পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
সাদিক মামুন, কুমিল্লা থেকে : কুমিল্লা বোর্ডে এবারের এসএসসি পরীক্ষায় ফলাফল বিপর্যয়ের সত্বেও কুমিল্লা শহর ও বাইরের কিছু সেরা স্কুলে ভালো ফলাফলে বইছে খুশির জোয়ার। নার্সারী দিয়ে শুরু হওয়া শিক্ষাজীবনের প্রতিটি ধাপে লালন করা স্বপ্নের প্রতিফলন ঘটালো এসএসসির মেধাবীরা। উত্তীর্ণ মেধাবীদের কন্ঠে আনন্দের জয়ধ্বনি আর চোখেমুখে ছিল স্বপ্নজয়ের আনন্দ। আর অকৃতকার্য হাজারো ছাত্রছাত্রীকে হতাশা থেকে ওঠে এসে আগামীর সেরা প্রস্তুতির আহŸান জানিয়েছেন শিক্ষকরা। অন্যদিকে ইংরেজি ও গণিত বিষয়ে ৫৯ হাজারের বেশি ছাত্র-ছাত্রী অকৃতকার্য হওয়ার কারন খুঁজে বের করতে স্কুলগুলোকে শিক্ষাবোর্ড কর্তৃপক্ষ কারণ দর্শানোর নোটিশ দেবে।
এবারের এসএসসি পরীক্ষায় ভালো করতে পারেনি কুমিল্লা শিক্ষাবোর্ড। গতবারের চেয়ে প্রায় ২৫ভাগ কম নিয়ে এবারে মাত্র ৫৯ দশমিক ৩ভাগ পাশের হার অর্জন করেছে বোর্ড। যা গত চার বছরের অর্জিত ফলাফলের মধ্যে সবচেয়ে কম। আর গতবারের ৬হাজার ৯৫৪টি জিপিএ-৫ এর মধ্যে এবারে পেয়েছে ৪হাজার ৪৫০টি। বোর্ডের কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামের কেজি আহাম্মদ গালর্স হাই স্কুল ও পায়েরখোলা আরএম বিআর হাই স্কুল থেকে কেউ পাশ করেনি। বোর্ডের ১৪টি স্কুল শতভাগ পাশের সাফল্য অর্জন করেছে। এরমধ্যে কুমিল্লা শহর ও শহরের বাইরের সাতটি স্কুল রয়েছে। গতকাল সকাল সাড়ে দশটায় কুমিল্লা শিক্ষাবোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক কায়সার আহমেদ সাংবাদিকদের এবারের এসএসসি পরীক্ষার সারসংক্ষেপ ফলাফল বিররণীর সীট প্রদান করেন। এসময় তিনি বলেন, এবারে মানবিক ও ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগের শিক্ষার্থীরা বেশি খারাপ করেছে। বিশেষ করে ইংরেজিতে ২৫হাজার ৬জন ও গণিতে ৩৪হাজার ৬৮৯জন ফেল করেছে। সার্বিকভাবে বোর্ডের ফলাফল অস্বাভাবিক মনে হচ্ছে। পর্যাপ্ত অবকাঠামোগত সুযোগ-সুবিধা ও দক্ষ শিক্ষক থাকা সত্তে¡ও যেসব স্কুল খারাপ করেছে তাদেরকে কারণ দর্শানো নোটিশ দেয়া হবে।
এদিকে এসএসসির কাঙ্খিত ফলাফল জানতে কুমিল্লা শহর ও শহরের বাইরের স্কুলগুলোতে বেলা সাড়ে ১২টা থেকেই শিক্ষার্থীরা ভিড় করতে থাকে। বোর্ডের পাশের হার আর ইংরেজি ও গণিতে ফেলের সংখ্যা শুনে অনেককেই হতাশ হয়ে স্কুল ক্যাম্পাসে বসে থাকতে দেখা গেছে। আর ভালো ফলাফলে পাস করবে এমন শিক্ষার্থীদের চোখেমুখে ছিলো আকাশছোঁয়া আত্মবিশ্বাস। বেলা দেড়টায় স্কুলগুলোতে ফলাফল সীট সাটিয়ে দেয়ার পর। প্রত্যাশিত ফলাফলে নিজের রোল নম্বরে সাফল্য খুঁজে পেয়ে উল্লাসে মেতে উঠে শিক্ষার্থীরা। শহরের এসব স্কুলের উত্তীর্ণ ছাত্র-ছাত্রীদের এ আনন্দ-উল্লাসে যোগ দেয় শিক্ষক অভিভাবকরাও। অন্যদিকে অকৃতকার্যদের শান্তনা দিতে এগিয়ে আসে উত্তীর্ণরা। শিক্ষকরাও তাদের জড়িয়ে ধরে আগামীতে ভালো করার প্রস্তুতি নিয়ে এখন থেকেই এগিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেন। কুমিল্লা বোর্ডে এবারে ফলাফল বিপর্যয়ের মধ্যেও কুমিল্লা শহরের কুমিল্লা শিক্ষাবোর্ড মডেল কলেজ, এ্যাথনিকা ইংলিশ মিডিয়াম স্কুল, আওয়ার লেডি ফাতিমা গালর্স হাই স্কুল এবং শহরের বাইরে ইস্পাহানী পাবলিক স্কুল এন্ড কলেজ, কুমিল্লা ক্যান্টনমেন্ট বোর্ড মাধ্যমিক স্কুল, কুমিল্লা ক্যাডেট কলেজ এবং কুমিল্লার চান্দিনা উপজেলার আবেদা নূর গালর্স হাই স্কুল শতভাগ পাশের সাফল্য অর্জন করেছে। এছাড়াও শহরের স্কুলগুলোর মধ্যে জিলা স্কুল, নওয়াব ফয়েজুন্নেসা সরকারি বালিকা বিদ্যালয়, কুমিল্লা মডার্ণ হাই স্কুল, ইবনে তাইমিয়া স্কুল এন্ড কলেজ ভালো ফলাফল করেছে। কুমিল্লা বোর্ডে ফলাফল বিপর্যয়েও গতকাল দুপুরে এসব স্কুলে গিয়ে দেখা গেছে সাফল্যে উদ্ভাসিত মেধাবীরা যেনো স্বপ্নজয়ের আনন্দে ক্যাম্পাসে পাখা মেলে উড়ছে। তাদের উল্লাসে মুখরিত গোটা অঙ্গন। নিয়মিত পাঠদান, শৃঙ্খলা বজায় থাকায় শিক্ষার্থীরা ভালো ফলাফল করেছে বলে মনে করেন স্কুলগুলোর শিক্ষক ও অভিবাবকরা। শতভাগ পাশের তালিকায় থাকা কুমিল্লা শিক্ষাবোর্ড মডেল কলেজের অধ্যক্ষ ড. এমদাদুল হক জানান, শিক্ষকদের নিরলস প্রচেষ্টা, অভিভাবকদের সচেতনতা, সর্বোপরি ছাত্র-ছাত্রীদের রুটিন মাফিক অধ্যায়নের ফলেই এ সাফল্য অর্জিত হয়েছে। প্রতিবছর অসাধারণ ফলাফলে এ বিদ্যালয়ের সুনাম অক্ষুন্ন রয়েছে। শতভাগ সাফল্যে শহরের আরেকটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান আওয়ার লেডি অব ফাতিমা গালর্স হাই স্কুলের প্রধান শিক্ষক সিস্টার মেরি শিখা বলেন, দেড়যুগ ধরে আওয়ার লেডী অব ফাতিমা গালর্স হাই স্কুল কৃতিত্বের সাথে শতভাগ পাশের সাফল্যের জায়গাটি ধরে রেখেছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।