Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

মিরপুর রুটে অধিকাংশ বাসে মাস্তান রেখে যাত্রী শায়েস্তা চলছে

যাত্রী কল্যাণ সমিতির অভিযোগ

| প্রকাশের সময় : ১৯ এপ্রিল, ২০১৭, ১২:০০ এএম

বিশেষ সংবাদদাতা : ঢাকায় সিটিং সার্ভিস বন্ধে সরকারি অভিযানের মধ্যে মিরপুর রুটে অধিকাংশ বাসে মাস্তান প্রকৃতির লোক রেখে যাত্রী শায়েস্তা চলছে বলে অভিযোগ তুলেছে বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতি। সংগঠনটি বলছে, বাড়তি ভাড়া নিয়ে প্রশ্ন তুললে যাত্রীদের অপদস্থ করা হচ্ছে। গতকাল দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে এক সংবাদ সম্মেলনে এ অভিযোগ করেছেন যাত্রী কল্যাণ সমিতির মহাসচিব মো. মোজ্জাম্মেল হক চৌধুরী।
সিটিং সার্ভিস নৈরাজ্য বন্ধ করার পর যাত্রী-ভোগান্তি পর্যবেক্ষণ শেষে এ সংবাদ সম্মেলন করে সংগঠনটি। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে মোজ্জাম্মেল হক চৌধুরী বলেন, গত দুই দিনে নগরীর বিভিন্ন রুটে চলাচলকারী যানবাহনের প্রায় ৪০ শতাংশ রাস্তায় নামানো হয়নি। বাসে চলতে গিয়ে নারী, শিশু ও বয়োঃজ্যেষ্ঠ নাগরিকেরা অবর্ণনীয় দুর্ভোগে পড়েছেন। তিনি বলেন, বাসে সরকারি ভাড়ার তালিকা দেখতে চাওয়ায় বা তালিকা অনুযায়ী ভাড়া দিতে চাওয়ায় অনেক যাত্রীর সঙ্গে দুর্ব্যবহার এমনকি হাত তোলার মতো ঘটনা ঘটছে। যাত্রী বাড়তি ভাড়া নিয়ে প্রশ্ন তুললে তেড়ে এসে নানাভাবে অপদস্থ করা হচ্ছে। মিরপুর রুটে অধিকাংশ বাসে মাস্তান প্রকৃতির তিন-চারজন করে লোক রাখার দৃশ্য দেখা গেছে।
মোজ্জাম্মেল হক চৌধুরী বলেন, সিটিং সার্ভিস বন্ধের নামে ‘অঘোষিত’ পরিবহন ধর্মঘট চলছে। এ ধর্মঘটে যেসব বাস জড়িত, তাদের রুট পারমিট বাতিলসহ শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিতে হবে। একদিকে অতিরিক্ত যাত্রীবোঝাই, অন্যদিকে অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের কারণে যাত্রীদের মধ্যে তীব্র ক্ষোভ ও চাপা উত্তেজনা দেখা যাচ্ছে। নগরীতে যাত্রী-ভোগান্তি কমাতে জরুরি ভিত্তিতে পরিকল্পিত ও সমন্বিত উদ্যোগ গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন তিনি। যাত্রীদের সহনশীল হওয়ার আহŸান জানিয়ে সংবাদ সম্মেলনে নিরাপদ সড়ক চাইয়ের (নিসচা) চেয়ারম্যান চিত্রনায়ক ইলিয়াস কাঞ্চন বলেন, দুর্ভোগ হতে পারে, এটা মনে রেখে ভালো কিছু পাওয়ার জন্য এই দুর্ভোগ মেনে নিতে হবে। মানসিকতা তৈরি করতে হবে। আমরা অসহিষ্ণু হলে অভিযান বন্ধ হয়ে যেতে পারে। চিত্রনায়ক ইলিয়াস কাঞ্চন বলেন, এ রকম উদ্যোগ এর আগে অনেকবার নেয়া হয়েছিল, মাঝেমধ্যে হয়। পরে বাস্তবায়িত আর হয় না। ফলে উপকারের চেয়ে অপকার বেশি হয়। মানুষ মনে করে, কয়েক দিন পরেই ঠিক হবে। সরকারের প্রতি অনুরোধ, এ অভিযানের উদ্যোগ যেন অব্যাহত থাকে। যেসব বাস রাস্তায় নামছে না, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হোক। সিটিং সার্ভিস বন্ধের অভিযানের নামে ‘ইঁদুর বেড়াল খেলা’ চলছে বলে মন্তব্য করে সাংবাদিক আবু সাইদ খান বলেন, অভিযান শুরু হলে বাসগুলো লুকিয়ে রাখা হয়, রাস্তায় নামে না। ফলে দুর্ভোগ বাড়ে যাত্রীদের। এর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানান তিনি।
সংবাদ সম্মেলনে গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকী, নাগরিক সংহতির সাধারণ সম্পাদক শরীফুজ্জামান শরীফ প্রমুখ বক্তব্য দেন।
সংগঠনের এক পর্যবেক্ষণ প্রতিবেদনে বলা হয়, ঢাকা মহানগরে প্রতিদিন প্রায় ২ কোটি ২০ লক্ষ যাত্রী গণপরিবহন ব্যবহার করে। এখানে প্রতি ৪২৫০ যাত্রীর জন্য মাত্র একটি বাসের ব্যবস্থা রয়েছে। যার অধিকাংশই যাত্রী বহনের অনুপযোগী লক্কর-ঝক্কড়। যানজট, অব্যবস্থাপনা, যত-তত্র রাস্তার মাঝপথে যাত্রী উঠানো নামানো, চলন্ত বাসে যাত্রী উঠানো নামানো, তীব্র পরিবহন সঙ্কটে রাস্তায় ঘণ্টার পর ঘন্টা দাঁড়িয়ে থেকে বাস না পাওয়া।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ