পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
স্টাফ রিপোর্টার : ভারতের সঙ্গে দেশের স্বার্থবিরোধী কোনো চুক্তি সম্পাদিত হয়নি দাবি করে প্রধানমন্ত্রী ও সংসদ নেতা শেখ হাসিনা বলেন, দেশের স্বার্থ বিরোধী কোনো চুক্তি আওয়ামী লীগ সরকার কখনো করেনি, করবেও না। বরং বিএনপিই সরকারে থাকতে চীনের সঙ্গে গোপনে প্রতিরক্ষা চুক্তি করেছিল। এই চুক্তির ব্যাপারে দেশের জনগণ ও সংসদকে একটি কথাও জানতে দেয়নি। তাই ভারতের সঙ্গে দেশের স্বার্থ বিরোধী চুক্তি সম্পাদিত হয়েছে- এ ধরণের বিবৃতি সম্পূর্ণ অসত্য, মনগড়া, অবিবেচনা প্রসূত এবং বাংলাদেশের জনগণকে বিভ্রান্ত করার অপচেষ্টা মাত্র। আমরা ভারতের সঙ্গে যেসব চুক্তি/সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর করেছি তার সবগুলোই দেশের স্বার্থে, জনগণের কল্যাণে ও দেশের উন্নয়নে।
গতকাল বুধবার সংসদ অধিবেশনের দ্বিতীয় দিনে প্রধানমন্ত্রীর জন্য নির্ধারিত ত্রিশ মিনিটের প্রশ্নোত্তর পর্বে একাধিক সম্পুরক প্রশ্নের জবাবে সংসদ নেতা আরও বলেন, আইপিইউ সম্মেলনে বিশ্বের সংসদসমূহ ও জনপ্রতিনিধিগণের স্বতঃস্ফুর্ত ও সক্রিয় অংশগ্রহণের মাধ্যমে বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার প্রতি আস্থা ও সমর্থনের বিষয়টিই প্রতিফলিত হয়েছে। ২০১৪ সালের নির্বাচন নিয়ে যারা প্রশ্ন তুলে জনগণকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করেন, এই সফল আন্তর্জাতিক এসেম্বলী দেখে ‘ঘটে যদি পানি’ থাকলে তারা এসব কথা আর বলবেন না। ২০১৪ সালে সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে বাংলাদেশে গণতান্ত্রিক ধারা অব্যাহত আছে, তা বিশ্বের সকল গণতান্ত্রিক দেশের প্রতিনিধিরা সম্মেলনে উপস্থিত থেকে তার সমর্থন দিয়েছে। ২০১৪ সালের নির্বাচন সারাবিশ্বই গ্রহণ করেছে। আমাদের গণতান্ত্রিক অগ্রযাত্রায় এটি একটি মাইলফলক হিসেবে চিহ্নিত হয়ে থাকবে।
প্রশ্নোত্তর পর্বে প্রধানমন্ত্রী তার ভারত সফরকালে সম্পাদিত ১১টি চুক্তি, ২৪টি সমঝোতা স্মারক এবং দুটি এসওপি (স্ট্যান্ডার্ড অপরাটিং প্রসিডিউর)’র বিস্তারিত তথ্য জাতীয় সংসদের মাধ্যমে দেশবাসীর সামনে তুলে ধরে বলেন, যা কিছুই করেছে তার সবগুলোই জনগণের স্বার্থে, কল্যানে ও দেশের উন্নয়নে। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর অনুসৃত পথ ধরেই বিশ্বের সকল দেশের সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রেখেই দেশকে দ্রæত উন্নয়নের পথে নিয়ে যাচ্ছি। দেশকে দ্রæত উন্নয়নের দিকে ধাবিত করতে এবং দারিদ্র্যনিরসনে যেসব চুক্তি/ সমঝোতা সম্পাদিত হয়েছে, তা দ্রæতই আমরা বাস্তবায়ন করতে পারব।
নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু করতে সরকার ইসিকে সব ধরণের সহযোগিতা দেবে
জাসদের সদস্য নাজমুল হক প্রধানের প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আগামীতে সব নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষভাবে অনুষ্ঠানের লক্ষ্যে নির্বাচন কমিশনকে সহযোগিতা করার জন্য বর্তমান সরকার বদ্ধপরিকর। এ পর্যন্ত অনুষ্ঠিত সব নির্বাচনে নির্বাচন কমিশনের চাহিদা অনুসারে সরকার তথা নির্বাহী বিভাগ সকল ধরণের সহায়তা প্রদান করেছে। তিনি বলেন, নির্বাচন কমিশন সংবিধান ও সংশ্লিষ্ট আইন দ্বারা নির্ধারিত বিধান অনুযায়ী দায়িত্ব পালন করে। নির্বাচন কমিশনের দায়িত্ব পালনে সকল নির্বাহী কর্তৃপক্ষ সহযোগিতা করতে সাংবিধানিকভাবে বাধ্য। নির্বাচন কমিশন দায়িত্ব পালনের ক্ষেত্রে সম্পূর্ণ স্বাধীন এবং কেবল সংবিধান ও আইনের অধীন। তিনি বলেন, বর্তমান সরকারের আমলে অনুষ্ঠিত সকল নির্বাচনসহ সম্প্রতি অনুষ্ঠিত নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশন ও কুমিল্লা সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন হয়েছে। নবগঠিত নির্বাচন কমিশন পূর্ববর্তী কমিশনের ধারাবাহিকতায় বেশ কয়েকটি নির্বাচন সম্পন্ন করেছে যার সবগুলোই সুষ্ঠু হিসেবে দেশ ও বিদেশে প্রশংসিত হয়েছে।
ভারতের সঙ্গে স্বার্থবিরোধী কোন চুক্তি হয়নি
সংরক্ষিত নারী আসনের বেগম ফজিলাতুন নেসা বাপ্পির প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী জানান, সম্প্রতি ভারত সফরে দেশের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিষয়াদি সমুন্নত রেখেই দ্বিপাক্ষিক বিষয়ে মোট ৩৫টি চুক্তি ও সমঝোতা স্মারক এবং দুটি এসওপি (স্ট্যান্ডার্ড অপারেটিং প্রসিডিউর) স্বাক্ষরিত হয়েছে। এসব চুক্তি ও সমঝোতা স্মারকের বাস্তবায়ন প্রক্রিয়া শুরু হলে তা বাংলাদেশের জনগণের জীবনমান উন্নীতকরণে ইতিবাচক ভ‚মিকা পালন করবে, যা এই সফরের একটি বড় অর্জন। সংসদ নেতা আরও জানান, সফরকালে দুই দেশ ৬২ দফা সংবলিত একটি যৌথ ইশতেহার প্রকাশ করেছে, যাতে দু’দেশের চলমান সম্পর্ক এবং এ সম্পর্কের ভবিষ্যত দিক-নির্দেশনা সুষ্পষ্টভাবে উঠে এসেছে। দেশবাসীর অবগতির জন্য ইতোমধ্যেই এই ইশতেহার গণমাধ্যমে প্রকাশ করা হয়েছে। এছাড়া দু’দেশের জনগণের মধ্যে জন-যোগাযোগ বৃদ্ধির উদ্দেশ্যে খুলনা-কলকাতা রুটে যাত্রীবাহী রেল ও বাস চলাচল উদ্বোধন করা হয় এবং বিরল-রাধিকারপুর রুটে পণ্যবাহী রেল চলাচলের উদ্বোধন করা হয়। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ভারত সফরকালে যে সমস্ত চুক্তি/সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়েছে তার সবগুলোর শিরোনাম ইতোমধ্যে গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে। কোন চুক্তি/সমঝোতা স্মারকই দেশের স্বার্থ বিরোধী নয়। তাই ভারতের সঙ্গে দেশের স্বার্থ বিরোধী চুক্তি সম্পাদিত হয়েছে- এ ধরণের বিবৃতি সম্পূর্ণ অসত্য, মনগড়া, অবিবেচনা প্রসূত এবং বাংলাদেশের জনগণকে বিভ্রান্ত করার অপচেষ্টা মাত্র। বাংলাদেশ একটি স্বাধীন, সার্বভৌম এবং আত্মমর্যাদা সম্পন্ন দেশ। ত্রিশ লাখ শহীদের আত্মত্যাগ এবং দুই লাখ মা- বোনের সম্ভ্রমের বিনিময়ে রক্ত¯œাত বাংলাদেশ অর্জিত হয়েছে। দেশের স্বার্থ বিরোধী কোনো চুক্তি আওয়ামী লীগ সরকার করবে না।
তিস্তা পানি চুক্তি প্রসঙ্গ
তিস্তা নদীর পানি চুক্তি প্রসঙ্গে একই প্রশ্নকর্তার প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তিস্তা নদীর পানি চুক্তির বিষয়টি আওয়ামী লীগ সরকারের কাছে গুরুত্বপূর্ণ। আমরা তিস্তার পানি বন্টন চুক্তি সম্পাদনের ব্যাপারে অত্যন্ত আন্তরিক এবং তৎপর। ভারত সফরকালে তিস্তা নদীর পানি বন্টন চুক্তি দ্রæত সম্পাদনের জন্য আমি ভারতের প্রধানমন্ত্রী, পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রীসহ সংশ্লিষ্ট সকলকে জোর আহŸান জানাই। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী দৃঢ় আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন যে, তার সরকার ও আমার সরকার ক্ষমতায় থাকতেই তিস্তার পানি বন্টনের মাধ্যমে সমাধান হবে। অন্যান্য নদীর বিষয়েও আলোচনা হয়েছে। তিনি বলেন, মুক্তিযুদ্ধ সম্মাননা পদক অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের মুক্তিযোদ্ধাদের সহায়তা প্রদানের প্রয়াসে ভারত সরকার বেশ কয়েকটি ঘোষণা দিয়েছে। তার মধ্যে রয়েছে- অতিরিক্ত ১০ হাজার মুক্তিযোদ্ধা সন্তানদের শিক্ষা বৃত্তি প্রদান, মুক্তিযোদ্ধাদের ভারতের ৫ বছরের মাল্টিপল এন্ট্রি ভিসা প্রদান এবং প্রতিবছর ১০০ জন মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য ভারতে চিকিৎসা সহায়তা প্রদান করা হবে বলে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী অঙ্গীকার করেন। তিনি বলেন, তার এ সফর অত্যন্ত সফল হয়েছে যা দু’দেশের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক উন্নয়নে সুদূরপ্রসারী ভ‚মিকা রাখবে বলে আমি আশা করি। সংসদ নেতা আরও জানান, গণহত্যা দিবসের বিষয়ে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের স্বীকৃতি আদায়ের প্রচেষ্টায় ভারতের সহযোগিতা কামনা করি। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এ বিষয়ে বাংলাদেশের পাশে থাকার প্রতিশ্রæতি ব্যক্ত করেন, যা যৌথ ইশতেহারে উল্লেখ করা হয়েছে। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর প্রতি গভীর শ্রদ্ধার নিদর্শন ও তাঁর অসাধারণ নেতৃত্বের স্বীকৃতি স্বরূপ ভারত সরকার দিল্লীস্থ ‘পার্ক স্ট্রিট’-এর নতুন নামকরণ করেছে ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব রোর্ড’। বিভিন্ন দেশের সঙ্গে প্রতিরক্ষা বিষয়ে চুক্তি কিংবা সমঝোতা বিষয়ে মূল প্রশ্নকর্তার সম্পুরক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিভিন্ন দেশের সঙ্গেই আমাদের বিভিন্ন চুক্তি ও সমঝোতা স্মারক রয়েছে। প্রতিরক্ষা বিষয়ে চীন, রাশিয়া, কুয়েত, কাতারসহ অনেক দেশের সঙ্গে আমাদের সমঝোতা স্মারক রয়েছে। কিন্তু বিএনপি ক্ষমতায় থাকতে চীনের সঙ্গে দেশের মানুষকে একটি কথাও না জানিয়ে প্রতিরক্ষা চুক্তি করেছিল। এমনকি সংসদকেও কোনকিছু জানায়নি।
জঙ্গিবাদ দমনে বাংলাদেশ সরকারের জিরো টলারেন্স
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, জঙ্গিবাদ দমনে বাংলাদেশ সরকারের জিরো টলারেন্স। জঙ্গিবাদ মোকাবেলায় সব শ্রেণি-পেশার মানুষকে সজাগ থাকতে হবে। গতকাল গণভবনে এক ভিডিও কনফারেন্সে তিনি এসব কথা বলেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর তৎপরতায় বড় ধরনের জঙ্গিবাদ থেকে রক্ষা পেয়েছে বাংলাদেশের জনগণ। জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে গোয়েন্দাসংস্থা-আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কাজের জন্য আন্তরিক ধন্যবাদ জানান তিনি।
শেখ হাসিনা বলেন, নিরীহ মানুষ হত্যা করা সবচেয়ে বড় অপরাধ। যারা নিরীহ মানুষ হত্যা করে তারা জান্নাতে নয় জাহান্নামে যায়। কারণ ইসলাম ধর্ম শান্তির ধর্ম। এখানে ভুল পথে মানুষকে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। আন্তর্জাতিক পর্যায়ে ইসলামকে হেয় করার চেষ্টা করা হচ্ছে।
অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন নিশ্চিতে সরকার বদ্ধপরিকর : প্রধানমন্ত্রী
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আগামীতে অনুষ্ঠিত সকল নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষভাবে অনুষ্ঠানের লক্ষ্যে নির্বাচন কমিশনকে সকল প্রকার সহযোগিতা করার জন্য বর্তমান সরকার বদ্ধপরিকর। গতকাল সংসদে তাঁর জন্য নির্ধারিত প্রশ্নোত্তর পর্বে জাসদের নাজমুল হক প্রধানের এক প্রশ্নের জবাবে আরো বলেন, নির্বাচন কমিশন সংবিধান ও সংশ্লিষ্ট আইন দ্বারা নির্ধারিত বিধান অনুযায়ী দায়িত্ব পালন করে। তিনি বলেন, নির্বাচন কমিশনের দায়িত্ব পালনে সকল নির্বাহী কর্তৃপক্ষ সহযোগিতা করতে সাংবিধানিভাবে বাধ্য। নির্বাচন কমিশন দায়িত্ব পালনের ক্ষেত্রে সম্পূর্ণ স্বাধীন এবং কেবল সংবিধান ও আইনের অধীন। স¤প্রতি অনুষ্ঠিত নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশন ও কুমিল্লা সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনসহ বর্তমান সরকারের আমলে অনুষ্ঠিত সকল নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, নবগঠিত নির্বাচন কমিশন পূর্ববর্তী কমিশনের ধারাবাহিকতায় বেশ কয়েকটি নির্বাচন সম্পন্ন করেছে, যার সবগুলোই সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন হিসেবে দেশ ও বিদেশে প্রশংসিত হয়েছে। এ পর্যন্ত অনুষ্ঠিত সকল নির্বাচনে নির্বাচন কমিশনের চাহিদা অনুসারে সরকার তথা নির্বাহী বিভাগ সকল ধরনের সহায়তা প্রদান করেছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।