Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

ইউরেনিয়াম নিয়ে যথেষ্ট পরীক্ষা হয়নি

সুজনের সংবাদ সম্মেলনে দাবি

| প্রকাশের সময় : ২৭ এপ্রিল, ২০১৭, ১২:০০ এএম

স্টাফ রিপোর্টার : সুনামগঞ্জের হাওরের পানিতে ইউরেনিয়াম আছে কি-না তা নির্ণয়ের জন্য যথেষ্ট পরীক্ষা করা হয়নি দাবি করে যথাযথ পরীক্ষা করে সরকারকে সে রিপোর্ট জনগণের সামনে প্রকাশ করার দাবি জানিয়েছেন বিশিষ্ট নাগরিকরা। গতকাল জাতীয় প্রেসক্লাবে হাওর এলাকার পরিস্থিতি নিয়ে সুশাসনের জন্য নাগরিক সুজনের আয়োজনে সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি জানান তারা বক্তারা। এ সময় ইউরোনিয়াম নিয়ে বিএনপির বক্তব্যের সমালোচনা ও করেন তারা। সংবাদ সম্মেলনে ক্ষতিগ্রস্ত হাওর এলাকাকে দুর্গত এলাকা ঘোষণার দাবি জানানো হয়।
বাংলাদেশ পরিবেশ আইনজীবী সমিতির প্রধান নির্বাহী সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, শুধু পানি দেখে বলে দিলাম বা পানি এনে একদিনে বলে দিলাম ‘ইউরোনিয়াম নাই’ সেটা না করে আরেকটু সময় নিয়ে যে গবাদি পশুগুলো মারা গেছে, যে পোল্ট্রি মারা গেছে তাদের উপর কিছু রিপোর্ট করে জনসম্মুক্ষে নিয়ে আসলেও মানুষ আশ্বস্ত হত। ইউরেনিয়াম এবং কয়লাখনি বর্জনে যে নিউজগুলো সরকার করেছে সেগুলো জনসম্মুখে প্রকাশ করা হউক।
গবেষক ও কলামিস্ট সৈয়দ আবুল মকসুদ বলেছেন, ভারত থেকে যখন এসেছে এই ইউরেনিয়াম। সুতরাং বিএনপি মনে করতে পারে যে তারা একটি ইস্যু পেয়ে গেছে কিন্তু তারাই বা কি করেছে ? বিরোধী দল তো বন্যার্তদের পাশে এসে দাঁড়ায় নাই। তার চেয়ে বড় কথা হলো যে, সরকারকে তাৎক্ষণিকভাবে স্বল্পমেয়াদী, মধ্যমেয়াদী এবং দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা নিতে হবে তা না হলে এই ধরনের বিপর্যয় ভবিষ্যতে ঠেকানো যাবে না।
এর আগের দিন সাংবাদিক গোলাম মোর্তোজার ফেসবুক স্ট্যাটাস এ বলেন, ‘হাওরের পানিতে ইউরেনিয়াম তেজস্ক্রিয়তা নেই’- প্রমাণ করার জন্যে সরকার যত ব্যস্ত হয়েছেন, তারচেয়ে বেশি ব্যস্ত হওয়া প্রয়োজন ছিল পানিতে বিষাক্ত কী আছে, তা জানা। ইউরেনিয়াম তেজস্ক্রিয়তার কথা কেউ বিশেষ উদ্দেশ্য নিয়ে প্রচার করে নি। আশঙ্কা প্রকাশ করা হয়েছিল। সেই আশঙ্কার কিছু বাস্তব ভিত্তি ছিল। মেঘালয়ের কিছু নদীর পানি ইউরেনিয়াম তেজস্ক্রিয়তায় বিষাক্ত হয়ে ওঠার অভিযোগ আলোচনায় আসে ২০১২ সালে। মেঘালয়ের নদীর মাছ মরেছে, তা নিয়ে আন্দোলন হয়েছে। সেখানে আন্দোলন এখনও আছে। মেঘালয়ে বেসরকারি মালিকানায় অনেক খনি খনন করা হয়। পরিবেশবিদদের আন্দোলনের প্রেক্ষিতে অনেক খনি আংশিক খনন করে ফেলে রাখা হয়েছে। যদিও ইউরেনিয়ামের খনি বেসরকারি মালিকানায় খনন করা যায় না। আংশিক খনন করা খনির তালিকায় কয়লা, চুনাপাথর, ডলোমাইটসহ অনেক কিছু আছে। পাহাড়ি ঢলের সঙ্গে সেসব খনির বিষাক্ত কোনো পদার্থ এসে, আমাদের হাওর- নদীর পানি বিষাক্ত করবে, অস্বাভাবিক কিছু না। মেঘালয়ে যখন ইউরেনিয়াম তেজস্ক্রিয়তা নিয়ে আন্দোলন শুরু হয়, বাংলাদেশের উচিত ছিল ভারতের কাছ থেকে আসল ঘটনা জানতে চাওয়া। কিছুই না করে, এখন যখন মাছ- হাঁস মারা গেল ‘ইউরেনিয়াম না ইউরেনিয়াম না’ প্রমাণ করার জন্যে অস্থির হয়ে উঠেছে সরকার। বুঝলাম ইউরেনিয়াম না, তাহলে কীসে বিষাক্ত হলো পানি? সার, কীটনাশক, ধানের গাছ পচার গল্প বিশ্বাসযাগ্য নয়। কিছু চাপা না দিয়ে, সত্যটা জানানো দরকার। পাঁচ-সাত বছর আগে সুনামগঞ্জ অঞ্চলের তাহিরপুর এলাকার আদিবাসীরা বাপাকে জানায়, ভারত থেকে পানির সঙ্গে কালো রঙ্গের বিষাক্ত পদার্থ ভেসে আসছে। বাপা এর সত্যতা পায় এবং ভারত সরকারকে চিঠি লেখে।’আমরা দেখব’- লিখে ভারত সরকার বাপার চিঠির জবাবও দিয়েছিল। বাংলাদেশ সরকারের কোনো উদ্যোগ তখনও ছিল না, এখনও নেই। সেই কালো পদার্থে বাংলাদেশের যাদুকাটা নদী ভরাট হয়ে গেছে।



 

Show all comments
  • Mohammed Shah Alam Khan ২৭ এপ্রিল, ২০১৭, ১১:১৫ পিএম says : 0
    সুশাসনের জন্য নাগরিক “সুজন” এই সংগঠনটির নীতি কোন দল ভিত্তিক হওয়া উচিৎ নয় বলে আমি মনে করি। মাত্র সেদিন বিএনপি সরাসরি আভিযোগ করেছে সুনামগঞ্জের হাওরের পানিতে ইউরেনিয়াম আছে এবং এটা এসেছে ভারত থেকে তাই সমস্ত গবাদি পশু মারা যাচ্ছে। বিএনপির মুখ বন্ধ করার জন্য সরকার তাড়াহুরা করে ইউরেনিয়াম পানিতে আছে কিনা এটা পরীক্ষা করে নিশ্চিত হয়ে বিএনপিকে জবাব দিয়েছে। এখন যদি আবার সেই রেশ ধরে সুজন বলে “সুনামগঞ্জের হাওরের পানিতে ইউরেনিয়াম আছে কি-না তা নির্ণয়ের জন্য যথেষ্ট পরীক্ষা করা হয়নি দাবি করে যথাযথ পরীক্ষা করে সরকারকে সে রিপোর্ট জনগণের সামনে প্রকাশ করার দাবি জানিয়েছে”। এখানে কথা হচ্ছে সুজন যদি মনে করে যথেষ্ট পরীক্ষা করা হয়নি তাহলে আমি মনে করি সুজনকেই এখন পরীক্ষা করে সরকারকে অভিযুক্ত করা এবং সরকারের বিরুদ্ধে ক্ষতি পুরনের মামলা করা। আমি মনে করি সুজনের মত সংগঠন এভাবে হালকা কথা বলা সঠিক নয় এটা রাজনীতিবিদদের মুখে শোভা পায়। এখন সুজন যদি বিএনপি হয় তাহলে আমার কোন প্রশ্ন নেই কিন্তু সেটা আমাদেরকে জানতে হবে সুজন কি??? তাহলে আমরা সেভাবেই সুজনের কথাকে নিব, এটাই সত্য তাই না??? কাজেই আমার অনুরোধ সুজনের প্রতি, এভাবে ফাকা কথা বলে জনগণকে দ্বিধা বিভক্ত করা ঠিক নয় এটা কোন ভাবেই গ্রহণ যোগ্য নয় আমি কি ভুল বললাম??? আল্লাহ্‌তালার নিকট প্রার্থনা তিনি যেন আমাদের বুদ্ধিজীবীদেরকে সত্য বলা ও সততার সাথে কাজ করতে ক্ষমতা দান করেন। আমীন
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ