতিবন্ধী বান্ধব হয়েছে কিনা তা অবশ্যই পরিকল্পনা কমিশনকে দেখতে হবে।
প্রতিবেদনে রাজধানীতে পর্যাপ্ত পাবলিক টয়লেট না থাকার কারণে নারীদের শারীরিক সমস্যার বিষয়টিও উল্লেখ করা হয়েছে।
এ বিষয়ে একশনএইড বাংলাদেশের নির্বাহী বোরর্ডর সদস্য ডা. খলিলুর রহমান বলেন, শহরে পর্যাপ্ত পাবলিক টয়লেট না থাকায় নারীরা পানি খেতে ভয় পান। আবার প্রয়োজন হলে টয়লেটে যেতে পারেন না। ফলে রাজধানীর নারীরা নানা শারীরিক সমস্যায় ভুগছেন।
নগর কাঠামো নারীবান্ধব হলে এ ধরনের শারীরিক ও মানসিক সমস্যার আরও উন্নয়ন ঘটতো বলে মনে করেন তিনি।
গবেষণা প্রতিবেদনে দেশে বিদ্যমান নীতি ও আইনের প্রেক্ষাপটও বিশ্লেষণ করা হয়েছে। নারীবান্ধব নগর কাঠামো গড়ে তোলা গেলে জাতিসংঘের টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রায় (এসডিজি) লিঙ্গ সমতা ও নারীর ক্ষমতায়নও সম্ভব হবে।
রাজধানীর বিভিন্ন রাস্তা, বাস স্ট্যান্ড, ফুটপাত, মার্কেট ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বিভিন্ন বয়সী ২০০ জন নারীর উপর জরিপ করে গবেষণা প্রতিবেদন তৈরি করেছে একশনএইড বাংলাদেশ।
প্রতিবেদনের সুপারিশে বলা হয়, যেকোনো প্রকল্প প্রণয়নের ধারণা থেকে শুরু করে বাস্তবায়ন পর্যন্ত নারী সংবেদনশীল ধ্যান-ধারণার প্রতিফলন থাকতে হবে। একই কৌশল নীতির ব্যাখ্যা থাকতে হবে ঢাকা স্ট্রাকচার প্ল্যানের ডিটেইল এরিয়া প্ল্যানেও।
এছাড়া নারী ও শারীরিক প্রতিবন্ধীদের ব্যবহার উপযোগী রাস্তা, ওয়েটিং স্টেশন, টার্মিনাল ও স্টপেজ নির্মাণের পাশাপাশি উদ্যান এবং খেলার মাঠেও নারীদের জন্য উন্মুক্ত করার সুপারিশ করা হয়েছে ওই প্রতিবেদনে।খুলনায় ‘বন্দুকযুদ্ধে’ নিহত ১
বিশেষ সংবাদদাতা, খুলনা : খুলনা মহানগরীর সদর থানার খ্রীষ্টানপাড়া এলাকায় পুলিশের সাথে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ রাজু মুন্সী (২৭) নামে এক যুবক নিহত হয়েছেন। গত শুক্রবার দিবাগত রাত তিনটার দিকে গুলিবিনিময়ের পর রাজুকে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করলে ভোর সোয়া ৪টার দিকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সে মারা যায় বলে জানিয়েছেন খুলনা থানার ওসি। নিহত রাজু মুন্সী নগরীর পশ্চিম টুটপাড়া কবি নজরুল সড়কের দারোগার বস্তির মোঃ সিদ্দিকুর রহমানের একমাত্র ছেলে। গুলিবিনিময়কালে তিনিসহ পুলিশের ৫ সদস্য আহত হয়েছেন বলে দাবি ওসি’র। নিহত রাজু ডাকাত সদস্য ও তার বিরুদ্ধে হত্যা ও গণধর্ষণসহ পাঁচটি মামলা রয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
খুলনা সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) এসএম মিজানুর রহমান জানান, টুটপাড়া খ্রীষ্টানপাড়ার বালুরমাঠ এলাকায় ১০/১২জনের দস্যু দল ডাকাতির প্রস্তুতি নিচ্ছে এ খবর পেয়ে পুলিশ সেখানে অভিযান চালাই। পুলিশের উপস্থিতি বুঝতে পেরে ডাকাতরা গুলি বর্ষণ করে। পুলিশও পাল্টা গুলি চালায়। একপর্যায়ে ডাকাতরা পালিয়ে যায় সেখানে আহত অবস্থায় পড়ে থাকা রাজু মুন্সীকে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানেই তার মৃত্যু হয়। এঘটনায় পাঁচজন পুলিশ সদস্যও আহত হয়েছেন। ঘটনাস্থল থেকে একটি পিস্তল, তিন রাউন্ড গুলি, একটি ম্যাগজিন, একটি চাইনিজ কুড়াল ও একটি রামদা উদ্ধার করা হয়। এই ঘটনায় এসআই আশরাফুল ইসলাম বাদী হয়ে সদর থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন। রাজুর বিরুদ্ধে ডুমুরিয়া থানায় হত্যা মামলাসহ খুলনা সদর থানায় ধর্ষণসহ অন্তত ৫টি মামলা রয়েছে বলে জানান ওসি।
নিহতের মা মোছাঃ রিজিয়া খাতুন বলেন, আমার বাপ খুব ভাল মানুষ ছিল। দু’বছর আগে দ্বিতীয় বিয়ের পর থেকে আমাদের সাথে কোন যোগাযোগ ছিল না। রাজুর প্রথম স্ত্রী সীমা ও তার দুই বছরের মেয়ে রিয়ামনি আমার কাছে থাকতো। ও থাকতো ওর দ্বিতীয় স্ত্রীর কাছে। রাজু মুন্সীর পিতা সিদ্দিকুর রহমান খুলনার মজিদ মেমোরিয়াল সিটি কলেজের অবসরপ্রাপ্ত পিয়ন।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ