Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

সংবিধানেই দায়িত্ব নির্দিষ্ট আছে

নির্বাহী-বিচার-আইন বিভাগ প্রসঙ্গে ড. কামাল হোসেন

| প্রকাশের সময় : ৩০ এপ্রিল, ২০১৭, ১২:০০ এএম

স্টাফ রিপোর্টার : আন্তর্জাতিক খ্যাতি সম্পন্ন আইনজীবী সংবিধান বিশেষজ্ঞ ড. কামাল বলেছেন, নির্বাহী বিভাগ, বিচার বিভাগ ও আইন বিভাগের সমন্বয়ে কাজ হয়। সংবিধান অনুযায়ী সবারই নির্দিষ্ট কাজ আছে। লক্ষ্য অর্জনে সে ব্যাপারে প্রতিষ্ঠানগুলো গঠনমূলক ভূমিকা রাখবে। এ নিয়ে কোনো বিতর্কের অবকাশ নেই। মাঝেমধ্যে কোন দ্ব›দ্ব এখানে সৃষ্টি হয়। তা আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে সুরাহা অবশ্যই হওয়া উচিত।
আমি মনে করি এটাকে নিয়ে কোনো ধরনের সংকট করা উচিত নয় বা সংকট সৃষ্টি হবেও বা কেন।’ নির্বাহী বিভাগ বিচার বিভাগকে ভালো চোখে দেখছে না বলে প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহা মন্তব্যের প্রেক্ষিতে সরকারের পক্ষ থেকেও এ বিষয়ে বক্তব্য আসা প্রসঙ্গে তিনি এমন্তব্য। তিনি হাওরে বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোকে পাল্টাপাল্টি দোষারোপ না করে সংকট মোকাবিলার জন্য দরকার জাতীয় ঐক্য গড়ে তোলার আহŸান জানান। গতকাল জাতীয় প্রেসক্লাবে ‘দুর্যোগপূর্ণ হাওরবাসীর পাশে দাঁড়ান’ শীর্ষক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন। সংবাদ সম্মেলনে সরেজমিন বন্যাদুর্গত হাওরাঞ্চল পরিদর্শন করে সার্বিক অবস্থা নিয়ে তৈরি একটি প্রতিবেদন তুলে ধরেন গণফোরামের প্রেসিডিয়াম সদস্য তবারক হোসেন।
উজানের ভারত থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢল ও অতিবৃষ্টিতে গত ২৯ মার্চ সুনামগঞ্জ, নেত্রকোনা, কিশোরগঞ্জ, মৌলভীবাজার, হবিগঞ্জ ও সিলেটের হাওর অঞ্চল বন্যায় প্লাবিত হয়। সরকারি হিসাবে বন্যায় প্রায় দুই লাখ হেক্টর জমির বোরো ধান সম্পূর্ণ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এ ছাড়া এক হাজার ৭৬ টন মাছ মারা গেছে, হাঁস মারা গেছে তিন হাজার ৮৪৪টি। হাওরের পানিতে ভারত থেকে ভেসে আসা ইউরেনিয়ামের কারণে মাছ মারা গেছে বলে দাবি করেছে বিএনপি। তবে সরকারের পক্ষ থেকে তা নাকচ করে দিয়ে বলা হয়েছে, হাওরের পানিতে ইউরেনিয়ামের অপপ্রচার চালিয়ে বিএনপি মানুষকে বিভ্রান্ত করছে। রাজনৈতিক দলগুলোর এ ধরনের পাল্টাপাল্টি বক্তব্যের বিষয়ে জানতে চাইলে ড. কামাল হোসেন বলেন, এটা একটা জাতীয় সংকট। জাতীয় সংকট মোকাবিলার জন্য দরকার জাতীয় ঐক্য। সকলে এটাকে দলীয় দৃষ্টিভঙ্গি থেকে বিচার না করে পাল্টাপাল্টি দোষারোপ না করে সমস্যা চিহ্নিত করা দরকার। সব তথ্য একত্র করা দরকার। সব ধরনের গঠনমূলক প্রস্তাব সামনে আনা দরকার। মানসিকতা এমন হওয়া দরকার, চলেন আমরা কোনো দলীয় পাল্টাপাল্টি দোষারোপ না করে আসুন সবাই মিলে কীভাবে ক্ষতিগ্রস্ত মানুষকে বাঁচানো যায়।
গণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থায় পাল্টাপাল্টি বক্তব্য হয়ে থাকে জানিয়ে গণফোরাম সভাপতি বলেন, জাতীয় সঙ্কট মোকাবিলায় তো পাল্টাপাল্টি হওয়ার কথা নয়। ঐক্যবদ্ধ হয়ে গঠনমূলক প্রস্তাবগুলো এনে কীভাবে সমন্বয় করে কাজ করা যায় অবশ্যই সে বিষয়ে গুরুত্ব দেয়া উচিত। এক প্রশ্নের জবাবে গণফোরামের এই সভাপতি বলেন, অস্বীকার করার কোনো উপায় নেই যে, দুর্নীতি সমাজকে অনেক ক্ষতি করছে। দুর্নীতির কারণে যে কাজটা পাওয়া উচিত সেই কাজটা আমরা পাচ্ছি না। দুর্নীতির কারণে কর্মসূচি বাস্তবায়ন বিলম্বিত হয়। আমাদের শাসনব্যবস্থার মধ্যে জবাবদিহিতার প্রয়োজন আছে, রাজনীতির মধ্যেও।
ড. কামাল হোসেন বলেন, বন্যায় আট লাখ হেক্টর জমির ধান পানিতে তলিয়ে গেছে। ২৪ লক্ষাধিক কৃষক পরিবারের স্বপ্ন ভেঙে চুরমার হয়ে গেছে। সরকারি হিসাবে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ চার হাজার ৬২৪ কোটি টাকা হলেও বাস্তবে এ পরিমাণ আরও অনেক বেশি। বিভিন্ন মহল মাছের ব্যাপক মড়কের বিষয়ে বিভিন্ন কারণের কথা উল্লেখ করেছে। সরকার এর প্রকৃত কারণ জানায়নি। ত্রাণ দিতে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের তালিকা করায় অনিয়ম হচ্ছে দাবি করে কামাল হোসেন বলেন, প্রকৃত ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের প্রাধান্য না দিয়ে উপজেলাওয়ারি জনসংখ্যার ভিত্তিতে তালিকা করে ত্রাণ মন্ত্রণালয়ে পাঠানোর খবনে হতাশ ফসলহারা কৃষক। তিনি বলেন, হাওরবেষ্টিত জেলাগুলোকে দুর্গত এলাকা ঘোষণা করা হোক। হাওরে বাঁধ নির্মাণ ও সংরক্ষণের সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়ে তিনি বলেন, হাওরের জলমহালের ইজারা বাতিল করে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের সেখানে অবাধে মাছ ধরার সুযোগ দিতে হবে। গবাদিপশুর খাদ্য সরবরাহের ব্যবস্থা করতে হবে।



 

Show all comments
  • Mohammed Shah Alam Khan ৩০ এপ্রিল, ২০১৭, ১:৪৫ এএম says : 0
    ডঃ কামাল হোসেন একজন আন্তর্জাতিকভাবে সুপ্রতিষ্ঠিত আইনজীবী কিন্তু রজানীতিতে তিনি কেন যেন হেরে গেলেন এটা সবার চোখে এক নয়। আমার দৃষ্টিতে তিনি রাংলাদেশের রজনীতির সাথে নিজেকে মিশাতে গিয়ে এক নিমিষে আস্তাকুড়ে নিক্ষিপ্ত হয়েছেন। একই ভাবে আরো একজন ডঃ বি চৌধুরীরও পতন হয়েছে। আমি খুবই খুশী যে, ভাল মানুষের মধ্যে অন্তত একজন দেশের রাজনীতির সাথে নিজেকে খাপখাইয়ে যায়গায় পৌছানোর পর তার যে নীতি সেটাকে আস্তে আস্তে সামনের দিকে আনছেন তিনি হলেন আমাদের প্রান প্রিয় নেত্রী জাতীর জনকের যোগ্য উত্তরসুরী জননেত্রী শেখ হাসিনা। আমি কামাল সাহেবকে ধন্যবাদ জানাই তিনি সুযোগমত একটা কথা বলেছেন সেটা হচ্ছে জননেত্রী তিনি বিভাগ নিয়ে যে কথা বলেছেন সেটাকেই সমর্থ দিয়ে সংবিধান দেখিয়ে দিয়েছেন। এবার তথাকথিত বুদ্ধিজীবিরা নেত্রী হসিনাকে নিয়ে কিছু বলার আগে দু’বার ভেবে নিবে। এরপর তিনি বর্তমান দেশের দুরবস্থার কথা মানে হাওর নিয়ে যে বক্তব্য দিয়েছেন এটাই জাতীয় সমস্যা সমাধানের প্রকৃত পথ বলে আমি মনে করি। কিন্তু এখানে একটা ইগো কাজ করছে সেটা হচ্ছে বিএনপি এখন সীল মারা দল তাই তাদের সাথে একত্রে এএল কাজ করতে চান না। এজন্য এএলকে দোষ দেয়া যায়না এটাই সত্য আবার ............................. এখন দেশের হাওর অঞ্চলের কি অবস্থা হবে এটাই এখন ভাববার বিষয়…… কিভাবে এদেরকে বাঁচিয়ে রাখা যায় এবং সামনে যাতে এই রকম আবস্থার সৃষ্টি না হয় তারজন্য ব্যবস্থা গ্রহণ থেকে শুরু করে বিপদ গ্রস্থরা যাতে এই পানি সরার পর নিজেদেরকে সামলিয়ে আবার উঠে দাঁড়াতে পারে তারও ব্যবস্থা গ্রহণ করা দরকার। আমি আশ্বস্ত কারন প্রধানমন্ত্রী নিজেই এখন যাচ্ছেন দূর্গত এলাকা পরিদর্শনে কাজেই তিনি এখন সঠিক সিদ্ধান্ত নেবেন এটা আমার বিশ্বাস। আল্লাহ্‌ আমার ধারনার সত্য রূপ দিক এটাই আল্লাহ্‌র কাছে চাওয়া। আমীন
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ