পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
তাকী মোহাম্মদ জোবায়ের : হ্যাকিংয়ের মাধ্যমে দেশে রিজার্ভ চুরির মতো ঘটনা ঘটলেও সাইবার নিরপত্তার ঝুঁকি কমাতে ব্যর্থ হয়েছে ব্যাংক খাত। এক বছর ব্যবধানেও ব্যাংক খাতের সাইবার হুমকির ঝুঁকি এক ভাগও কমেনি। বাংলাদেশ ইনিস্টিটিউট অব ব্যাংক ম্যানেজমেন্টের (বিআইবিএম) হিসাবে, এখনও উচ্চ ঝুঁকিতে ৫২ ভাগ ব্যাংক। একবছর আগেও সংস্থাটি ঝুঁকির একই মাত্রা প্রকাশ করেছিল।
গতকাল বিআইবিএমের গবেষক সহযোগী অধ্যাপক মো. শিহাব উদ্দিন খান যে প্রতিবেদন তুলে ধরেন তাতে দেখা গেছে, তথ্যনিরাপত্তার ক্ষেত্রে উচ্চ ঝুঁকিতে রয়েছে দেশের ৫২ শতাংশ ব্যাংক। এর মধ্যে ১৬ শতাংশ খুবই উচ্চ নিরাপত্তা ঝুঁকিতে এবং ৩৬ শতাংশ উচ্চ নিরাপত্তা ঝুঁকিতে রয়েছে। বাকি ৩২ শতাংশ ব্যাংক কিছুটা কম ঝুঁকিতে এবং ১৬ শতাংশ ব্যাংক খুবই কম ঝুঁকিতে রয়েছে। গতবছরের ৭মে প্রতিষ্ঠানটি যে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছিল তাতেও এসব হার একই ছিল।
গতবছরের ৪ ফেব্রæয়ারি বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ থেকে ১০ কোটি ১০ লাখ ডলার চুরি হওয়ার পর থেকেই ব্যাংক খাতের আইটি নিরাপত্তার বিষয়টি আলোচনায় আসে। এ প্রেক্ষিতেই গত দুই বছর ধরে গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশ করে আসছে বিআইবিএম।
গতবছর বিআইবিএম’র গবেষণা প্রতিবেদনটি প্রকাশের পর পূবালী ব্যাংকের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) ও বিআইবিএমের সুপারনিউমারারি অধ্যাপক হেলাল আহমেদ চৌধুরী তার প্রতিক্রিয়ায় বলেছিলেন, “দক্ষ জনবল ও সুষ্ঠু তদারকির অভাবে সাইবার হামলার ঝুঁকি কমছে না। সাধারণত প্রযুক্তির ব্যবহার বাড়লে ঝুঁকিও বাড়ে। তবে ঝুঁকি নিরসনে যে প্রযুক্তি ব্যবহার করা দরকার, তা নিশ্চিত করতে হবে।”
গতকাল সন্ধ্যায় এ বিষয়ে তিনি ইনকিলাবকে বলেন, এবারের গবেষণা প্রতিবেদনে ব্যাংকিং খাতে সাইবার নিরাপত্তার ঝুঁকির হার গতবছরের সমান হলেও সামগ্রিক বিবেচনায় ঝুঁকি কমেছে। কারণ গত একবছরে সরকারি ব্যাংকগুলোও অধিকাংশ অনলাইনের আওতায় চলে এসেছে। এবছরের হিসাবে সরকারি ব্যাংকগুলো যোগ হওয়ার পরও ঝুঁকির মাত্রা বাড়েনি, এটাই প্রমাণ করেছে সামগ্রিক বিবেচনায় ঝুঁকি কিছুটা কমেছে। তিনি বলেন, সবাই সাইবার নিরাপত্তা বাড়াচ্ছে। সব প্রতিষ্ঠানেই এখন সাইবার সিকিউরিটি বেশি নেওয়া হচ্ছে।
এদিকে সম্প্রতি বিআইবিএম’র আরেকটি পর্যবেক্ষণ প্রতিবেদনে আর্থিক খাতের উচ্চ সাইবার ঝুঁকির জন্য ১০টি কারণ চিহ্নিত করেছিল। যেগুলোর মধ্যে সাইবার নিরাপত্তায় অপর্যাপ্ত বিনিয়োগ, দুর্বল আইটি ব্যবস্থাপনা, এটা প্রতিরোধে ব্যবস্থা গ্রহণ না করা, কাজে সমন্বয়হীনতা, দুর্বল ডাটা নিরাপত্তা ব্যবস্থা অন্যতম।
গতকাল রাজধানীর মিরপুরে বিআইবিএম মিলনায়তনে প্রতিবেদন প্রকাশ অনুষ্ঠান ও কর্মশালার উদ্বোধন করেন বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর আবু হেনা মোহাম্মদ রাজী হাসান। এ সময় তিনি উচ্চ সাইবার নিরাপত্তা ঝুঁকির ৫টি কারণ তুলে ধরেন। বলেন, ব্যাংকগুলো বিদেশি সফটওয়্যার ব্যবহার করার কারণে সাইবার ঝুঁকি আরও বেড়েছে। এর পেছনে বড় অঙ্কের অর্থ খরচ হলেও ব্যাংকগুলো এখনো ঝুঁকিমুক্ত হয়নি।
“বাংলাদেশের সব ব্যাংকে একই সফটওয়্যার ব্যবহার করে ব্যাংকিং কার্যক্রম পরিচালনা করলে সাইবার ঝুঁকি ও আর্থিক ক্ষতি দুটোই কমানো সম্ভব”Ñ এমন মত এই ডেপুটি গভর্নরের।
কিছু কিছু ব্যাংক তথ্যপ্রযুক্তির ক্ষেত্রে পিছিয়ে পড়েছে উল্লেখ করে রাজী হাসান বলেন, এ খাতে তাদের বাজেট যেমন কম, কেনাকাটায়ও দেরি করছে; আবার কর্মীদের প্রশিক্ষণও দিচ্ছে না। এ অবস্থা থেকে ব্যাংকগুলোর বেরিয়ে আসতে হবে। দেশের ব্যাংকগুলোর আইটি নিরাপত্তা বাড়াতে এবং সচেতনতা তৈরির ওপর জোর দেন তিনি।
অনুষ্ঠানে বিআইবিএমের সুপারনিউমারারি অধ্যাপক হেলাল আহমদ চৌধুরী বলেন, ব্যাংক অডিটে প্রত্যেক টিমের মধ্যে একজন করে দক্ষ আইটি বিশেষজ্ঞ রাখতে হবে। কারণ, অডিটের সময় আইটি দুর্বলতা ধরা না পড়ার কারণে বড় বড় জালিয়াতির ঘটনা ঘটছে। ব্যাংকিং খাতে জালিয়াতির জন্য কিছু ক্ষেত্রে ব্যাংকারদের দায়ী করেছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক নির্বাহী পরিচালক এবং বিআইবিএমের সুপারনিউমারারি অধ্যাপক ইয়াছিন আলী। আর ‘ব্যাংকের অর্থে অহেতুক বিদেশ ভ্রমণ কিংবা অন্য কোনো লাভের আশায় ব্যাংকের কিছু কর্মকর্তা বিদেশি সফটওয়্যার কিনছেন’- এমন মত বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্যপ্রযুক্তি বিভাগের প্রধান দেবদুলাল রায়ের।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।