ইভিএম-এ ভোট কেন?
আগামী জাতীয় নির্বাচনে ইভিএম-এ ১৫০ আসনে ভোট গ্রহণের পরিকল্পনার কথা জানিয়েছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার। কাকতালীয় কিনা জানি না, ১৫০ সংখ্যাটা আমাদের এর আগে চিনিয়েছিলেন রকিবুল
মো: ওসমান গনি : অতি বৃষ্টি আর নদ-নদীর পানি বৃদ্ধির কারণে হাওর এলাকার মানুষের জীবনযাত্রার একবারে বেহালদশা। শত চেষ্টা করেও কোনভাবেই রক্ষা করা গেল না ফসলাদি। ফসলাদি শেষ হওয়ার পর ধ্বংস হয়েছে গবাদিপশু, হাঁস ও মাছ। ক্ষতিগ্রস্ত হওয়া কৃষকদের অনেকের আশা ছিল ধান শেষ হয়ে গেছে, অন্তত পক্ষে মাছ ও গবাদিপশু লালনপালন করে কোনো রকমে দিন কাটানো যাবে। তাদের সে আসাও শেষ হয়ে গেছে। সেখানকার ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকরা দায়ী করেছে সরকারকে। কারণ হাওর অঞ্চলের বাঁধ সঠিকভাবে না হওয়ার কারণে এমনটা ঘটেছে। আগ থেকে যদি হাওরের বাঁধ শক্ত করে নির্মাণ করা হতো তাহলে হয়তো এ ধরনের বিপর্যয় ঘটতো না।
বন্যাকবলিত হাওরাঞ্চলের কৃষকদের একের পর এক দুর্যোগ মোকাবেলা করতে হচ্ছে। প্রথমে বিনষ্ট হয়েছে ধান। এরপর পানিতে তলিয়ে যাওয়া ধান পচে মৎস্য ভান্ডারখ্যাত হাওর-নদীর মাছ ও হাঁস মরে ভেসে উঠছে। পানি দূষিত হয়ে দুর্গন্ধ ছড়িয়ে পড়ছে বাতাসে। পরিবেশ দূষণে এখন জনস্বাস্থ্য হুমকিতে পড়েছে। বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হচ্ছে হাওর এলাকার মানুষ। এদিকে সরকারের পক্ষ থেকে পর্যায়ক্রমে হতদিরদ্র কৃষকদের মধ্যে ১৫ কেজি করে চাল বিতরণ করা হলেও বেকায়দায় মধ্য ও উচ্চবিত্ত কৃষক। ত্রাণের সারিবদ্ধ লাইনে দাঁড়িয়ে তারা তা গ্রহণ করতে পারছেন না। ইতোমধ্যে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদসহ সরকারের কয়েক মন্ত্রী হাওর এলাকা পরিদর্শন করেছেন। তারা ক্ষতিগ্রস্তদের নানা আশ্বাসও দিয়েছেন। তবে কৃষকদের সাফ বক্তব্য, যাদের কারণে প্রতি বছর হাওরের বাঁধ ভেঙে ফসল তলিয়ে যাচ্ছে, এ দুর্নীতিবাজদের কঠোর শাস্তি দিতে হবে। কৃষকদের মধ্যে যখন এমন দাবি ও হাহাকার, ঠিক এরইমধ্যে জনসম্মুখে বিতর্কিত বক্তব্য দিয়ে মানুষকে ক্ষেপিয়ে দিয়েছেন দুর্যোগ ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব শাহ কামাল।
এই মুহূর্তে ক্ষতিগ্রস্ত হাওরবাসীর সাহায্যার্থে সরকারের পাশাপাশি দেশের বিত্তবান লোকদের ও এগিয়ে আসতে হবে। সরকারিভাবে তাদের জন্য যে সাহায্যের ঘোষণা দেয়া হয়েছে তা প্রয়োজনের তুলনায় খুবই নগণ্য। সরকারের এই সাহায্যে কোনভাবে হাওর এলাকার ক্ষতিগ্রস্ত লোকজন চলতে পারবে না। এ ক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছে মধ্য ও উচ্চবিত্ত পরিবারের লোকজন। তারা তাদের মানসম্মানের ভয়ে লাইনে দাঁড়িয়ে সরকারি সাহায্য গ্রহণ করতে পারছে না। যার কারণে তারা বড় ধরনের সমস্যায় আছে। তাদের জন্য আলাদা কোন স্পেশাল বরাদ্দ করা সরকারের উচিত বলে দেশের বিজ্ঞমহল মনে করেন।
লেখক : সাংবাদিক ও কলামিস্ট
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।