পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
স্টাফ রিপোর্টার : হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের বিভিন্ন টয়লেট, ওয়াশরুম, ক্যানোপি এলাকার কারপার্কিং এলাকা ময়লা-আবর্জনায় ভরপুর। দুর্গন্ধ ও মলমূত্রের স্ত‚পের কারণে ব্যবহার করা সম্ভব হচ্ছে না। দেশের দূর-দূরান্ত থেকে আসা যাত্রীদের আত্মীয়স্বজন এসব টয়লেট ব্যবহার করতে না পারায় প্রায়ই তাদের বিপাকে পড়তে হয়। একটি স্পর্শকাতর গুরুত্বপূর্ণ আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের এই নাজুক অবস্থা দেখে অনেকেই অবাক হয়ে যান। এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট ইজারাদারদের কর্মী ও সিভিল অ্যাভিয়েশনে অভিযোগ করেও কোনো সুফল পাচ্ছেন না বলে অভিযোগ করেছেন ভোক্তভোগীরা। বিমানবন্দরের বহুতল কারপার্কিং এলাকায় গতকাল কথা হয় মানিকগঞ্জের সাটুরিয়া থেকে আসা জাহিদুর রহমান জাহিদের সাথে। তিনি অভিযোগ করেন, বহুতল কারপার্কিংয়ের টয়লেটগুলো ব্যবহার করার মতো নয়। মলমূত্রের দুর্গন্ধের কারণে বাথরুম করাতো দূরের কথা, সেখানে প্রবেশ করাই কষ্টকর। দম বন্ধ হওয়ার উপক্রম হয় ওই টয়লেটে ঢুকলে। তিনি জানান, সউদী আরব প্রবাসী ছোট ভাই জুনাইয়েদকে রিসিভ করতে পরিবারের পাঁচ সদস্যসহ তিনি বিমানবন্দরে আসেন গতকাল সকাল ১১টায়। ফ্লাইট আসতে বিলম্ব হওয়ার কারণে তাদের কারপার্কিং এলাকাতেই অপেক্ষা করতে হয়। তিনি আরো জানান, বহুতল কারপার্কিং এ যে খাবারে দোকান আছে সেখানে খাবারের দাম অনেক বেশি। গলা কাটা মূল্য আদায় করা হয় কোনো কিছু খেতে গেলে। এ ছাড়া পরিবেশ অত্যন্ত নোংরা। ওই কনফেকশনারিতে মশা মাছি ভর্তি। টয়লেট থেকে আসছে দুর্গন্ধ।
সরেজমিন দেখা গেছে, টয়লেটগুলো অপরিষ্কার। নিয়মিত পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন করার মতো কোনো কিছুই চোখে পড়েনি। টয়লেটে প্রবেশ করা তো দূরের কথা, পাশ দিয়ে হেঁটে যাওয়াও কষ্টকর। এ ছাড়া এসব টয়লেট থেকে দুর্গন্ধ বিমানবন্দরের ভিআইপিদের প্রবেশ পথ পর্যন্ত ছড়িয়ে পড়ছে। এ নিয়ে যেন কারো কোনো মাথা ব্যথা নেই। অন্যদিকে বিমানবন্দরের সামনে ক্যানাপি এলাকা ও বহুতল কারপার্কিং এলাকার যত্রতত্র ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে আছে ময়লা-আবর্জনা। কলার খোসা, বিস্কুট, চানাচুরের খালি প্যাকেট, বাদামের খোসা বিভিন্ন স্থানে ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে আছে।
দেখা গেছে, টয়লেট ইজারাদারের কর্মীরা ব্যবহারকারীদের কাছ থেকে ইচ্ছামাফিক টাকা আদায় করছেন। তাদের চাহিদা মোতাবেক টাকা দিতে অস্বীকার করলে কর্মীরা লোকজনের সাথে খারাপ ব্যবহার করে। ইজারাদারের কর্মীদের কাছে নাজেহাল হয়েছেন এমন অনেকেই ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। শনিবার সাড়ে ১১টার দিকে কুমিল্লার শাজাহান আহমেদের সাথে এ নিয়ে কথা কাটাকাটি হয় টয়লেটে ইজারাদারের এক কর্মীর সাথে।
শাজাহান জানান, টয়লেটে পানি নেই, ব্যবহারও করা সম্ভব হয়নি। দুর্গন্ধের কারণে নাকে মুখে রুমাল চেপে ধরেও টয়লেটে থাকা যায় না। দুর্গন্ধে পেটের নাড়িভুড়ি বের হওয়ার উপক্রম। টয়লেট ব্যবহার না করেও ওই কর্মীকে বাধ্য হয়ে ১০ টাকা দিতে হয়েছে। প্রতিবাদ করায় তাদের তিন-চারজন কর্মী দলবদ্ধ হয়ে তেড়ে আসে এবং নানা ধরনের অশালীন আচরণ করে।
জানা যায়, শফি অ্যান্ড ব্রাদার্স নামের একটি প্রতিষ্ঠানকে সিভিল অ্যাভিয়েশন কারপার্কিং এলাকা উজারা দিয়েছে। তবে ইজারাদার নিয়মিত টয়লেট ও অন্যান্য স্থান পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করে কিনা তা দেখভাল হচ্ছে না বলে অভিযোগ রয়েছে।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে সিভিল অ্যাভিয়েশনের সম্পত্তি বিভাগের একজন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, উজারাদার অত্যন্ত প্রভাবশালী। তার বিরুদ্ধে টু শব্দটি করার সাহস রাখেনি সিভিল অ্যাভিয়েশনের পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন কর্মকর্তা- কর্মচারীরা। প্রভাবশালীদের আশ্রয়-প্রশ্রয়ে ইজারাদার নানা অনিয়ম করছেন, তারপরও তার বিরুদ্ধে কোনো ধরনের ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে না। নেই কোনো জবাবদিহিতা।
বিমানযাত্রীদের কয়েকজন স্বজন গতকাল জানান, শুধু অপরিষ্কার-অপরিচ্ছন্নই নয়, বিমানবন্দর এলাকায় নিরাপত্তার নামেও হয়রানি করা হয়। নিরাপত্তা অজুহাতে বাড়াবাড়ি করেন এপিবিএনের সদস্যরা। আবার দর্শনার্থীরা প্রবেশ টিকেট কিনে ভেতরে প্রবেশকালে সিভিল অ্যাভিয়েশনের নিরাপত্তা সদস্যদের নানা হয়রানি মোকাবেলা করতে হয়।
এ ব্যাপারে বিমানবন্দরের প্রধান নিরাপত্তা কর্মকর্তা রাশিদা সুলতানার সাথে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি। তিনি মোবাইল ফোন রিসিভ করেননি। সিভিল অ্যাভিয়েশনের একাধিক নিরাপত্তা কর্মকর্তা বলেছেন, ম্যাডাম কারো ফোন রিসিভ করেন না।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।