Inqilab Logo

শনিবার ১৬ নভেম্বর ২০২৪, ০১অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৩ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

অভিন্ন নদীর পানি বণ্টনের বিষয়টিও বিবেচনায় আনা দরকার

| প্রকাশের সময় : ৪ মে, ২০১৭, ১২:০০ এএম

এবিসিদ্দিক : হাওর এলাকার চলমান অবস্থা নিয়ে অনেক লেখালেখি হচ্ছে। তবে আমি বলবো হাওর নিয়ে সরকারের উন্নয়ন কর্মকান্ড নিয়ে। হাওর নিয়ে অনেক প্রকল্প গ্রহণ ও বাস্তবায়ন চলছে। দীর্ঘ মেয়াদী, স্বল্প মেয়াদী ও মধ্যমেয়াদী নানা ধরণের প্রকল্প। আসলে কি হচ্ছেটা কি? টাকার অভাবে প্রকল্প বাস্তবায়ন সম্ভব হচ্ছে না। আবার কাজ যে টুকু হচ্ছে তা অনিয়ম-দুর্নীতির কারণে নিম্নমানের হওয়ায় বন্যার পানিতেই ভেসে যাচ্ছে যার ফলে অবস্থাটা দাড়াচ্ছে এমন যে, ‘ যেই লাউ,সেই কদু’। সংশ্লিষ্ট একজন কর্মকর্তা বললেন, হাওর বা জলাভুমি উন্নয়নে বৈদিশক কোন অর্থ সহায়তা পাওয়া যায় না। কাজ যেটুকু করতে হয়, সরকারের নিজস্ব অর্থায়নে(জিওবি’র টাকায়)। অনেক প্রকল্প আছে যা নির্দিষ্ট সময় শেষ হয় না, বছরের পর বছর যায় বরাদ্দ পাওয়া যায়না। আর কাজ যেটুকু হয় তাও বানের পানি ভাসিয়ে নিয়ে যায়। যেমন- ২০১০-১১ অর্থবছরে সিলেট, সুনামগঞ্জ, হবিগঞ্জ ও কিশোরগঞ্জ জেলার প্রায় ১৬ টি উপজেলাকে ঘিরে একটি প্রকল্প গ্রহণ করা হয়। প্রকল্পের নামঃ কালনী-কুশিয়ারা নদী ব্যবস্থাপনা প্রকল্প। পানি উন্নয়ন বোর্ড কর্তৃক বাস্তবায়ন সংস্থা। কালনী-কুশিয়ারা নদী ব্যবস্থাপনা প্রকল্প এলাকা সিলেটের দক্ষিণে এবং ভৈরব বাজারের পূর্বে অবস্তিত। দক্ষিণে কুশিয়ারা-বিজনা-রটনা-সুতাং নদী, উত্তরে পুরাতন সুরমা-ডাহুক নদী এবং জগন্নাথপুর সিলেট সড়ক, পশ্চিমে পুরাতন সুরমা বোলাই এবং পূর্বে সিলেট-কাকটাই গ্রামীণ সড়ক দ্বারা পরিবেষ্টিত। প্রকল্পটি সিলেট, সুনামগঞ্জ, মৌলভীবাজার, হবিগঞ্জ ও কিশোরগঞ্জ জেলায় গ্রস ৩ লাখ ৩৫ হাজার ৬০০ হেক্টর এলাকাব্যাপী বিস্তৃত। এই প্রকল্প গ্রহণ করা হয় ২০১১-১২ অর্থবছরে।  ৬ শত  ৯ কোটি ৮৩ লাখ ৩১ হাজার টাকার এই প্রকল্প অর্থের অভাভে শেষ করা যাচ্ছে না বলে সংশ্øিষ্ট সূত্রে জানা গেছে। ২০১৪-১৫ অর্থবছর পর্যন্ত অর্ধের অর্থ বরাদ্দ ও খরচ করার পর আর কোন বরাদ্দ নেই।  বাংলাদেশের হাওর ও জলাভূমি উন্নয়ন বোর্ড কর্তৃক ৩টি উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়িত হয়েছে। হাওর উন্নয়ন মহাপরিকল্পনা প্রস্তুত এবং হাওর ও জলাভূমির জন্য ডাটাবেস উন্নয়ন প্রকল্প : “হাওর উন্নয়ন মহাপরিকল্পনা” বাংলাদেশের উত্তর পূর্বাঞ্চলের সুনামগঞ্জ, সিলেট, মৌলভীবাজার, হবিগঞ্জ,বি,বাড়ীয়া, কিশোরগঞ্জ ও নেত্রকোনা  ৭ টি জেলার ২.০ কোটি জনগণের উন্নয়ন চাহিদার ভিত্তিতে প্রণীত হয়েছে। এ অঞ্চলেল সম্ভাব্য সকল ক্ষেত্রে সমভাবে সমন্বিত টেকসই উন্নয়নের লক্ষে ১৭টি উন্নয়ন ক্ষেত্রে ১৫৪টি প্রকল্প চিহ্নিত করা হয়েছে। বাংলাদেশ সরকারের ১৬টি মন্ত্রণালয়ের ৩৮টি সরকারী এজেন্সী/বিভাগ উক্ত মহাপরিকল্পনায় বর্ণিত প্রকল্পগুলো স্বল্প, মধ্যম ও দীর্ঘ মেয়াদে বস্তবায়নে উদ্যোগ গ্রহণ করছে। দেশের উত্তর পূর্বাঞ্চলের ৭টি হাওর জেলার জনগণের উন্নয়ন চাহিদার ভিত্তিতে “হাওর মহাপরিকল্পনা” প্রণীত হয়েছে । এ অঞ্চলের সম্ভাব্য সকল ক্ষেত্রে সমভাবে সমন্বিত টেকসই উন্নয়নের লক্ষ্যে ১৭টি উন্নয়ন ক্ষেত্রে ১৫৪টি প্রকল্প চিহ্নিত করা হয়েছে। বাংলাদেশ সরকারের ১৬টি মন্ত্রণালয়ের ৩৮টি সরকারী এজেন্সী/বিভাগ উক্ত মহাপকিল্পনায় বর্ণিত প্রকল্পগুলো স্বল্প, মধ্যম ও দীর্ঘ মেয়াদে বাস্তবয়নে উদ্যোগ গ্রহণ করছে। উক্ত মহাপরিকল্পনার আলোকে ইতোমধ্যে বিভিন্ন সংস্থা নিম্নোক্ত ১৫টি প্রকল্প কার্যক্রম বাস্তবায়ন করছে এবং আরও ১১ টি প্রকল্প প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। বোর্ড সূত্রে আরো জানা যায়, স্বল্প, মধ্য ও দীর্ঘ মেয়াদী ১৭৬ টি হাওয়ে ১৫৪ টি প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে। আর প্রকল্প ব্যয় ধরা হয়েছে ২ হাজার ৮ কোটি টাকার বেশি। স্বল্প মেয়াদী প্রকল্প গুলো ২০১২-১৩ থেকে ২০১৬-১৭ অর্থবছরে শেষ হওয়ার কথা। মধ্যমেয়াদী প্রকল্প ২০১৭-১৮ থেকে ২০২১-২২ অর্থবছরে আর দীর্ঘ মেয়াদী প্রকল্প গুলো ২০২২-২৩ থেকে ২০৩১-৩২ অর্থবছরে শেষ হবে। সূত্রে আরো জানা যায়, হাওর অঞ্চলের বন্যা ব্যাবস্থাপনা ও জীবন যাত্রার মান উন্নয়ন প্রকল্প, ( অর্থায়নে, বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড অংশ)। কিশোরগঞ্জ, হবিগঞ্জ, বি,বাড়ীয়া, সুনামগঞ্জ ও নেত্রকোনা জেলার ২৯ টি হাওরে বন্যা ব্যবস্থাপনা  ও কৃষিসহ বিভিন্ন ভাবে আয়বৃদ্ধি কার্যক্রমের মাধ্যমে জীবনমান উন্নয়ন এ প্রকল্পের উদ্দেশ্য। বাস্তবায়নকাল : ২০১৪-২০২২ প্রাক্কলিত ব্যয়:  ৯৯৩ কোটি ৭২ লাখ টাকা,  এই মহা পরিকল্পনা এপর্যন্ত সাড়ে ৫ শতাংশ বাস্তবায়ন হয়েছে। বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড আগাম বন্যা প্রতিরোধ প্রকল্প গ্রহণ করেছে। ৫২ টি হাওরে আগাম বন্যা নিয়ন্ত্রণে বাঁধ নির্মাণ ও মেরামত করার ফলে ২লাখ ৮৯ হাজার ৯১১ হে. জমির বোরো ফসল আগাম বন্যার কবল হতে রক্ষা পাবে।  প্রকল্পের মেয়াদ আরও ২ বৎসর সময় বৃদ্ধির জন্য একনেক সভায় উপস্থাপনের প্রস্তুতি চলছে। বাস্তবায়নকাল : ২০১১-২০১৬ । প্রাক্কলিত ব্যয় ৭০৪ কোটি ৭ লাখ টাকার কিছু বেশি।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন