পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
তাকী মোহাম্মদ জোবায়ের : চলতি অর্থবছরে বাংলাদেশের উচ্চ অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাস দিয়েছে আন্তর্জাতিক ঋণদাতা সংস্থাগুলো। গত অর্থবছরে বিশ্বব্যাংক-আইএমএফসহ আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাস দিয়েছিল ৬ দশমিক ২ থেকে ৬ দশমিক ৪ শতাংশ। বাংলাদেশ সরকারের প্রবৃদ্ধির লক্ষ্য ছিল ৭ শতাংশ। তবে অর্জিত প্রবৃদ্ধি ৭ দশমিক ১১ শতাংশ। সরকারের এবারের লক্ষ্য ৭ দশমিক ২ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জন। আর আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো পূর্বাভাস দিয়েছে ৬ দশমিক ৮ থেকে ৬ দশমিক ৯ শতাংশ প্রবৃদ্ধির। প্রতিবছরই এসব সংস্থার পূর্বাভাসের তুলনায় ন্যূনতম দশমিক ৫ শতাংশ প্রবৃদ্ধি বেশি হয়। তাই এবারও অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি অর্জনে সরকারের লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যেতে পারেÑ এমন ধারণা বিশ্লেষকদের।
চলতি অর্থবছরে উচ্চ অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির যথেষ্ট কারণও দেখা যাচ্ছে। সরকারি উচ্চ বিনিয়োগের পাশাপাশি বেসরকারি বিনিয়োগেও গতি ফিরতে শুরু করেছে। চলতি অর্থবছরের শুরুতে বিনিয়োগ বৃদ্ধির চিত্র পাওয়া গেছে বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিডা) হিসাবেও। সর্বশেষ প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুযায়ী, জানুয়ারি থেকে মার্চ সময়ে বিনিয়োগ আগের তিন মাসের তুলনায় (অক্টোবর-ডিসেম্বর) বেড়েছে ৫৫ দশমিক ২৩ শতাংশ। এ সময় স্থানীয় বিনিয়োগ ২৬ দশমিক ৮৬ শতাংশ এবং বিদেশি বিনিয়োগ বেড়েছে ১৩৫ দশমিক ৭৬ শতাংশ। এবছরের প্রথম তিন মাসে বিনিয়োগকৃত অর্থের পরিমাণ ৩৩ হাজার ৯৭৩ কোটি টাকা। অন্যদিকে গত বছরের শেষ তিন মাসে এই অর্থের পরিমাণ ছিল ২১ হাজার ৬৯২ কোটি টাকা।
তবে এই প্রবৃদ্ধিতে সন্তুষ্ট হওয়ার কোন কারণ দেখছেন না বিশ্লেষকরা। কারণ, ২০২০ সাল নাগাদ ৮ শতাংশ হারে প্রবৃদ্ধি অর্জন করতে হলে বিনিয়োগের হার জিডিপির ২৬ দশমিক ৬ শতাংশে উন্নীত করতে হবে। অথচ এখন পর্যন্ত এই হার ২২ শতাংশেই আটকে আছে।
এদিকে ২০১৬-২০১৭ চলতি অর্থবছরের মার্চ পর্যন্ত ৪৫ শতাংশ এডিপি বাস্তবায়ন হয়েছে, যা টাকার অংকে ৫৩ হাজার ৮৬৪ কোটি টাকা। একই সময়ে গত বছর এডিপি বাস্তবায়িত হয়েছিল ৪৪ শতাংশ, যা টাকার অংকে ছিল ৪১ হাজার ৯৭৫ কোটি টাকা।
সম্প্রতি বিশ্বব্যাংক ৬ দশমিক ৮ শতাংশ প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাস দিয়েছে। অন্যদিকে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের পূর্বাভাস হলÑ প্রবৃদ্ধি হতে পারে ৬ দশমিক ৯ শতাংশ। সর্বশেষ গত মঙ্গলবার আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) প্রকাশিত ‘ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক আউটলুক’ শীর্ষক প্রতিবেদনে ৬ দশমিক ৯ শতাংশ প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাস দেয়া হয়েছে। তবে সব মিলিয়ে উন্নয়ন সহযোগী সংস্থাগুলো বাংলাদেশের অর্থনীতির স্থিতিশীল প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাস দিয়েছে।
আইএমএফের প্রতিবেদনে আগামী অর্থবছর (২০১৭-১৮) মোট দেশজ উৎপাদনে (জিডিপি) প্রবৃদ্ধি ৭ শতাংশ হতে পারে বলে পূর্বাভাস দেয়া হয়েছে। তবে গত ১৬ এপ্রিল অপর এক প্রতিবেদনে ২০১৭-১৮ অর্থবছরে বাংলাদেশের জিডিপি প্রবৃদ্ধির হার কমে ৬ দশমিক ৪ শতাংশে দাঁড়াবে বলেও পূর্বাভাস দেয় বিশ্বব্যাংক। আইএমএফের পূর্বাভাস অনুযায়ী, চলতি অর্থবছর দেশের প্রকৃত জিডিপি প্রবৃদ্ধি স্থিতিশীল থাকবে। এ হিসাবে চলতি অর্থবছর বাংলাদেশের প্রকৃত জিডিপি প্রবৃদ্ধি হবে ৬ দশমিক ৯ শতাংশ। প্রতিবেদনে এ বিষয়ক গত আট অর্থবছরের উপাত্ত উপস্থাপন করে ২০১৬-১৭ ও ২০১৭-১৮ অর্থবছরসহ ২০২১-২২ অর্থবছরের পূর্বাভাস দেয়া হয়। এতে বলা হয়, ২০১৭-১৮ অর্থবছরে বাংলাদেশের প্রকৃত জিডিপি প্রবৃদ্ধির হার ৭ শতাংশ হবে, যা ২০২১-২২ অর্থবছরেও অক্ষুণœ থাকবে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ১৯৯৮-৯৯ থেকে ২০০৭-০৮ অর্থবছর পর্যন্ত বাংলাদেশে প্রকৃত জিডিপি প্রবৃদ্ধির গড় হার ছিল ৫ দশমিক ৮ শতাংশ। আর ২০০৮-০৯ থেকে ২০১৫-১৬ অর্থবছর পর্যন্ত জিডিপি প্রবৃদ্ধির হার যথাক্রমে ৫ দশমিক ৩, ৬, ৬ দশমিক ৫, ৬ দশমিক ৩, ৬, ৬ দশমিক ৩, ৬ দশমিক ৮ ও ৬ দশমিক ৯ শতাংশ।
আইএমএফের প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, চলতি বছর মূল্যস্ফীতি ৬ দশমিক ৪ শতাংশে উন্নীত হতে পারে যা পরবর্তী বছর কিছুটা কমে ৫ দশমিক ৮ ভাগে নেমে আসতে পারে। আমদানি-রফতানি বাণিজ্যের ভারসাম্য ঋণাত্মক হওয়ার পূর্বাভাস দেয়া হয়েছে। আগামী পাঁচ বছর বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধি গড়ে ৭ শতাংশ হারে এগোতে পারে বলে উল্লেখ করেছে আইএমএফ। প্রতিবেদনে বিশ্ব অর্থনীতি ঘুরে দাঁড়ানোর ইঙ্গিত দেয়া হয়েছে। গত অক্টোবরের আউটলুক প্রতিবেদনে সংস্থাটি বিশ্ব অর্থনীতির ৩ দশমিক ৪ শতাংশ প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাস দিয়েছিল যা এবার বাড়িয়ে সাড়ে ৩ শতাংশ করা হয়েছে। বিশেষ করে উন্নত বিশ্বের অর্থনীতি ঘুরে দাঁড়ানো, বিশ্বের অনেক দেশের কারিগরি উন্নতি লাভ, শ্রমিকদের প্রকৃত আয় বৃদ্ধিসহ বিশ্বে বাণিজ্য বৃদ্ধির গতি-প্রকৃতি বিশ্লেষণ করে আইএমএফ এ পূর্বাভাস দিয়েছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।