Inqilab Logo

সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ বৈশাখ ১৪৩১, ১৯ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

কারও লাশ নেবেন না জঙ্গি স্বজনরা

| প্রকাশের সময় : ১৩ মে, ২০১৭, ১২:০০ এএম

বেনীপুরে জঙ্গিবিরোধী অভিযানে নিহত হয়েছে ৮০ বছরের বৃদ্ধা মারজাহান বেওয়ার ছেলে, ছেলের বৌ ও তিন নাতি-নাতনি। কিন্তু তাদের কারোরই লাশ নেবেন না তিনি। মারজাহান বিবি বলছেন, মানুষ হিসেবে সবার জন্যই মন কাঁদছে। কিন্তু কোনো দেশবিরোধী সন্তানের লাশ গ্রহণ করবেন না তিনি। মারজাহান বিবি মনে করেন, কেউ খারাপ কাজ করলে তার শাস্তি হয়, তার ছেলেসহ পরিবারের সদস্যরা তেমন শাস্তিই পেয়েছে। মারজাহান বিবি জানান, তিনি লাশ নেবেন কী না সে ব্যাপারে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তার কাছে এখনও কিছু জানতে চায়নি। তবে জানতে চাইলে তিনি সাফ জানিয়ে দেবেন, কারো লাশ নেবেন না তিনি। জঙ্গি সাজ্জাদ হোসেনের পেশা
জঙ্গি সাজ্জাদ হোসেন পেশায় একজন কাপড়ের ব্যবসায়ী ছিলেন, ফেরি করে গ্রামে গ্রামে গ্রামে গিয়ে কাপড় বিক্রি করতেন বলে জানিয়েছেন এলাকাবাসী। তিনি মাঝে মধ্যে কৃষি কাজ করতেন। তবে এলাকার সাথে তার পরিবার ভালভাবে মেলামেশা করতেন না। তার পরিবারের মহিলা বাইরে বের হলে খুব পর্দার সাথে বের হতেন। কারো সাথে কথাও বলতেন না।
ফায়ারম্যান পরিবারকে দশ লাখ টাকার প্রদানের ঘোষনা
জঙ্গি হামলায় নিহত ফায়ার সার্ভিসের কর্মী আবদুল মতিনের পরিবারকে ১০ লাখ টাকা অনুদান দেবে পুলিশ। রাজশাহী মহানগর পুলিশের (আরএমপি) কমিশনার শফিকুল ইসলাম এই ঘোষণা দিয়েছেন। বিষয়টি নিশ্চিত করে রাজশাহী ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের উপ-পরিচালক নুরুল ইসলাম বলেন, পুলিশ মহাপরিদর্শকের প্রতিনিধি হিসেবে হাসপাতালে নিহত আবদুল মতিনের লাশ দেখতে যান আরএমপি কমিশনার শফিকুল ইসলাম। এ সময় তিনি নিহত আবদুল মতিনের স্ত্রী তানজিলা বেগমকে জানান, তাকে ১০ লাখ টাকা আর্থিক অনুদান দেবে পুলিশ সদর দপ্তর। উপ-পরিচালক জানান, ঘটনার পর ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের পরিচালক (অপারেশন) একেএম শাকিল নেওয়াজ ঢাকা থেকে রাজশাহী এসেছেন। তিনি নিহতের পরিবারকে ব্যক্তিগতভাবে ১০ হাজার টাকা দিয়েছেন। আবদুল মতিনের দাফনের জন্য বিভাগ আরও ১০ হাজার টাকা দিয়েছে। আর কর্মরতঅবস্থায় মৃত্যু হওয়ায় আবদুল মতিনের পরিবার ফায়ার সার্ভিসের পক্ষ থেকে ৮ লাখ টাকা পাবে। এছাড়া অধিদপ্তরের মহাপরিচালক কল্যাণ তহবিল থেকে আবদুল মতিনের পরিবারকে আর্থিক সহায়তা করবেন। জঙ্গি হামলায় নিহত আবদুল মতিন ফায়ার সার্ভিসের গোদাগাড়ী সদর স্টেশনে কর্মরত ছিলেন। তার বাড়ি একই উপজেলার মাটিকাটা ইউনিয়নের মাটিকাটা ভাটা গ্রামে, বাবার এহসান আলী।
আতœসমার্পন ও উদ্ধার
কয়েক ঘন্টা চেষ্টা করে পুলিশের ডাকে সাড়া দিয়ে আতœসমার্পন করেছেন জঙ্গি সাজ্জাদ হোসেনের মেয়ে সুমাইয়া করেন। সেই সাথে পুলিশ উদ্ধার করে সুমাইয়ার ৮ বছর ও তিন মাস বয়সী দুই সন্তানকেও। ৮ বছর বয়সের ছেলে জুবায়ের হোসেন ও তিন মাসের মেয়ে আফিয়া খাতুনকে উদ্ধার করে পুলিশ। সে ওই সময় বাড়ি থেকে বের হয়ে ফাঁকা মাঠে অবস্থান করেন। তার কাছে বোম্ব থাকতে পারে বলে অনেকের ধারনা ও আতংক ছিল।
জঙ্গি হামলায় ফায়ারম্যান নিহতের ঘটনা তদন্ত কমিটি গঠন    
গোদাগাড়ীতে জঙ্গি হামলায় ফায়ার সার্ভিসের এক কর্মী নিহতের ঘটনা তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় পাঁচ সদস্যের এ কমিটি গঠন করা হয় বলে জানান ফায়ার সার্ভিসের পরিচালক মেজর শাকিল নেওয়াজ। রাজশাহীর উপ পরিচালক নুরুল ইসলামকে প্রধান করে গঠিত কমিটিতে আগামী ১৫ দিনের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে বলে জানান তিনি। ওই জঙ্গি আস্তানা ঘিরে অভিযানের সময় ফায়ারম্যান আব্দুল মতিন পানি স্প্রে করার সময় মধ্যে বাড়ি থেকে বেরিয়ে দুই নারীসহ কয়েকজন পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিস কর্মীদের ওপর ধারালো অস্ত্র নিয়ে হামলা চালায়। আহতদের মধ্যে ফায়ার সার্ভিসের ফায়ারম্যান আবদুল মতিন হাসপাতালে মারা যান। ফায়ার সার্ভিসের এ পরিচালক বলেন, জঙ্গি আস্তানায় দায়িত্বরত ফায়ার সার্ভিস কর্মীদের নিরাত্তায় কোনো গাফিলতি ছিল কি না তা তদন্তে এ কমিটি করা হয়েছে। এদিকে নিহতের পরিবারকে ১০ লাখ টাকা অনুদানের ঘোষণা দিয়ে পুলিশ।
মতিনের দাফন
গত বৃহস্পতিবার রাত ৮ টায় মহিশালবাড়ী গোরস্থানে নামাজের জানাযা শেষে তাকে দাফন করা হয়। এসময় ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের পরিচালক (অপারেশন) একেএম শাকিল নেওয়াজ জানিয়েছেন, কর্মী আবদুল মতিনের মৃত্যু কীভাবে হয়েছে তা অনুসন্ধানে রাজশাহী ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের উপ-পরিচালক নুরুল ইসলামকে প্রধান করে পাঁচ সদস্যর একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। আগামি ১৫ দিনের মধ্যে কমিটি তাদের প্রতিবেদন দেবে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ