পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
মুহাম্মদ আবু মুসা, জয়পুরহাট থেকে : জয়পুরহাটের আক্কেলপুর উপজেলা শ্রীকৃষ্টপুর গ্রামে প্রায় ৪০ বছর যাবৎ আলুর পাপর তৈরির ব্যবসা করে ওই গ্রামের প্রায় চার শতাধিক পরিবার স্বাবলম্বী হয়েছে। নারীরা সংসারের কাজের ফাঁকে আলুর পাপর তৈরি করে সংসারে সাজছন্দ এনেছেন। মাঘ মাস থেকে শুরু করে চৈত্র মাস পর্যন্ত আবহাওয়া ও রোদ ভাল থাকাই এই তিন মাস আলুর পাপর তৈরি করা হয়। নারীরা সংসারের সব কাজের ফাঁকে এই ব্যবসা করে সংসারের অভাব দূর করছেন। বাজার থেকে ৪ শ’টাকা প্রতি মন আলুতে ১৬০-১৭০ টাকা খরচ হয়। মাত্র দু’দিনে এই আলুর পাপর রদে শুকিয়ে বিক্রয়ের জন্য প্রস্তুত করা হয়। হাতে তৈরি করা আলুর পাপর বাজারে ব্যাপক চাহিদা থাকায় ঢাকা-চট্রগ্রাম সহ দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে ব্যবসায়ীরা শ্রীকৃষ্টপুর গ্রামে এসে আলুর পাপর কিনেন। প্রতি মণ আলুর পাপরের মূল্য ৪ হাজার টাকা। বাজার মূল্য ভাল থাকায় লোকসান গুনতে হয় না। সরোজমিনে শ্রীকৃষ্টপুর গ্রামে গিয়ে দেখা যায় প্রায় চার শতাধিক পরিবারের নারী-পুরুষেরা আলুর পাপর তৈরির কাজে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন। কেউ আলু সিদ্ধ করছেন, কেউ আলু কাটছেন, আবার কেউ কাটা আলুর পাপর গুলো রোদে শুকানোর জন্য ছালার উপর বিছিয়ে দিচ্ছেন । বাজার থেকে (ক্যাটিনাল, গেনিলা,ডায়মন) আলু ক্রয় করে এনে সে আলুগুলো সিদ্ধ করা হয় তার পর আলু গুলো পাতলা করে কেটে রোদে শুকিয়ে তৈরি হচ্ছে পাপর। সেই শুকনো আলুর পাপর গুলো বাজারে বিক্রি করে লাভবান হচ্ছেন এই গ্রামের পরিবার গুলো। স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে সারাবছর আলুর পাপর গুলো ঢাকা, চট্টগ্রাম, রাজশাহী সহ দেশের বিভিন্ন জেলায় সরবরাহ করা হয়। এই আলুর পাপর তৈরি করতে একটু পরিশ্রম বেশি হলেও বাজার ভাল থাকায় লোকসানের মুখ দেখা হয়নি আজ পর্যন্ত। যেসব ব্যবসায়ীর পুঁজি বেশি তারা বেশি করে আলু কিনে পাপর সংরক্ষণ করেন। কিন্তু গ্রামের অধিকাংশ পরিবারের আলু কিনে সংরক্ষণ করার সামর্থ্য নেই। শ্রীকৃষ্টপুর গ্রামের আলুর পাপর ব্যবসায়ী রফিকুল ইসলাম বলেন, পাঁচ মণ আলু সিদ্ধ করে কেটে সেগুলো রোদে শুকিয়ে এক মণ শুকনো পাপর তৈরি করা যায়। এক মণ শুকনো পাপর তৈরি করতে ১৫’শ টাকা থেকে ২ হাজার টাকা খরচ হয়। সময় লাগে দুই দিন। আর এক মণ আলুর পাপর বাজারে বিক্রি হয় ৪ হাজার টাকায়। দুই দিনে লাভ হয় দেড় হাজার টাকার মতো। বাপ দাদার এ ব্যবসা এখনো আমরা ধরে আছি। শ্রীকৃষ্টপুর গ্রামের আমেনা খাতুন বলেন,আমরা গরীব মানুষ সংসারের সব কাজ শেষে করে অবসর সময়ে আলু সিদ্ধ করে তা রদে শুকিয়ে পাপর তৈরি করে বাজারে বিক্রি করে ভালয় লাভ হয়। কিন্তু পুজি বেশী না থাকায় বেশী করে আলু কিনতে পারিনা। সরকার যদি সহজ কিস্তিতে ঋনের ব্যাবস্থ্যা করলে আমাদের মতো গরীব মানুষেরা এই ব্যবসা করে লাভবান হবে। আক্কেলপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আকতারুজ্জামান বলেন, শ্রীকৃষ্টপুর গ্রামের অধিকাংশ মহিলা সংসারের কাজের ফাকে আলুর পাপর তৈরি করে সাবলম্বী হচ্ছে। ব্যবসায়ীরা পাপর তৈরির জন্য কৃষকের কাছ থেকে বড় বড় আলু বাজার দরের চেয়ে বেশী দামে কিনে থাকেন এতে কৃষকেরা আলুর নয্য মুল্য পাচ্ছেন। যদি কেউ আলুর পাপর তৈরির ব্যাবসার জন্য ঋন নিতে চায় তাহলে কৃষি অফিস থেকে সর্বাত্তক সহযোগীতা করা হবে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।