পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
স্টাফ রিপোর্টার : নবম ও দশম শ্রেণির ১২টি বই পরিমার্জন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। পাঠ্যবই সহজবোধ্য করতেই এই উদ্যোগ নেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ। একই মানের উত্তর লিখে শিক্ষার্থীরা যেন একই ধরনের নম্বর পায় সে বিষয়েও একটি গাইডলাইন তৈরির কথা তিনি জানিয়েছেন। মাধ্যমিক শিক্ষার মানোন্নয়নে গতকাল (বৃহস্পতিবার) শিক্ষাবিদদের সঙ্গে এক বৈঠকের পর মন্ত্রী এসব কথা বলেন।
তিনি জানান, বাংলা সাহিত্য, ইংলিশ ফর টুডে, বাংলাদেশ ও বিশ্ব পরিচয়, বাংলাদেশের ইতিহাস ও বিশ্ব সভ্যতা, গণিত, উচ্চতর গণিত, বিজ্ঞান, পদার্থ বিজ্ঞান, রসায়ন, জীববিজ্ঞান, অর্থনীতি ও হিসাব বিজ্ঞান বই আরো ‘উন্নত, মার্জিত করে, আরো সহজবোধ্য করে’ ছেলে-মেয়েদের হাতে দেয়া হবে। আমাদের পাঠ্যবই নিয়ে একটা বড় অভিযোগ, এটার মান সম্পর্কে, বোঝা সম্পর্কে। সেখানে আমরা ১২টা বইকে চিহ্নিত করেছি, যেগুলোতে কাজ হচ্ছে। সেগুলোকে আরো সহজ ভাষায় সুন্দরভাবে উপস্থাপন করা হবে। যাতে শিক্ষার্থীরা আরো সুন্দরভাবে শিখতে পারে বা পড়ে বুঝতে পারে। নাহিদ জানান, পরিমার্জনে বিজ্ঞানের বইগুলোতে চার রঙা ছবি ব্যবহারের চেষ্টা করা হবে। একই ব্যবস্থা হবে অর্থনীতি বইয়ের ক্ষেত্রে।
পাবলিক পরীক্ষায় শিক্ষার্থীদের ‘ঢালাও নম্বর দেয়ার নির্দেশনা’ থাকার যে অভিযোগ রয়েছে তা নাকচ করে মন্ত্রী বলেন, অনেকে মনে করছেন, আমরা এখান থেকে গাইড করছি কিভাবে নম্বর দেবে। মোটেই না। নম্বর দেয়ার ব্যাপারে আমরা একটা গবেষণা করেছি। দেখা যাচ্ছে, দুইজন (পরীক্ষক একই উত্তরপত্রে) নম্বর দিচ্ছেন, পার্থক্য অনেক হয়ে যাচ্ছে। সেখানে আমরা একটা গাইডলাইন তৈরি করেছি। খাতা নেয়ার সময় একটা মডেল উত্তর থাকবে, গাইডলাইনও থাকবে যে, এ রকম লিখলে এ রকম নম্বর পাবে। নম্বর বেশি দেন, কম দেন, এ রকম গাইডলাইন দেয়া হচ্ছে না। সঠিকভাবে যেন দেন, সেটা বলা হচ্ছে। শিক্ষকতার অন্য সব বিষয় নিয়ে একটি ‘শিক্ষক-গাইডলাইন’ ইতোমধ্যে করে দেয়া হয়েছে বলে জানান মন্ত্রী।
নাহিদ বলেন, প্রশ্নপত্র ফাঁস আটকাতে বিজি প্রেস, পরিবহন ও বিতরণের ক্ষেত্রে সতর্কতার পর এখন দেখা যাচ্ছে, শেষ ধাপে এসে ‘কিছু অসৎ শিক্ষকের কারণে’ ফাঁস হয়ে যাচ্ছে। কিছু কোচিং সেন্টারও এর সঙ্গে যুক্ত। অনেক লোককে ইতোমধ্যে গ্রেফতার করা হয়েছে, যাদের মধ্যে অধ্যক্ষ, প্রধান শিক্ষক ও শিক্ষকও রয়েছেন জানিয়ে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, এটা অব্যাহত থাকবে এবং কাউকে ছাড় দেয়া হবে না। ক্লাসরুমে এসে উত্তর বলে দিচ্ছেন, এ ধরনের শিক্ষক আমরা রাখব না। সেটা করার প্রক্রিয়া চালিয়ে যাচ্ছি। দুঃখের বিষয় হচ্ছে, অভিভাবকরাও সন্তানের জন্য প্রশ্ন খোঁজেন। তারা সন্তানকে কুশিক্ষা দিচ্ছেন, নৈতিকতাকে ধ্বংস করে দিচ্ছেন। নাহিদ বলেন, ছেলেমেয়েদের ভুল শিক্ষা না দেয়ার বিষয়ে একটি সামাজিক আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে। এক সময় সে বাবা-মার মর্যাদাকে ঘৃণা করবে। শিক্ষকতাকে ঘৃণা করবে। যারা দায়ী, তাদের বিরুদ্ধে আমরা ব্যবস্থা নেব। আমরা সার্বিকভাবে আমাদের শিক্ষার সমস্যাকে সমাধান করে আরো উন্নতমানের সহজ শিক্ষা দেয়ার ব্যবস্থা করব। স্কুলে শিক্ষার্থীদের পাঠ্যপুস্তকের বোঝা কমিয়ে আনার চেষ্টা করার কথাও বলেন নাহিদ। আমাদের পঞ্চম শ্রেণিতে ৫-৬টা বই পড়ে। হঠাৎ করেই ষষ্ঠ শ্রেণিতে ১৩টা বই হয়ে যায়। এটা আমরা চাইলেই কালকে বদলে দিতে পারব না। এর ওপর কাজ চলছে। আলাদা কমিটি আছে। কিভাবে এই পর্যায়ে সঠিক জ্ঞান দেয়া যাবে- তারা সে বিষয়ে কাজ করছেন। কিভাবে শিক্ষার্থীদের বোঝা কমিয়ে আনতে পারি- কমিটি সে বিষয়ে অনেক দূর অগ্রসর হয়েছে। আমাদের পরীক্ষা লম্বা হয়ে যায়। অনেক বিষয় বেড়ে গেছে। আমরা কমিয়ে আনতে কাজ করছি। এর অংশ হিসেবে শারীরিক শিক্ষা, ড্রয়িংসহ তিনটি বিষয়ে আর পাবলিক পরীক্ষা না নিয়ে ‘পারফরম্যান্সভিত্তিক ধারাবাহিক মূল্যায়ন’ করা হবে। এ সময় ওই সভায় উপস্থিত ছিলেন অর্থনীতিবিদ মোহাম্মদ ফরাসউদ্দিন, গণস্বাক্ষরতা অভিযানের নির্বাহী পরিচালক রাশেদা কে চৌধুরী, বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) প্রফেসর মোহাম্মদ কায়কোবাদ, শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর মুহম্মদ জাফর ইকবাল, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতির প্রফেসর এম এম আকাশ প্রমুখ।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।