পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
নাছিম উল আলম : প্রচ দাপদাহের মধ্যেই চহিদার অর্ধেক বিদ্যুৎ সরবারহে দেশের পশ্চিম জোনের ২১টি জেলার প্রায় সাড়ে ৩ কোটি মানুষের জীবনে চরম দূর্ভোগ নেমে আসছে। বরিশাল ও খুলনা অঞ্চলে তাপমাত্রার পারদ ৩৫-৩৬ ডিগ্রি সেলসিয়াসে উঠা নামা করছে। পশ্চিম জোনে সান্ধ্য পীক আওয়ারে সাড়ে ১২শ মেগাওয়াট চাহিদার বিপরিতে সরবারহ ৭শ মেগাওয়াটে নেমে এসেছে। বরিশাল সহ দক্ষিণাঞ্চলে প্রায় দেড়শ মেগাওয়াট চাগিদার স্থলে গত বৃহস্পতিবার সরবারহ ৭০-৭৫ মেগাওয়াটে হৃাস করা হয়। ফলে সিমিত এ বিদ্যুৎ দিয়ে শহর এলকায় সররবারহে প্রাধান্য দেয়ায় গ্রামে পল্লী বিদ্যুৎ গ্রাহকদের দূর্ভোগ আরো চরমাকার ধারন করে। হাসপাতাল থেকে পানি সরবারহের মত জরুরী গণ পরিসেবাগুলো পর্যন্ত চরম বিপর্যয়ের কবলে। দিনের বেলাতেও বিদ্যুৎ ঘাটতি একই ধরনের। প্রতি ঘন্টাতেই বিদ্যুৎ সরবারহ বন্ধ হয়ে যাচ্ছে।
পশ্চিম জোনে ভয়াবহ এ বিদ্যুৎ সংকটের পাশাপাশি দক্ষিনাঞ্চলে বিতরন ও সরবারহ ব্যবস্থা আরো নাজুক আকার ধারন করায় গণ দূর্ভোগ চরম পর্যায়ে। খোদ বরিশাল মহানগরীতে ‘আকাশে মেঘ জমলেই বিদ্যুৎ বন্ধ হয়ে যায়’ প্রবাদের সাথে তাপমাত্রা বৃদ্ধির ফলেও এখন বিভ্রাট আরো বাড়ছে। চলতি গ্রীষ্ম মওশুমে বরিশাল মহানগরীতে অন্তত ৩০টি বিতরন ট্রানসফর্মার পুড়ে গেছে। গত বছরও এ নগরীতে প্রায় ২শ বিতরণ ট্রান্সফর্মার পুড়ে গিয়েছিল।
গত দিন পনের যাবতই বরিশাল ও খুলনা বিভাগ সহ ফরিদপুর অঞ্চলের ২১ জেলার পিডিবি’র পশ্চিম জোনে বিদু্যূৎ সংকট ক্রমশ বাড়ছে। প্রথমে চহিদার ২০-২৫% ঘাটতি শুরু হলেও বৃহস্পতিবার তা পঞ্চাশভাগে উন্নীত হয়েছে। ভোলায় পিডিবি’র ২২৫ মেগাওয়াটের কম্বাইন্ড সাইকেল পাওয়ার স্টেশনটি সহ পশ্চিম জোনের একাধীক উৎপাদন ইউনিটের উৎপাদন ব্যহত হবার পাশাপাশি পূর্বজোন থেকে সরবারহ হৃাস করায় এ অঞ্চলের ২১ জেলায় বিদ্যুৎ সরবারহ পরিস্থিতি সাম্প্রতিককালের ভয়াবাহ আকার ধারন করেছে।
পিডিবি সহ পশ্চিম জোনের বিদ্যুৎ বিতরণ কোম্পানীর দায়িত্বশীল মহল পরিস্থিতি উত্তরনের বিষয়ে সুস্পষ্ট কিছু বলছেন না। তবে আগামী সপ্তাহের শেষ দিকে উৎপাদন পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতির আভাষ দিয়েছেন নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একটি দায়িত্বশীল সূত্র। এককাধীক চেম্বার নেতৃবৃন্দের মতে, বিদ্যুতের অভাবে পশ্চিম জোনের ২১ জেলার শিল্প প্রতিষ্ঠানগুলোতে এখন প্রতিদিন উৎপাদন ঘাটতি হচ্ছে প্রয় ৫০কোটি টাকার। চিকিৎসা পরিসেবার অবস্থা আরো ভয়াবহ। সরকারী-বেসরকারী সব হাসপাতালেই অনেক মুমূর্ষু রোগীর জীবন অনেকটাই বিপন্ন বিদ্যুতের অভাবে। এমনকি অনেক জরুরী অস্ত্রপচার পর্যন্ত ব্যাহত হচ্ছে একই কারণে। নগর মহানগরগুলোতে পানি সরবারহ পর্যন্ত বন্ধ থাকছে ঘন্টার পর ঘন্টা ।
তবে বিদ্যুৎ ঘাটতির সাথে বিতরণ ব্যবস্থার ত্রæটি চরম ভোগান্তিতে ফেলছে দক্ষিণাঞ্চলের সাধারণ মানুষকে। খোদ বরিশাল মহানগরীতেই দিনরাত লোডশেডিং-এর সাথে একাধীক ফিডারে ঘন্টার পর ঘন্টা বিদ্যুৎ সরবারহ বন্ধ থাকছে বিতরন ব্যবস্থার ত্রæটির কারণে। একের পর এক ট্রানসফর্মার পুড়ে যাচ্ছে। আর একটি ট্রানসফর্মার পুড়ে গেলে তা পরিবর্তন বা মেরামত শেষে পূণর্বাশন করতে কত ঘন্টা বা দিন লাগবে তা বলতে পারেন না ওজোপাডিকো’র দায়িত্বশীল মহলও। নগরীর হাতেম আলী কলেজ ফিডারে গত এক সপ্তাহে নিকট দুরের দুটি ট্রান্সফর্মার পুড়ে গেছে। ঐ এলাকাবাশীর দূর্ভোগ ছিল বর্ণনার বাইরে।
অভিযোগ রয়েছে, শুধুমাত্র বরিশাল মহানগরীতে যে প্রায় ৫শ বিতরণ টান্সফর্মার রয়েছে তার ৮০ভাগেরও বেশী পূর্ণ লোড সীমায় চলছে। অবশিষ্ট ২০ভাগ ওভার লোডেড। নিয়মিতভাবে ট্রান্সফর্মার অয়েল পরিক্ষা না করা সহ রক্ষনাবেক্ষনের অভাবেও তা পুড়ে যাচ্ছে। নি¤œমানের ট্রান্সফর্মার কেনার কারনেও নানা ত্রæটি অব্যাহত থাকছে। এমনকি বৃষ্টির সময় অনেক ট্রান্সফর্মারের অভ্যন্তরে পানি প্রবেস করেও তা বিনষ্ট হচ্ছে।
একদিকে বিদ্যুৎ ঘাটতি, অপরদিকে বিতরণ ব্যবস্থায় লাগাতর ত্রæটির কারণে দেশের দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের প্রায় সাড়ে ৩ কোটি মানুষের দূর্ভোগ ধীরে ধীরে ক্ষোভেও পরিনত হচ্ছে।
এসব ব্যপারে গতকাল ওজোপাডিকো’র প্রধান প্রকৌশলী ও ভারপ্রাপ্ত পরিচালক-কারিগরির সাথে আলাপ করা হলে তিনি জানান, বরিশাল মহানগরী সহ পশ্চিম জোনের বিতরন ব্যবস্থা উন্নয়নে সব ধরনের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। পাশাপাশি বিদ্যুৎ উৎপাদন বৃদ্ধির সহ পশ্চিম জোনে ন্যায্য হিস্যা মাফিক সরবারহ অব্যাহত রাখার বিষয়েও পিডিবি’র সংশ্লিষ্ট মহলে সার্বক্ষনিক যোগাযোগ অব্যাহত রাখার কথা জানান তিনি।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।