Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

ইপিজেডে শ্রমিক ইউনিয়ন গঠনে সরকার বাস্তব সম্মত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবে

জার্মানির এফইএস ডেলিগেশনকে বাণিজ্যমন্ত্রী

| প্রকাশের সময় : ২১ এপ্রিল, ২০১৭, ১২:০০ এএম

অর্থনৈতিক রিপোর্টার : বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ বলেছেন, জার্মানির সঙ্গে বাংলাদেশে সম্পর্ক খুবই ঘনিষ্ট। জার্মানি বাংলাদেশের বড় রফতানি বাজার। ইউরোপিয়ন ইউনিয়ন বাংলাদেশকে এ্যাভ্রিথিং বাট আর্মস (ইবিএ)-এর আওতায় জিএসপি সুবিধা প্রদান করছে। বাংলাদেশের মোট রফতানি আয়ের ৫৫ ভাগ আসে ইউরোপিয়ন ইউনিয়ন থেকে। একক দেশ হিসেবে জার্মানি বাংলাদেশে দ্বিতীয় বড় রফতানি বাজার। অপ্রত্যাশিত রানা প্লাজা দুর্ঘটনার পর সরকার এবং কারখানার মালিকদের আন্তরিক প্রচেষ্টা এবং গৃহীত পদক্ষেপের কারনে আর কোন এ ধরনের দুর্ঘটনা ঘটেনি। মন্ত্রী বলেন, শ্রমিকদের জন্য নিরাপদ ও কর্মবান্ধব পরিবেশ নিশ্চিত করা হয়েছে। শ্রমিকদের অধিকার নিশ্চিত করতে শ্রম আইন সংশোধন করে সময়োপযোগি করা হয়েছে। ইপিজেড এ শ্রমিক ইউনিয়নের আদলে ওয়ার্কার্স ওয়েল ফেয়ার এ্যাসোসিয়েশন গঠনের অধিকার দেওয়া হয়েছে। শ্রমিকরা সেখানে মালিক পক্ষের সঙ্গে বার্গেনিং করতে পারছে, তাদের অধিকার প্রতিষ্ঠায় ভূমিকা রাখছে। শ্রম আইন মেনেই এ অ্যাসোসিয়েশন গঠনের অনুমতি দেওয়া হয়েছে। এতে শ্রমিক ও বিনিয়োগকারীরা সন্তুষ্ট। শ্রমিকরা কারখানায় নিরাপদে কাজ করছে। ইপিজেড এ শ্রমিক ইউনিয়ন গঠনের বিষয়ে সরকার বাস্তব সম্মত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবে।
গতকাল বাংলাদেশ সচিবালয়ে বাংলাদেশে সফররত জার্মানির ফ্রিডরিচ-ইবার্ট-স্টিফটাং (এফইএস) এর ভাইস চেয়ারম্যান এবং ইন্টারন্যাশনাল ট্রেড ইউনিয়ন কনফেডারেশনের সাবেক প্রেসিডেন্ট মাইকেল সোমার এর নেতৃত্বে ৬ সদস্যের প্রতিনিধি দলের সঙ্গে মতবিনিময় করে সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে সব কথা বলেন।
তোফায়েল আহমেদ বলেন, বাংলাদেশ সরকার শ্রমিকদের বিষয়ে খুবই আন্তরিক। অপ্রত্যাশিত রানা প্লাজা দুর্ঘটনার পর দেশের তৈরী পোশাক কারখানাগুলোকে নিরাপদ করতে সব ধরনের পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে। ক্রেতা গোষ্ঠির অনুরোধে এ্যাকোর্ড, এ্যালায়েন্স এবং ন্যাশনাল ইনিসিয়েটিভ দেশের তিন হাজার আটশত তৈরি পোশাক কারখানার মধ্যে তিন হাজার সাতশত আশিটি কারখানা পরিদর্শন শেষ করেছে। এর মধ্যে ৩৯টি কারখানা বন্ধু করে দেওয়া হয়েছে এবং ৪৭টি কারখানা আংশি ত্রæটি থাকায় সেগুলো সংস্কার করা হয়েছে। অযোগ্য কারখানার সংখ্যা দুই শতাংশের নীচে। আন্তর্জাতিক ভাবে দুই শতাংশের উপরে গ্রহনযোগ্য। বাংলাদেশে এখন গ্রিন ফ্যাক্টরি গড়ে উঠছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইউনাইটেড স্ট্রেটস গ্রিন বিল্ডিং কাউন্সিল পৃথিবীর যে ১০ তৈরি পোশাক কারখানাকে এনার্জি এ্যান্ড এনভায়রনমেন্টাল ডিজাইন (এলইইডি) সার্টিফিকেশন দিয়েছে তারমধ্যে ৭টিই বাংলাদেশের। গ্রিন ফ্যাক্টরি নির্মাণে বিপুল বিনিয়োগ হলেও ক্রেতারা পণ্যের মূল্য বৃদ্ধি করছে না, বরং মূল্য কমছে। বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, দেশের আটটি ইপিজেড-এ প্রায় ৪ লাখ শ্রমিক কাজ করছে। বাইরের শ্রমিকদের চেয়েও তারা বেশি বেতন ও সুযোগ সুবিধা পাচ্ছে। এখানকার শ্রমিকরা চান নিজেদের মধ্যে শ্রমিক সংগঠন তৈরি করতে। বাইরের কাউকে তারা নিজেদের নেতা নির্বাচন করতে চান না। ডেলিগেশন প্রধান মাইকেল সোমার বলেন, জার্মানি বাংলাদেশের উন্নয়ন সহযোগী এবং ভলো বন্ধু। জার্মানি বাংলাদেশের সাথে আরো বাণিজ্য বৃদ্ধি করতে আগ্রহী। বাংলাদেশ শ্রমিকদের জন্য অনেক কিছু করেছে, তা প্রশংসা পাবার যোগ্য। বিগত যে কোন সময়ের চেয়ে এখন বাংলাদেশে শ্রমিকরা নিরাপদ। জার্মানি চায় আইএলও নির্ধারিত শ্রম আইন চালু থাকুক।
এ সময় ঢাকায় নিযুক্ত জার্মানির রাষ্ট্রদূত ড. থমাস প্রিন্জ, এফইএস এর এশিয়া এ্যান্ড দি প্যাসিফিকের প্রধান জুর্জেন স্টেটিটেন, বাংলাদেশের রেসিডেন্ট রিপ্রেজেনটেটিভ ফ্রানজিসকা কর্ন, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মুন্সী শফিউল হক, অতিরিক্ত সচিব (এফটিএ) মো. শফিকুল ইসলাম এবং ডবিøউটিও এর মহাপরিচালক মুনির চৌধুরী এ সময় উপস্থিত ছিলেন।



 

Show all comments
  • Mohammed Shah Alam Khan ২১ এপ্রিল, ২০১৭, ৫:২২ পিএম says : 0
    ইপিজেড এলাকায় শ্রমিকরাই সঠিক তারা বাহিরের নেতা চান না তারা চান তাদের মধ্য থেকে নেতা। আমি আশা করি ইপিজেড এলাকায় বামদের ঢুকার সুযোগ সরকার করে দিবে না। বরং আমি চাই ইপিজেড এর বাহিরেও যে সব কারখানা রয়েছে সেখানেও বহিরাগতদের জন্য প্রবেশ নিষেধ আইন করা প্রয়োজন। সাথে সাথে ফেডারেশনের নেতাদেরকে নিয়ন্ত্রণে নেয়া খবুই প্রয়োজন মনে করি। সরকার চাইলেই এসব ফেডারেশনের নেতাদেরকে বিশেষ করে হাতে গুনো কয়েকটাকে ধরলেই এই বি আর এম জি শ্রমিকদের শুখ ও শান্তি ফেরে আসবে। এরা নিজেদের পকেট ভরতে ব্যস্থ থাকে তাই শ্রমিকরা তাদের পাওনা পায় না। এদের সাথে মালিকদের শখতা রয়েছে তাই এরা শ্রমিকের স্বার্থে শ্রমিকদের ব্যবহার করে না, করে থাকে নিজেদের স্বার্থে।
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ