Inqilab Logo

শুক্রবার ১৪ নভেম্বর ২০২৪, ৩০ কার্তিক ১৪৩১, ১২ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

প্রধানমন্ত্রী জানলেও এলাকার গৃহহীনদের খবর জানেন না এমপিরা

তালিকা তৈরিতে সম্পৃক্তহীনতায় সংসদীয় কমিটিতে ক্ষোভ

| প্রকাশের সময় : ২৪ এপ্রিল, ২০১৭, ১:০৮ এএম

পঞ্চায়েত হাবিব : বিভিন্ন প্রাকৃতিক দুর্যোগ, নদী ভাঙন, অসময়ে বন্যায় দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলগুলোতে গৃহহীন হয়ে মানবেতর জীবন-যাপন করছে এমন নাগরিকদের নাম, পরিচয় প্রধানমন্ত্রী জানলেও তাদের কোনো খবর জানেন না স্থানীয় এমপিরা। গৃহহীনদের তালিকা তৈরিতে এলাকার এমপিদের সম্পৃক্ত না করায় এমনটি হয়েছে। স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা তালিকা করে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছেন। এর কপি গেছে প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরেও। এ নিয়ে জাতীয় সংসদের সরকারি প্রতিশ্রæতি সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটিতে ক্ষোভ ও অসন্তোষ প্রকাশ করা হয়েছে।  
জাতীয় সংসদ ভবনে গতকাল রবিবার অনুষ্ঠিত কমিটির বৈঠকে এ অসন্তোষ প্রকাশ করা হয়। কমিটির সভাপতি কাজী কেরামত আলীর সভাপতিত্বে বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন, কমিটির সদস্য অ্যাডভোকেট রহমত আলী, মো. আব্দুল মজিদ খান, মীর মোস্তাক আহমেদ রবি। এছাড়া নৌ-পরিবহন মন্ত্রণালয়ের ভারপ্রাপ্ত সচিব, জাতীয় নদী রক্ষা কমিশনের চেয়ারম্যান, বিআইডবিøউটিসির চেয়ারম্যান, বিআইডবিøউটিএর চেয়ারম্যানসহ মন্ত্রণালয় ও জাতীয় সংসদ সচিবালয়ের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন।
কমিটি সূত্রে জানা গেছে, বৈঠকে গৃহহীনদের তালিকা করে তাদের ঘর তৈরি দিতে প্রধানমন্ত্রীর দেয়া প্রতিশ্রæতি নিয়ে আলোচনা হয়। এসময় গৃহহীনদের তালিকা করার ক্ষমতা না পাওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করে নওগাঁ-২ আসনের এমপি ও জাতীয় সংসদের হুইপ শহীদুজ্জামান সরকার বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গৃহহীনদের গৃহ দেয়ার জন্য দলীয় কর্মীদের তালিকা করার নির্দেশ দিলেও তার এলাকায় তালিকা তৈরি করছেন চেয়ারম্যান-মেম্বাররা। তিনি বলেন, গৃহহীনদের ঘর দেয়ার জন্য যে তালিকা করা হচ্ছে তাতে এমপিদের নাম দেয়া বা বাদ দেয়ার কোনো সুযোগ নেই। তালিকা তৈরির জন্য চেয়ারম্যানদের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। চেয়ারম্যানরা আবার মেম্বারদের দায়িত্ব দিয়েছেন। সেই তালিকা একেক জায়গায় একেকজন বাছাই করছেন। যে কারণে এটি নিয়ে হযবরল অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। এ বিষয়ে কমিটির সভাপতি কাজী কেরামত আলী ইনকিলাবকে বলেন, গৃহহীনদের ঘর তৈরি করে দেয়ার জন্য প্রধানমন্ত্রী যে ঘোষণা দিয়েছেন, আগামী জাতীয় নির্বাচনের আগে তার ৭০ শতাংশ কভার করতে না পারলে কমিটমেন্ট রক্ষা হবে না। এর প্রভাব পড়বে নির্বাচনেও। যে কারণে এমপিরা এটি নিয়ে চিন্তিত। এর আগে ভূমি মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব জানান, গৃহহীনদের গৃহ দেয়ার জন্য গুচ্ছগ্রাম প্রকল্প চলমান রয়েছে।
সংসদ সচিবালয় জানিয়েছে, বৈঠকে আসন্ন রোজার আগে দৌলতদিয়া ফেরিঘাটে ভাঙনরোধে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ, দৌলতদিয়া ঘাটের কাজে নিয়োজিত ঠিকাদারের কাজের মান মনিটরিং করার সুপারিশ করা হয়। এছাড়া প্রতিটি নদী সার্ভে করে নদী শাসন, ড্রেজিং, ভাঙনরোধে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ এবং জাতীয় নদী রক্ষা কমিশন গঠিত জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের কমিটিতে সংশ্লিষ্ট এলাকার সংসদ সদস্যসহ জনপ্রতিনিধিদের সুপারিশ নেয়ার ব্যবস্থা করার তাগিদ দেয়া হয়। বিআইডবিøউটিসির ফেরির সংখ্যা বৃদ্ধি, ফেরিগুলো পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখা এবং আসল নাম অক্ষুণœ রাখার বিষয়ে নৌ-পরিবহন মন্ত্রণালয়কে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সুপারিশ করা হয়।






 

Show all comments
  • Nur- Muhammad ২৪ এপ্রিল, ২০১৭, ৭:০০ এএম says : 0
    জনগণের এমপি রা গৃহহীনদের তালিকা করবে, এটা ১০০% সত্য। কিন্তু আমাদের বর্তমান এমপি রা কি জনগণ কতৃক নির্বাচিত? না, তারা নির্বাচিত নয়। তাই তারা জনগণের কোন কাজ করার উপযুক্ত নয়। আর চেয়ারম্যান মেন্বার, মেয়র কমিশনার যারা জনগণ কতৃক নির্বাচিত তারা প্রায় বরখাস্ত হয়ে জেলে অথবা ভয়ে দিন কাটাছে। তারা কাজ করতে পারছে না। তাই আসুন এখন ই ভোটাদিকার নিশ্চিত করি। জনগণের কাজ জনপ্রতিনিধিদের হাতে ছেড়ে দেই। তা হলেই দেশের মঙ্গল হবে। দেশ উন্নত হবে। ধন্যবাদ। সবায়কে ধন্যবাদ।
    Total Reply(0) Reply
  • Mohammed Shah Alam Khan ২৪ এপ্রিল, ২০১৭, ৬:২৯ পিএম says : 0
    জাতীয় সংসদের সরকারি প্রতিশ্রুতি সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটিতে যে, ক্ষোভ ও অসন্তোষ প্রকাশ করেছে সেটা অবশ্যই সঠিক। তবে আমি একটা বিষয় পরিষ্কার বুঝতে পারছি যে, এখানে বলতে গেলে সব যায়গাতেই আমলারা সাংসদেরকে দূরে সরিয়ে রাখতে পছন্দ করেন। এখানে এমপি ও জাতীয় সংসদের হুইপ শহীদুজ্জামান সরকার বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গৃহহীনদের গৃহ দেয়ার জন্য দলীয় কর্মীদের তালিকা করার নির্দেশ দিলেও তার এলাকায় তালিকা তৈরি করছেন চেয়ারম্যান-মেম্বাররা। আবার ভূমি মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব জানান, গৃহহীনদের গৃহ দেয়ার জন্য গুচ্ছগ্রাম প্রকল্প চলমান রয়েছে। এতে কি প্রতীয়মান হয় না যে প্রধানমন্ত্রী যখনই কোন কথা বলেন সেটাকে সেই ভাবেই কাজে পরিণত করতে হয় এটা মনে হয় আমাদের দেশের আমলারা মানতে চায় না। যতই প্রকল্প চলমান থাকুক না কেন যখনই প্রধানমন্ত্রী কিছু বলবেন সেটাই তখন আইন এবং সেভাবেই তখন কাজ করতে হবে এটাই নিয়ম এর কোন ব্যাতিক্রম চলবে না। কিন্তু আমলারা তাদের করতৃত্ব বজায় রাখার জন্য প্রধানমন্ত্রীকেও বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখাতে ছাড়েন না এটাই এখানে প্রতীয়মান হয়েছে তাই না??? আমি সচিবদের সাথে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন বিষয়ে কথা বলে বুঝেছি তারা মনে করে তারা পদে থাকবে সবসময় তাই তাদের সিদ্ধান্তই হওয়া উচিৎ সঠিক সিদ্ধান্ত। এধরনের অবাস্তব যুক্তি দিয়ে এরা নিজেদের মত করেই সবকাজ করতে চায় তাই ক্ষমতাসীন দলের ইচ্ছা বাস্তবে প্রতিফলিত হয় না। কিন্তু যখনই এসব কাজ করে বদনাম হয় তখন সবই রাজনীতিবিদদের বহন করতে হয়। আমলারা করে অন্যায় আর ভোগে রাজনীতিবিদরা। এখানে সংসদীয় কমিটি যে সিদ্ধান্ত দিয়েছে সেটাই কার্যকর করা উচিৎ বলে আমি মনে করি এখানে আমলাদেরকেও একটা জবাব দিহি করা দরকার ছিল কারন এই তালিকা প্রণয়ন করার জন্য প্রচুর সময় স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা নিয়েছে। আবার সাংসদদেরকে অন্তর্ভুক্তি করে নতুন ভাবে তালিকা প্রণয়ন করতেও সময় নিবে তাই এই সময় অপচয়ের জন্য আমি মনেকরি সচিবকে জবাব দিতেই হবে কেন সে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশকে না মেনে তাদের করা ধাচে এসব করছে??? কিন্তু কোন ব্যাতিক্রম হলে দায় দায়িত্ব এসব সচিবরা নেন না কিন্তু কাজ করেন নিজের মত করে এটা কোন ধরনের আইন??? আল্লাহ্‌ আমাদের দেশের আমলাদেরকে বুঝার ক্ষমতা দিন যে, তারা জনগণের চাকর আর সাংসদরা যারা আইন প্রণয়ন করেন তারা জনগণের প্রতিনিধি মানে আমলাদের মনিব। এটা যতক্ষন না আমলা কামলারা মেনে নেবে ততক্ষণ দেশে আইন শৃঙ্খলা আসবে বলে আমার মনে হয় না। আল্লাহ্‌ আমাদেরকে সঠিক পথে চলার ক্ষমতা দান করুন। আমীন
    Total Reply(0) Reply
  • Nur- Muhammad ২৫ এপ্রিল, ২০১৭, ৪:২০ পিএম says : 0
    জনাব মোহাম্মদ শাহ আলম খান, আপনাকে ধন্যবাদ। আপনার কমেন্ট ( লিখা) পড়ার জন্য আমি সর্বদায় উৎগ্রীব হয়ে থাকি। প্রতিদিন আপনার লিখা পড়ার জন্য অপেক্ষার প্রহর গুনি। আজ আপনার লিখা আমাকে বিশেষভাবে নাড়া দিলো। আপনার লিখার পূর্বেই আমি বলছি, জনপ্রতিনিধীরা ১০০% এলাকার কাজে সংযুক্ত থাকবে। কিন্তু ২০১৪ সালের ভোটারবিহীন নির্বাচনে যারা এমপি হলো তারা কি জনপ্রতিনিধী? সংবিধানের কথা বলে হয়ত বলবেন, হাঁ এমপি। তা হলে আমি বলতে চাই, তা হলে এমপি সাহেব কি ভাবে তার জনগণের উপর গুলি ছুরে? কি ভাবে এমপি ( মন্রী) সাহেব আরেক এমপিকে চর থাপ্পর মারে? এমপি ব্যক্তি কি এত নীচু স্তরের মানুষ যে, তা কে চর থাপ্পর খেতে হবে? এমপি সাহেব কে চর থাপ্পর খেয়ে থাকতে হবে। কেননা সে জনগণের ভোটে নির্বাচিত এমপি নন। যে বা যারা চর মারছে তাদের দায়ায় তিনি এমপি। তাই এই সব এমপি রা জনগণের কোন কাজ করার নৈতিক অধিকার রাখে না। আমলারা আমাদের দেশের ছেলে সন্তান। দেশের জন্য তারা কাজ করছে এবং করবে। তাদের মাধ্যমেই রাষ্ট্রিয় কাজ সচল থাকে। বাস্তব রূপ নেয়। তাই সৎ আমলা সর্বদায় সন্মান পাওয়ার যোগ্য। জনগণ তাহাদিগকে অবশ্যই সন্মান করবে। সন্মানের আসনে রাখবে। আপনার লিখার কয়েক জাগায় সন্মানিত আমলাদিগকে কটাক্ষ্য করা হয়েছে। আমলারা আমাদের সন্তান। তারা আমাদের কাজ করে। দেশের কাজ করে। আশা করি পরবরতী লেখায় এই ভুল সংশোধিত করবেন। ধন্যবাদ। সবায়কে ধন্যবাদ।
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: প্রধানমন্ত্রী


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ