Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

সুন্দরবন বিনাশী প্রকল্প পাঁচ কোটি মানুষকে প্রাকৃতিক দুর্যোগে ফেলবে

প্রকল্প বাতিল না হলে রামপাল মার্চসহ নতুন কর্মসূচি

| প্রকাশের সময় : ২১ এপ্রিল, ২০১৭, ১২:০০ এএম

খুলনা ব্যুরো : তেল-গ্যাস-খনিজ সম্পদ ও বিদ্যুৎ-বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটির সমাবেশে অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ বলেছেন, উপকূলীয় অঞ্চলের উন্নয়ন এবং কর্মসংস্থানের মিথ্যাচার ছড়িয়ে সরকার রামপাল প্রকল্পসহ সুন্দরবন বিনাশী অপতৎপরতা অব্যাহত রেখেছে। এসব প্রকল্পে প্রায় ৫০ লাখ মানুষ জীবন-জীবিকা হারিয়ে উদ্বাস্তুতে পরিণত হবে। পাঁচ কোটি মানুষকে প্রাকৃতিক দুর্যোগের মুখে অরক্ষিত করে মৃত্যুর মুখে ঠেলে দেয়া হবে। ভারতীয় এক্সিম ব্যাংকের কাছ থেকে ঋণের বোঝা চাপবে বাংলাদেশের ঘাড়ের উপর। ভারতীয় কোম্পানী লাভ করবে, ভারতীয় হ্যাবি ইলেকট্রিক কোম্পানি নির্মাণ কাজ করে মুনাফা লাভ করবে, ভারতীয় কোম্পানি কয়লা জোগান দিয়ে মুনাফা করবে। আর এক্সিম ব্যাংক ঋণের ব্যবসা করবে। বাংলাদেশের ভাগে থাকবে শুধু লোকসান ও সর্বনাশ। বেশি দামে বিদ্যুৎ, দীর্ঘমেয়াদী ঋণ আর সর্বোপরি বাংলাদেশে প্রধান প্রাকৃতিক প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা সুন্দরবন অনিবার্য ধ্বংস করবে। গতকাল বৃহস্পতিবার বিকাল ৪টায় খুলনার শহীদ হাদিস পার্কে অনুষ্ঠিত উপকূলীয় মহাসমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন।
উপকূলীয় অঞ্চলের ৫ কোটি মানুষের জীবন ও সম্পদের জন্য হুমকি রামপাল বিদ্যুৎ প্রকল্পসহ সুন্দরবন বিনাশী অপতৎপরতা বন্ধ, এ অঞ্চলের মানুষের জন্য প্রকৃতিবান্ধব উন্নয়ন পরিকল্পনা ও ঘরে ঘরে সুলভে গ্যাস ও বিদ্যুতের দাবিতে এ মহাসমাবেশের আয়োজন।
অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ আরও বলেন, সুন্দরবনের কাছে বেআইনিভাবে জমি, বন দখল করছে। যারা কমিশন ভোগী, যারা ভাড়াটে বিশেষজ্ঞ তারা ছাড়া দেশে বিদেশের বিশেষজ্ঞ এবং জনগণ সুন্দরবন রক্ষার আন্দোলনের শক্তি। উন্নয়নের অনেক বিকল্প আছে, কিন্তু সুন্দরবনের কোন বিকল্প নেই। অবিলম্বে প্রকল্প বাতিল না হলে রামপাল মার্চসহ কঠিন কর্মসূচি ঘোষণা করেন অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ। কর্মসূচির মধ্যে ২৫ এপ্রিল থেকে ২৫ জুন উপকূলীয় অঞ্চলে জেলা-উপজেলায় সভা, সমাবেশ ও গণসংযোগ। মে মাসে সরকারের ব্যয়বহুল পরিবেশ বিধ্বংসী, ঋণ নির্ভর বেশি দামের বিদ্যুৎ মহাপরিকল্পনার বিপরীতে সুলভ, পরিবেশ বান্ধব, ঋণ বা অপচয় মুক্ত ও দেশের ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ সরবরাহের জন্য বিকল্প বিদ্যুৎ মহাপরিকল্পনা উপস্থাপন ও দেশব্যাপী তা নিয়ে জনমত গঠন।
১৫ জুলাই দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে টেকসই পরিবেশ বান্ধব কর্মসংস্থান নির্ভর উন্নয়নের পরিকল্পনা উপস্থাপন। ২৫ জুলাই সাতক্ষীরার শ্যামনগর থেকে শরণখোলা উপকূলীয় মানুষদের মানববন্ধন এবং তার সঙ্গে সংহতি জানিয়ে দেশে-বিদেশের সংহতি কর্মসূচি। ৯ সেপ্টেম্বর সুন্দরবন আন্দোলনে যুক্ত সকল দেশী-বিদেশী বিশেষজ্ঞ, সংগঠন ও ব্যক্তিদের নিয়ে আন্তর্জাতিক সুন্দরবন কনভেনশন। এর মধ্যেও রামপাল বিদ্যুৎ প্রকল্পসহ সুন্দরবন বিনাশী প্রকল্প বাতিল না করা হলে রামপাল মার্চ, দেশব্যাপী হরতালসহ আরো কঠোর কর্মসূচি নেয়া হবে। এ ছাড়া বাংলাদেশ ভারত ও আন্তর্জাতিক আইনী প্রক্রিয়ার সহায়তায় প্রকল্প বন্ধে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে। মহাসমাবেশে অন্যান্যের মধ্যে বক্তৃতা করেন কেন্দ্রীয় নেতা টিপু বিশ্বাস, রুহিন হোসেন প্রিন্স, বজলুর রশিদ ফিরোজ, জোনায়েদ সাকি, বহ্নিশিখা জামালী, শুভ্রাংসু চক্রবর্তী, সামছুল আলম, মোশাররফ হোসেন নান্টু, অধ্যাপক তানজিম উদ্দিন খান, শহীদুল ইসলাম সবুজ ও নাছির উদ্দিন নাসু প্রমুখ। জাতীয় কমিটির খুলনার সংগঠক ডাঃ মনোজ দাসের সভাপতিত্বে মহাসমাবেশ পরিচালনা করেন জেলা আহŸায়ক এস এ রশীদ এবং সদস্য সচিব মোস্তফা খালিদ খসরু। স্থানীয় নেতাদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন মনিরুল হক বাচ্চু, এ্যাড. রুহুল আমীন, জনার্দন দত্ত নান্টু, মুনীর চৌধুরী সোহেল, রূহুল আমীন, কাজী দেলোয়ার হোসেন, এ্যাড. এসএম শাহ নেওয়াজ আলী, এ্যাড. মোঃ বাবুল হাওলাদার এবং এমএ কাশেম প্রমুখ।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ