Inqilab Logo

বৃহস্পতিবার ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

এক্সিম ব্যাংকের অর্থায়ন আমানতের খেয়ানত -সুলতানা কামাল

রামপাল নিয়ে সংবাদ সম্মেলন

| প্রকাশের সময় : ২০ এপ্রিল, ২০১৭, ১২:০০ এএম

নিম্নমানের প্রকল্প হতে যাচ্ছে রামপাল -রণজিৎ সাহু
স্টাফ রিপোর্টার : সুন্দরবন রক্ষা জাতীয় কমিটির আহŸায়ক সুলতানা কামাল বলেছেন, ভারতের এক্সিম ব্যাংক কোনো নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে রামপাল বিদ্যুৎ প্রকল্পে অর্থায়ন করছে। এই টাকা তারা নিজেদের পকেট থেকে দিচ্ছে না, এই অর্থ সেই দেশে জনগণের আমানতের টাকা। আর এ অর্থ দিয়ে সুন্দরবন ধ্বংস করা হচ্ছে। এটা আমানতের খেয়ানত। এদিকে যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী ভারতীয় বংশোদ্ভ‚ত জ্বালানি ও কয়লা বিশেষজ্ঞ রণজিৎ সাহু স্কাইপে যুক্ত হয়ে বলেছেন, আইএফসি ও ডবিøউএইচওর যে নীতিমালা আছে, তা-ও মানা হচ্ছে না। রামপাল প্রকল্পের দূষণ নিয়ন্ত্রণে যেসব যন্ত্র ও প্রযুক্তি ব্যবহৃত হবে, তা বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, এটি একটি নিম্নমানের প্রকল্প হতে যাচ্ছে। রামপাল প্রকল্প বিষয়ে ভারতের এক্সিম ব্যাংকের সঙ্গে বাংলাদেশের যে চুক্তি, তা নিয়ে আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞ মতামত তুলে ধরতে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির মিলনায়তনে গতকাল বুধবার এক সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে সুন্দরবন রক্ষা জাতীয় কমিটি। সেখানেই সুলতানা কামাল এসব কথা বলেন।
সাবেক তত্ত¡াবধায়ক সরকারের এই উপদেষ্টা বলেন, রামপাল নিয়ে সরকার দেশে-বিদেশে অসত্য তথ্য দিয়ে যাচ্ছে এবং ভারতের এক্সিম ব্যাংকের সঙ্গে যে চুক্তি হয়েছে, সে বিষয়ে কোনো তথ্য দিচ্ছে না। সরকারের কথা শুনে মনে হচ্ছে, তারা আমাদের শরীরে বিষ ঢোকাবে এবং সেই বিষ যাতে আমাদের ক্ষতি না করে সেই ব্যবস্থাও করবে।’
সংবাদ সম্মেলনে যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী ভারতীয় বংশোদ্ভ‚ত জ্বালানি ও কয়লা বিশেষজ্ঞ রণজিৎ সাহু স্কাইপে যুক্ত হন। তিনি ৫০টি কয়লাবিদ্যুৎ প্রকল্পে তার কাজের অভিজ্ঞতা তুলে ধরে বলেন, কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ প্রকল্পে পরিবেশের কোনো ক্ষতি হবে না এ কথা যারা বলেন, তারা ভুল বলেন। রামপাল কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ প্রকল্পে পরিবেশ সুরক্ষাবিষয়ক আন্তর্জাতিক সংস্থা আইএফসি ও ডবিউএইচওর যে নীতিমালা আছে, তা-ও মানা হচ্ছে না। রামপাল প্রকল্পের দূষণ নিয়ন্ত্রণে যেসব যন্ত্র ও প্রযুক্তি ব্যবহৃত হবে, তা বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, এটি একটি নিম্নমানের প্রকল্প হতে যাচ্ছে। ভারত তার নিজ দেশেও এর চেয়ে উন্নত মানের কয়লাবিদ্যুৎ প্রকল্প নির্মাণ করছে।
জ্বালানি বিশেষজ্ঞ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভ‚তত্ত¡ বিভাগের প্রফেসর বদরুল ইমাম রামপাল প্রকল্প বিষয়ে বিশ্বের সাতজন খ্যাতনামা বিশেষজ্ঞের মূল্যায়ন ও গবেষণার সারসংক্ষেপ তুলে ধরেন। তিনি বলেন, রামপালের কারণে সুন্দরবনের যে ক্ষতি হবে, তা সরকারের কাছে বিভিন্ন সময় তুলে ধরা হয়েছে। সরকার বলছে, এটা বিজ্ঞানসম্মত নয়। ইউনেসকোর বিশেষজ্ঞরা একই মতামত তুলে ধরেছেন। সরকার সেটাকেও বিজ্ঞানসম্মত নয় বলে উড়িয়ে দিয়েছে। কোথায় বিজ্ঞানসম্মত নয়, তা নিয়ে কোনো যুক্তিতর্ক নেই। বিশ্বের খ্যাতনামা ১০ জন বিশেষজ্ঞ এই রামপাল প্রকল্পের সব নথি পর্যালোচনা করে দেখেছেন যে এর মাধ্যম সুন্দরবনের ক্ষতি হবে। এতগুলো স্তরের বিজ্ঞানীদের মতামত জানার পরও সরকার যদি বিজ্ঞান না বোঝে তাহলে বিজ্ঞান কী, সেটা আমাদের বোঝাতে হবে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের প্রফেসর এম এম আকাশ বলেন, এ প্রকল্পে বিদ্যুতের প্রতি ইউনিটের যে দাম ধরা হয়েছে, তা প্রকল্প শেষ হওয়ার পর তিন গুন হবে। ফলে সুন্দরবন ধ্বংস করে বেশি দামে আমাদের বিদ্যুৎ কিনতে হবে। সংবাদ সম্মেলনে আরো উপস্থিত ছিলেন জাতীয় কমিটির সদস্যসচিব আবদুল মতিন ও সদস্য শরিফ জামিল।

 



 

Show all comments
  • Mohammed Shah Alam Khan ২১ এপ্রিল, ২০১৭, ৩:৩২ এএম says : 0
    এখানে মানবাধিকার কর্মী সুন্দরবন রক্ষা জাতীয় কমিটির আহ্বায়ক সুলতানা কামাল বলেছেন, ভারতের এক্সিম ব্যাংক নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে সেই দেশের জনগণের আমানতের টাকা রামপাল বিদ্যুৎ প্রকল্পে অর্থায়ন করে আমানতের খেয়ানত করছে। আর এ অর্থ দিয়ে সুন্দরবন ধ্বংস করা হচ্ছে। সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের এই উপদেষ্টা বলেন, ‘রামপাল নিয়ে সরকার দেশে-বিদেশে অসত্য তথ্য দিয়ে যাচ্ছে এবং ভারতের এক্সিম ব্যাংকের সঙ্গে যে চুক্তি হয়েছে, সে বিষয়ে কোনো তথ্য দিচ্ছে না। সরকারের আমাদের শরীরে বিষ ঢোকাবে এবং সেই বিষ যাতে ক্ষতি না করে সেই ব্যবস্থাও করবে।’ এরপর তিনি আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞদের যে অভিমত তুলে ধরেছেন এর উপর সরকারকে সঠিক জবাব দেয়া প্রয়োজন হয়ে পরেছে। আমি এবং দেশবাসী আর শুনতে চাইনা যে, কম মূল্যে কয়লা দিয়ে বিদ্যুৎ উৎপাদন হচ্ছে...... বিষ দিয়ে সেটাকে নিউট্রাল করা দুটুই প্রচুর খরচের বিষয়। তাছাড়া বিষ যদি কোন কারনে নিউট্রাল করতে না পারে তাহলে মৃত্যু অনিবার্য; তাই আমি মনে করি এই প্রথা জনগণের স্বার্থে প্রয়োগ করা কোন মতেই সমচিন নয়। আমি স্পষ্ট ভাষায় আমার এবং বাংলাদেশের জনগণের পক্ষথেকে সুলতানা কামালকে বলতে চাই আপনি যদি এখানে সত্যই আপনার বান্ধবী জননেত্রী শেখ হাসিনার পক্ষ থেকে মুখশ এটে পক্ষের কাজ করার জন্যই বিরুধিতা করছেন এমন কিছু হয় তাহলে আমার কোন কথা নেই। এমন হলে আমি এবং সাধারন জনগণ যারা অভিনয় বুঝেনা তারা অন্তত আপনাকে ক্ষমা করব না। আপনি সুলতানা কামাল যদি সত্যই জনগণের উপকারের জন্য এই আন্দলনে নেমে থাকেন তাহলে আপনার এই কথাগুলোর জবাব পত্রিকা মাধ্যমে দেয়ার জন্য সময় নির্ধারন করুন। সময় মত জবাব না পেলে আন্তর্জাতিক আইন নামানার জন্য আন্তর্জাতিক আদালতে মামলা দিন। আপনার যদি সেটা করতে কোন রকম বাহানা থাকে তাহলে কাওকে আপনাদের মানে সুন্দরবন রক্ষা জাতীয় কমিটির আহ্বায়ক হিসাবে দায়িত্ব দিন যাতে তিনি আপনাদের পক্ষথেকে আন্তর্জাতিক আদালতে মামলা দিতে পারে। আপনি আমাকে পছন্দ করেন না কারন আমি আপনার বান্ধবীর নামে সত্য কথা যানাকি আপনি সহ্য করতে পারেনি তাই আমার সাথে আপনি সম্পর্ক রাখতে চান না আমাকে বলেছেন। নয়ত আমিই আপনার পাশে থাকতে পারতাম দেশের ও জনগণের স্বার্থে। আল্লাহ্‌ আপনাকে সত্য বলার ও সততার সাথে কাজ করার সদ-ইচ্ছা দান করুন। আমীন
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ