পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
স্টাফ রিপোর্টার : বৃষ্টি ও উজানের ঢলে হাওর অঞ্চলে বন্যার বিষয়টি নিয়ে বিএনপি ‘ধাপ্পাবাজি’ করছে বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।
হাওরাঞ্চলে মাসব্যাপী আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী ও সরকারের মন্ত্রীরা দিন-রাত কাজ করে যাচ্ছেন বলে দাবি করেন তিনি। গতকাল বুধবার সন্ধ্যায় আওয়ামী লীগ সভাপতির ধানমন্ডির রাজনৈতিক কার্যালয়ে দলের সম্পাদক মÐলীর সভা শেষে সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন ওবায়দুল কাদের।
গতকাল বুধবার রাজধানীতে এক আলোচনা সভায় বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, কয়েকদিন আগে আমি নেত্রকোনা গিয়েছিলাম। উজান থেকে পানি এসে হাওর এলাকার ১০ লাখ হেক্টর জমির ফসল নষ্ট করে দিয়েছে। মানুষ হাহাকার করছে, কোটি কোটি মানুষ দুর্গত হয়েছে। এর একমাত্র কারণ হচ্ছে, যেহেতু আমাদের কোনো চুক্তি নেই, তাদের যখন বন্যা হয়, তখন ভারত তার অঞ্চলের বাঁধগুলো খুলে দেয়, আমরা পানিতে তলিয়ে যাই।
মির্জা ফখরুলের এ বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় ওবায়দুল কাদের বলেন, হাওর এলাকা পরিদর্শনে গিয়ে মির্জা ফখরুল ইসলাম বলেছেন সরকার কিছু করেনি। তিনি কিছু উদ্ভট কথা বলেছেন। দেশের প্রেসিডেন্ট তিনদিন যাবত হাওর এলাকায়, ত্রাণমন্ত্রী এখনো সেখানে অবস্থান করছেন। আগামীকাল মাহবুব উল আলম হানিফের নেতৃত্বে ৫ সদস্যের একটি টিম সেখানে যাবে। স্বাভাবিক অবস্থা ফিরে না আসা পর্যন্ত দলের ও সরকারের কার্যক্রম চলতে থাকবে।
তিনি বলেন, গত ১ মাস সরকার হাওর এলাকার মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছে। আর হঠাৎ বিএনপি একদিন হাওর এলাকায় গিয়ে ফটোসেশন করে কৃতিত্ব নিতে চাচ্ছে। আসলে বিএনপি সেখানে ত্রাণ নয় ফটোসেশন করতে গিয়েছেন। হাওর অঞ্চলে বন্যার বিষয়টি নিয়ে বিএনপি ‘ধাপ্পাবাজি’ করছে।
কাদের বলেন, আওয়ামী লীগ ফাঁকা মাঠে গোল দিতে চায় না। আশা করি আগামী নির্বাচনে অংশ নিবে বিএনপি। তারা অংশ নিলে দেশে-বিদেশে নির্বাচনের বিশ্বস্ততা ও ইমেজ বাড়বে।
বিএনপি আগামী নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে বলে আশা প্রকাশ করে কাদের বলেন, বিএনপি নির্বাচনের আগে শর্ত আরোপ করা সুযোগ পেয়েছে। আমরা আশা করি বিএনপি নির্বাচনে আসবে। তারা যদি বলে ‘লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড’ নাই, এটা নির্বাচন কমিশন অবশ্যই তৈরি করবে।
তিনি বলেন, তারা শর্ত দিচ্ছে নির্বাচনকালীন সহায়ক সরকারের। কিন্তু তা সংবিধানের কোথাও নেই। নির্বাচনে সেনাবাহিনীকে কোথাও নামানোর প্রয়োজন হলে নির্বাচন কমিশন তা করবে।
দলের সাংগঠনিক সম্পাদকরা বিভিন্ন জেলার সাংগঠনিক অবস্থা ও সমস্যা নিয়ে রিপোর্টের কথা উল্লেখ করে সাধারণ সম্পাদক বলেন, রিপোর্টে তারা সমস্যা সমাধানের জন্য কিছু পরামর্শ দিয়েছেন। কিছু কিছু জেলা ও উপজেলায় সমস্যা আছে। সেই সব জেলার নেতাদের ঢাকায় ডেকে সমস্যা সমাধান করাও হবে। সমস্যাপূর্ণ জেলাগুলোর মধ্যে ৪টি জেলার নেতাদেরকে আগামী ২৩, ২৪, ২৫ ও ২৭ এপ্রিল ঢাকায় ডাকা হয়েছে। তাদের সঙ্গে বৈঠক করে আলোচনার মাধ্যমে সমস্যা সমাধান করা হবে।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, আমাদের দলে কিছু জায়গায় কিছু সমস্যা আছে। আগামী নির্বাচনের আগে ঐক্যবদ্ধ হয়ে দলকে সুশৃঙ্খল করা হবে নেত্রীর নির্দেশের মাধ্যমে।
বৈঠক ও সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফ, সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন, বিএম মোজাম্মেল হক, খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, একেএম এনামুল হক শামীম, দপ্তর সম্পাদক আবদুস সোবহান গোলাপ, সাংস্কৃতিবিষয়ক সম্পাদক অসীম কুমার উকিল, ত্রাণ ও দুর্যোগবিষয়ক সম্পাদক সুজিত রায় নন্দী, শিল্পবিষয়ক সম্পাদক আবদুস সাত্তার, বন ও পরিবেশ সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন, শিক্ষাবিষয়ক সম্পাদক সামসুর নাহার চাপা, স্বাস্থ্যবিষয়ক সম্পাদক রোকেয়া বেগম, উপদপ্তর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া, কেন্দ্রীয় সদস্য এসএম কামাল।
চার হাজার বাস নামিয়ে ভোগান্তি কমানোর চিন্তা সরকারের
এর আগে গতকাল বুধবার দুপুরে রাজধানীর মানিক মিয়া এভিনিউয়ে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, ঢাকায় গণপরিবহন সঙ্কট নিরসনে বিদেশ থেকে চার হাজার বাস আনার চিন্তা-ভাবনা করছে সরকার। আগামী মে মাসে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।
ঢাকা-চট্টগ্রাম-কক্সবাজার রুটে সিল্কলাইন ট্র্যাভেলসের বাস সেবার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।
ওবায়দুল কাদের বলেন, ঢাকার গণপরিবহন সঙ্কট নিরসনের জন্য আরও বাস দরকার। এজন্য বিদেশ থেকে চার হাজার গাড়ি আনার একটা চিন্তা-ভাবনা করেছেন ঢাকা সিটি করপোরেশন উত্তরের মেয়র আনিসুল হক। বিষয়টি নিয়ে কথা বলতে মে মাসের প্রথম সপ্তাহে পরিবহন নেতাদের নিয়ে তিনি আমার সঙ্গে বসবেন। সেখানে বাস মালিক প্রতিনিধিদের সঙ্গে আলাপ-আলোচনার পর সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।
বাস ভাড়ায় নৈরাজ্য বন্ধ করতে ১৫ এপ্রিলের পর থেকে ঢাকার রাস্তায় চলাচলরত সব ধরনের সিটিং সার্ভিস বন্ধ করার ঘোষণা দেয় ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতি। এই সিদ্ধান্তের পর রাজধানীতে গণপরিবহনের সংখ্যা কমিয়ে দেয়া হয়। এছাড়া যাত্রীদের জিম্মি করে তাদের কাছ থেকে সিটিং সার্ভিসের আগের ভাড়াই আদায় করা হয়।
ঘোষণা দিয়েও সিটিং সার্ভিসে আগের ভাড়া নেয়ায় ১৬ এপ্রিল অভিযানে নামে বিআরটিএর ভ্রাম্যমাণ আদালত। পরে বিআরটিএর পক্ষ থেকে জানানো হয়, পরিবহনের সংখ্যা কমিয়ে দেয়া হলে অথবা গাড়ি না নামিয়ে যাত্রীদের কেউ জিম্মি করতে চাইলে ওই গাড়ির রুট পারমিট বাতিল করা হবে।
অভিযান শুরুর পর নির্দেশনা না মানায় এ পর্যন্ত কতগুলো গাড়ির রুট পারমিট বাতিল করা হয়েছে জানতে চাইলে ওবায়দুল কাদের বলেন, প্রথমত নোটিশ তো দিতে হবে, বিআরটিএ চেয়ারম্যান বলেছেন তারা প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছেন। বিষয়টি সম্পর্কে খোঁজ নিয়ে বিআরটিএ একটি তালিকা তৈরি করছে।
পকেট কাটার সিটিং সার্ভিস ফিরিয়ে আনতে বিকালে বিআরটিএর সঙ্গে বৈঠকে বসেছে বাস মালিকরা। বৈঠকে বিষয়টি নিয়ে পর্যালোচনার নির্দেশনা দিয়েছেন মন্ত্রী।
ওবায়দুল কাদের বলেন, বৈঠকে পরিস্থিতি পর্যালোচনার পর সবাই যদি মনে করেন যে সিটিং সার্ভিস বন্ধের সিদ্ধান্ত জনস্বার্থে পূর্ণ বিবেচনা করা দরকার, বা আরও সংযোজন-সংশোধন করা প্রয়োজন, তাহলে সবাই মিলেই তা ঠিক করা হবে।
তিনি বলেন, আমাদের সবার লক্ষ্য সেবা করা। তবে আমার মনে হয় এমন কোনো সিদ্ধান্ত আমরা নিতে পারি না যে সিদ্ধান্তের কারণে জনগণ ভোগান্তির কবলে পড়ে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।