Inqilab Logo

রোববার ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৭ আশ্বিন ১৪৩১, ১৮ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬ হিজরী

‘এটা ধান্দাবাজি’

| প্রকাশের সময় : ২০ মে, ২০১৭, ১২:০০ এএম

ইনকিলাব ডেস্ক : ভারতের একটি হিন্দু মৌলবাদী সংগঠনের দাবি যে তারা আয়ুর্বেদিক ওষুধ, তিথি-নক্ষেত্রের যোগ ও বিশেষ খাদ্যাভাসের মাধ্যমে সাড়ে চারশ› ‘শ্রেষ্ঠ শিশু’ বা ‘উত্তম সন্তান’-এর জন্ম দিয়েছে। তবে স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের কথায়, এটা ধান্দাবাজি।
ভারতের হিন্দু মৌলবাদী দল রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘ আরএসএস-এর আরোগ্য ভারতী হাসপাতাল স¤প্রতি এ দাবি তুলে খবরের শিরোনাম হয়েছে। তারা এই প্রচারণার নাম দিয়েছে ‘গর্ভ বিজ্ঞান সংস্কার প্রকল্প’। এই প্রকল্পের আওতায় কাজ করছে গুজরাটের পাঁচটি চিকিৎসা কেন্দ্র। এই প্রকল্পে এ পর্যন্ত সাড়ে চারশ’ প্রতিভাধর শিশুর জন্ম হয়েছে বলে দাবি করেছে আরএসএস। ২০২০ সালের মধ্যে ভারতের প্রত্যেকটি রাজ্যে এমন প্রকল্প চালু করার পরিকল্পনার কথা জানিয়েছে তারা।
আরোগ্য ভারতীর গর্ভ বিজ্ঞান সংস্কার প্রকল্পের প্রধান সমন্বয়ক কারিশমা মোহনদাস নারওয়ানি জানালেন, ‘আমরা বৈজ্ঞানিক পদ্ধতি অবলম্বন করেই কাজটি করছি। একটি সুষম খাদ্যাভ্যাস, আয়ুর্বেদ এবং জ্যোতির্বিদ্যার সাহায্যে নারীরা এখানে ‘উত্তম সন্তান› প্রসব করে। আগামী কয়েক বছরের মধ্যে কয়েক হাজার এমন শিশু জন্মদানের প্রকল্প হাতে নিয়েছি আমরা।
শুদ্ধি পদ্ধতি
আরোগ্য ভারতীর চিকিৎসকরা বলছেন, তাদের এই কাজে অনেকেরই উৎসাহ পাচ্ছেন। এই শিশুদের জন্মের আগে তিন মাসের শুদ্ধি সময়ের মধ্য দিয়ে যেতে হয়। তিথি দেখে তারা স্বামী-স্ত্রীকে সহাবাসের সময় ঠিক করে দেন। স্ত্রী অন্তঃসত্ত¡া হওয়ার পর আর স্বামীর সঙ্গে মিলিত হতে পারবে না। এ ব্যাপারে কঠোর নিষেধাজ্ঞা আছে। সন্তান প্রসবের আগ পর্যন্ত আরোগ্য ভারতীর চিকিৎসকদের পরামর্শ মেনে চলতে হবে অক্ষরে অক্ষরে। শুদ্ধি সময়কালে বাবা-মায়ের জীনগত যত সমস্যা আছে সেগুলো থেকে মুক্তি পায় শিশু অর্থাৎ পরিশুদ্ধ হয় বলে দাবি ঐ চিকিৎসকদের।
অবৈজ্ঞানিক ও ধান্দাবাজি
মূল ধারার চিকিৎসকরা এই পদ্ধতিকে ভাওতাবাজি এবং ধান্দাবাজি উল্লেখ করে বলেছেন, এর কোন বৈজ্ঞানিক ভিত্তি নেই। তারা বলছেন, এই চিকিৎসকরা আয়ুর্বেদ এর নীতিও অনুসরণ করেন না। গাইনোকলোজিস্ট ডক্টর পুনিত বেদী বললেন, এটা মানুষের চোখে ধুলো দেয়া। হিন্দু ধর্মে বর্ণভেদ আছে বিধায় অনেকেই নিজেদের উচ্চ বংশ হিসেবে বিশ্বাস করে। হিন্দু মৌলবাদীরাও তাদের সেই চিন্তাকে আরো উসকে দিয়ে এই প্রকল্পের সুফল পাচ্ছে। আর এখনও পর্যন্ত এমন কোনো তথ্য প্রমাণ পাওয়া যায়নি যে এই উত্তম সন্তানরা সাধারণ শিশুদের থেকে আসলেই ভিন্ন কিনা। তবে আরএসএস-এর কারিশমা মোহন দাস নারওয়ানি বললেন, এটা প্রমাণ করতে হলে কয়েকটা বছর সময় লাগবে। আমাদের মূল লক্ষ্য হলো ভারতকে শক্তিশালী রাষ্ট্রে পরিণত করা।
তবে ভারতীয় গণমাধ্যমে বিষয়টি নিয়ে সমালোচনার ঝড় উঠেছে। একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এটা যেন নাৎসী নাটকের কোনো অধ্যায়ের বাস্তব রূপ। সূত্র : ডয়েচে ভেলে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ