পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
বিশেষ সংবাদদাতা, চট্টগ্রাম ব্যুরো : জ্যৈষ্ঠের গোড়াতেই সকাল-সন্ধ্যা রোদের প্রখর তেজ। অসহনীয় ভ্যাপসা গরম। ঘরে-বাইরে সর্বত্রই হাঁসফাঁস। রাস্তাঘাটে যেন বাতাসে আগুনের হল্কা। বাড়িঘরে ফ্যানের বাতাসও তপ্ত। মানুষ ঘেমে-নেয়ে একাকার। জনজীবনে কাহিল অবস্থা। চারদিকে মানুষ ছাড়াও প্রাণিকুল ছটফট করছে। তীর্যক সূর্যের দহনে দিনমান অতিবাহিত হচ্ছে। গতকাল (শুক্রবার) আবহাওয়া বিভাগ সূত্র জানায়, দিনের সর্বোচ্চ তাপমাত্রার সাথে রাতের সর্বনিম্ন তাপমাত্রার পারদও এখন বেশ উঁচুতে। এতে করে গরম তীব্রভাবে অনুভূত হচ্ছে। গতকাল ঢাকার সর্বনি¤œ তাপমাত্রা ছিল ২৮.৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস, চট্টগ্রামে ২৭.৬ ডিগ্রি সে.। যা স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি। তাছাড়া বাতাসে আর্দ্রতার পরিমাণ বেশি থাকায় ভ্যাপসা গরমে বেশিহারে ঘামাচ্ছে মানুষজন। ঘামে দুর্বল হয়ে পড়ছে। গতকাল সকালে ঢাকায় বাতাসের আপেক্ষিক আর্দ্রতা ছিল ৯৩ ভাগ। ক্রমান্বয়ে আরও বৃদ্ধি পেতে পারে তাপমাত্রা। সম্ভাবনা তাপপ্রবাহের। কোথাও কোথাও বজ্র এবং ছোট-বড় কালবৈশাখীর সঙ্গী হয়ে স্থানীয়ভাবে বৃষ্টি-বজ্রবৃষ্টি হচ্ছে। এতে সেখানে খানিকটা স্বস্তি, তবে তাও সাময়িক। বর্ষার মৌসুমি বায়ুমালা বাংলাদেশে এগিয়ে আসতে এখনো অনেক দেরি। মে মাস থেকে জুনের প্রথমার্ধ পর্যন্ত আবহাওয়া তেঁতে থাকবে।
গরমে ঘামে নাকাল অবস্থায় শিক্ষার্থী, পথচারী লোকজন রাস্তাঘাটে ফেরি করা আইসক্রিম, লেবুর শরবত ও হরেক রকম পানীয় নিয়ে একটু গলা ভেজানোর চেষ্টা করছে। যদিও এসব খোলা পানীয় বিভিন্ন রোগের বাহন হতে পারে। চপল কিশোররা দল বেঁধে পুকুর-দীঘি, নদী-খালে ঝাঁপ দিয়ে গা শীতল করছে। গরমে যখন মানুষের পানির চাহিদা বেড়ে গেছে, তখন প্রায় সর্বত্র পানির সঙ্কট সৃষ্টি হয়েছে। পানির স্তর নিচে নেমে যাওয়ার কারণে গভীর-অগভীর অনেক নলকুপে পানি উঠছে না। এ অবস্থায় বিশুদ্ধ পানির সঙ্কট বেড়ে গেছে।
অসহনীয় ঘাম ও ভ্যাপসা গরমের কারণে ডিহাইড্রেশনে শরীর দ্রæতই কাহিল হয়ে পড়ছে। এ অবস্থায় আয়-রোজগারের ক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি দুর্ভোগে পড়েছে দিনে এনে দিনে খাওয়া দিনমজুর ও নিম্নআয়ের শ্রমিক-কর্মজীবীরা। উটকো মৌসুমি রোগ-ব্যাধিতে আক্রান্ত হচ্ছে শিশু-বৃদ্ধসহ অনেকেই। চিকিসৎকরা এ সময়ে বেশি করে বিশুদ্ধ পানি পানের পরামর্শ দিয়ে কড়া সতর্ক করেছেন, রাস্তাঘাটের দূষিত পানীয় বা ফল-ফলারি খেয়ে হিতে বিপরীত হতে পারে।
আবহাওয়ার সর্বশেষ পূর্বাভাস বলছে, চলমান খরতাপ তাপপ্রবাহে রূপ নিয়ে আরও তীব্রতর হতে পারে। চলতে পারে আগামী এক সপ্তাহ। লঘুচাপের একটি বর্ধিতাংশ পশ্চিমবঙ্গ ও এর সংলগ্ন এলাকায় অবস্থান করছে। যা উত্তর বঙ্গোপসাগর পর্যন্ত বিস্তৃত। সিলেট বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় এবং ঢাকা, ময়মনসিংহ, রাজশাহী, রংপুর, চট্টগ্রাম, খুলনা ও বরিশাল বিভাগের দুয়েক জায়গায় এবং অস্থায়ী দমকা থেকে ঝড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টিপাত হতে পারে। সারাদেশে দিনের তাপমাত্রা সামান্য বৃদ্ধি পেতে পারে এবং রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে। পরবর্তী ৭২ ঘণ্টায় তাপমাত্রা ক্রমান্বয়ে বৃদ্ধি পেতে পারে।
দীর্ঘমেয়াদি পূর্বাভাসে জানা গেছে, চলতি মে মাসে দেশের উত্তরাঞ্চল, উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে ১ বা ২টি তীব্র ধরনের তাপপ্রবাহ (৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের ঊর্ধ্বে) বয়ে যেতে পারে। দেশের অন্যত্র ২-৩টি মৃদু থেকে মাঝারি তাপপ্রবাহ বয়ে যেতে পারে। তবে এ মাসে দেশে স্বাভাবিক বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে।
গতকাল সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত পূর্ববর্তী ২৪ ঘণ্টায় দেশের বিভিন্ন স্থানে মৃদু তাপপ্রবাহ বয়ে যায় এবং তা আরো বিস্তারের পূর্বাভাস দেয়া হয়েছে। তাপপ্রবাহ চলতে পারে কমপক্ষে এক সপ্তাহ। এ সময় দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল যশোরে ৩৭.৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। ঢাকায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৩৬ ও সর্বনি¤œ ২৮.৪ ডিগ্রি সে.। আজ (শনিবার) সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টার আবহাওয়া পূর্বাভাসে জানা গেছে, যশোর ও কুষ্টিয়া অঞ্চলসহ ঢাকা, ময়মনসিংহ, রাজশাহী, রংপুর, চট্টগ্রাম এবং সিলেট বিভাগের দুয়েক জায়গায় অস্থায়ী দমকা বা ঝড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টিপাত হতে পারে। এছাড়া দেশের অন্যত্র অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক থাকতে পারে।
খুলনা বিভাগসহ ঢাকা, টাঙ্গাইল, ফরিদপুর, চাঁদপুর, নোয়াখালী, রাজশাহী, পাবনা, বরিশাল ও পটুয়াখালী অঞ্চলসমূহের উপর দিয়ে মৃদু ধরনের তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে এবং তা বিস্তার লাভ করে অব্যাহত থাকতে পারে। সারাদেশে দিন ও রাতের তাপমাত্রা সামান্য বৃদ্ধি পেতে পারে। পরবর্তী ৪৮ ঘণ্টায় আবহাওয়ার অবস্থার সামান্য পরিবর্তন হতে পারে। এর পরবর্তী ৫ দিনে আবহাওয়ার উল্লেখযোগ্য পরিবর্তনের সম্ভাবনা নেই।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।