পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
বিশেষ সংবাদদাতা : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, হেফাজতের সঙ্গে আমাদের কোনো চুক্তি হয়নি। চুক্তির প্রশ্নই ওঠে না। এ বিষয়টি নিয়ে অযথা বিতর্ক সৃষ্টির কোনো সুযোগ নেই। গত সোমবার রাতে গণভবনে আওয়ামী লীগের স্থানীয় সরকার মনোনয়ন বোর্ডের বৈঠকের শুরুতে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা হাওর এলাকার পানিতে ইউরেনিয়াম থাকার অপপ্রচার ছড়ানোর জন্য বিএনপিকে অভিযুক্ত করে বলেছেন, তারা পুরো বিষয়টি নিয়ে মিথ্যা খবর ছড়িয়ে মানুষকে বিভ্রান্ত করছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, কিছু অপপ্রচার আমরা দেখতে পাচ্ছি। আমি দেখলাম বিএনপি’র কোন একজন নেতা ভাবখানা এমন মহাবিজ্ঞানী, জ্ঞানী তিনি বলে দিলেন, ভারত থেকে ইউরেনিয়াম এসে এই হাওর অঞ্চলের মাছ মেরে ফেলছে।
তিনি বলেন, যখন এই অভিযোগটা আসল তখন কিন্তু আমরা বসে থাকিনি। বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি কমিশন থেকে বিজ্ঞানী পাঠিয়ে সেখানকার পানি পরীক্ষা করা হলো। তারা বললো সেখানকার পানিতে এরকম কিছু পাওয়া যায়নি। একথা শোনার পরেও তারা (বিএনপি) প্রেস কনফারেন্স করে একথা বলে বেড়াচ্ছে- এর মানে কি? শেখ হাসিনা বলেন, আমি বলবো, তারা যে কথাটা বলছে তার প্রমাণ নিয়ে তারা উপস্থিত হোন। তারা যদি বৈজ্ঞানিকভাবে এটা ল্যাবরেটরিতে পরীক্ষা করে দেখাতে পারে, তবে জনগণ বিশ্বাস করবে। না হলে তাদের এই মিথ্যা অপপ্রচার জনগণ কখনও মেনে নেবে না।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, যখন কোথাও এরকম বন্যা ও জলোচ্ছ¡াস হয়, তখন সেখানকার মাছ ও জলজপ্রাণী মারা যায়। সেটাও কেন মারা যাচ্ছে সে বিষয়ে আমরা খবর নিচ্ছি। কিন্তু, নানা ধরনের অপপ্রচার চালিয়ে মানুষের মধ্যে এই যে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করা এটা অবশ্যই কারো কারো চরিত্র। এক শ্রেণীর লোক আছে তারা জ্ঞান পাপী। তারা দেখে হোক না দেখে হোক উদ্দেশ্যমূলকভাবে নানা কথা বলে বেড়াবে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, তারা বলছে, আমি নাকি হেফাজতের সঙ্গে সন্ধি করে ফেলেছি। চুক্তি করে ফেলেছি। তিনি বলেন, চুক্তিটা কি করলাম। হেফাজতের সঙ্গে আমাদের তো কোন চুক্তি হয়নি। চুক্তির প্রশ্নই ওঠে না।
শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশের শিক্ষার ক্ষেত্রে কওমী মাদ্রাসার অবদান রয়েছে। এটাকে অস্বীকার করা যাবে না। দেওবন্দ যে কওমী মাদ্রাসা, যারা প্রথম ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলন শুরু করে তাদের হাতেই তৈরি, তারাই করেছিল। সেখানকার যে কারিকুলাম সেটা কিন্তু ভারত গ্রহণ করেনি। ভারতে যদি আপনারা খোঁজ নেন তাহলে দেখবেন- কোলকাতায় যেসব মাদ্রাসা আছে সেখানে হিন্দু, মুসলমান সকলেই লেখাপড়া করছে। এরকমও মাদ্রাসা আছে যেখানে ৪০ ভাগ হিন্দু শিক্ষার্থীও রয়েছে। আমাদের কওমী মাদ্রাসার শিক্ষা ৬টি বোর্ডে বিভক্ত। তাদের কারিকুলাম আলাদা। এখানে কি পড়ালেখা হচ্ছে তার খবর কেউ কোনদিন রাখেনি। তারা সেখানে ফার্সি, আরবি, উর্দু প্রভৃতি ভাষা শিখায়। পাশাপাশি অনেক মাদ্রাসায় আবার কম্পিউটারসহ অনেক কিছুই শিখাচ্ছে। দেশের ৭৫ হাজার কওমি মাদ্রাসার শিক্ষার্থী ১৪ লাখ। তাদের কারিকুলাম কী, তারা কী শিখছেন, সঠিকভাবে কেউ বলতেই পারে না। তারা দেশের কোনো প্রতিষ্ঠানে কাজ পান না, চাকরি পান না। তাদের শিক্ষার কোনো মূল্য নেই। তারা দেশে কাজ পান না, বিদেশে পান। তারা কোনো কিছু করে খেতে পারে না। এই ১৪ লাখ শিক্ষার্থীর জীবনটা কি আমরা ভাসিয়ে দেব?
প্রধানমন্ত্রী সমালোচকদের প্রতি পাল্টা প্রশ্ন ছুঁড়ে দিয়ে বলেন, তারা কী এদেশের নাগরিক নয়? তাদের জীবনের কী কোনও মূল্য নেই? তাদের কি আমরা অন্ধকারে ঠেলে রেখে দেব? তাদের কি আমরা আলোর পথ দেখাব না? তাদের কি মূল ধারায় নিয়ে আসব না? তারা যে কারিকুলামে শিক্ষা গ্রহণ করুক, যেন তারা যেন জীবিকার সুযোগ পান, নাগরিক হিসেবে তাদের যে অধিকার আছে, সেটা আমাদের সংরক্ষণ করতে হবে। সেই জায়গায়টাই আমরা একটা উদ্যোগ নিয়েছিলাম। এই উদ্যোগ বহু আগে থেকেই নিয়েছিলাম যে, তাদের কারিকুলামটা ঠিক করে দেওয়া, তাদের শিক্ষাটা যেন মানসম্মত হয়, তারা যেন সঠিক পথে শিক্ষা গ্রহণ করে জীবিকা নির্বাহে নিজের পায়ে দাঁড়াতে পারেন।
শেখ হাসিনা বলেন, ২০০৯ সালে যখন সরকার গঠন করি তখন প্রতিটি মাদ্রাসার নেতৃস্থানীয়দের নিয়ে আমি বসি। তাদের সঙ্গে আলোচনা করে তাদের ওপরই দায়িত্ব দিয়েছিলাম। দীর্ঘদিনের প্রচেষ্টার পর ৬টি কওমি মাদ্রাসা বোর্ডের সবাই এক হয়ে তারা সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। আমরা তাদের ওপর ছেড়ে দিয়েছি এবং নীতিগতভাবে তারা একটি সিদ্ধান্তে এসেছেন যে, কারিকুলামটা তারা গ্রহণ করবেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, এজন্য আমি ওলামাদের নিয়ে একটি কমিটি এবং পরে একটি কমিশন গঠন করি। তাদেরকেই দায়িত্ব দিয়ে বলি আপনারা এক জায়গায় বসে একটি সমঝোতায় আসেন। তাদেরকে সনদ দেয়ার জন্য আমরা আরবি বিশ্ববিদ্যালয়ও করে দিয়েছি। যেখান থেকে তারা সনদ পেতে পারেন।
তিনি বলেন, দীর্ঘদিনের প্রচেষ্টার পর ৬টি কওমী মাদ্রাসা বোর্ডের লোকজন এক হয়ে নীতিগতভাবে সিদ্ধান্তে এসেছেন যে তারা কারিকুলাম গ্রহণ করবেন।
শেখ হাসিনা বলেন, যখন তারা এক হওয়ার সিদ্ধান্ত নিলেন তখনই আমরা ঘোষণা দিলাম, আমরা সনদ দেব। আর তাদের কারিকুলামগুলো কেমন হবে সেটির জন্য একটি কমিটিও গঠন করে দেয়া হয়েছে। তাদের অফিসও দেয়া হয়েছে, তারা সেখানে বসে এই কারিকুলাম ঠিক করবেন। এতো দেওবন্দের কারিকুলামও তারা গ্রহণ করবেন এবং এর বাইরে আর কি কি নেবেন তা তারা ঠিক করবেন।
আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, হাইকোর্টে যে স্ট্যাচু করা হয়েছে সেটা নিয়েও কথা উঠেছে। গ্রিক গডেস অব জাস্টিস, থেমেসিস। তার স্ট্যাচু। কিন্তু গ্রিক স্ট্যাচুকে যখন শাড়ি পরিয়ে দাঁড় করিয়ে দেয়া হলো- আমি সে বিষয়টিই চিফ জাস্টিসকে বলেছিলাম।
তিনি বলেন, স্ট্যাচুতো আমাদের দেশে অনেক আছে, থাকবে। এটাতো হাজার বছরের পুরনো একটা বিষয়। হাইকোর্টের মতো জায়গায় হঠাৎ এটা স্থাপন করা হলো কেন? ঈদগাহে নামাজ পড়তে গেলে এটা কেন আড়াল করে দেয়া হলো না। আর স্ট্যাচু যখন থাকবে তখন এটাকে কেন বিকৃত করা হলো। কাজেই আমি নিজেও বলেছি এটা আমার পছন্দ না। এটা আমি চিফ জাস্টিসকে বলেছি এবং যে ভাস্কর করেছেন তাকেও বলেছি।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।