Inqilab Logo

বুধবার, ০৩ জুলাই ২০২৪, ১৯ আষাঢ় ১৪৩১, ২৬ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

ইসলামের সাথে জঙ্গিবাদের কোনো সম্পর্ক নেই -স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী

| প্রকাশের সময় : ১৭ এপ্রিল, ২০১৭, ১২:০০ এএম


চট্টগ্রাম ব্যুরো : ইসলামকে ‘জঙ্গি ধর্ম’ করার জন্য চক্রান্ত চলছে বলে মন্তব্য করে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল বলেছেন, ইসলাম শান্তি ও মানবতার ধর্ম এর সাথে জঙ্গিবাদের কোনো সম্পর্ক নেই। বাংলাদেশে যারা জঙ্গি তৎপরতায় লিপ্ত তাদের সাথে আন্তর্জাতিক জঙ্গিবাদের সম্পৃক্ততা নেই দাবি করে তিনি বলেন, তারা সবাই দেশীয় জঙ্গি। তারা সব সময় ঘাপটি মেরে থাকে। সুযোগ পেলেই উপরে উঠে আসে। এরা বাইরে থেকে আসে না, বাইরে থেকে এসে এখানে কাজ করে না। গতকাল (রোববার) নগরীর সার্কিট হাউসে চট্টগ্রাম জেলা আইন-শৃঙ্খলা কমিটির বিশেষ সভায় একথা বলেন তিনি।
সভায় সম্প্রতি জঙ্গি তৎপরতা বৃদ্ধি, মাদক, যানজটসহ বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা করেন জনপ্রতিনিধি ও আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। জঙ্গিবাদকে বৈশ্বিক সমস্যা মন্তব্য করে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন বলেন, ইসলাম শান্তির ধর্ম, মানবতার ধর্ম। কোনো ধর্মেই মানুষ হত্যার স্থান নেই, সন্ত্রাসীদের স্থান নেই। ইসলাম ধর্মকে জঙ্গি ধর্ম করার জন্য চক্রান্ত চলছে। আজকে বিশ্বে কথা হচ্ছে ‘অল হিউম্যান আর নট টেরোরিস্ট, বাট অল টেরোরিস্ট আর মুসলিম।’ সে জায়গাটিতে নেয়ার জন্য এ ঘটনাগুলো ঘটছে। বাংলাদেশে যারা জঙ্গি তৎপরতায় লিপ্ত তারা সবাই এদেশের। আন্তর্জাতিক জঙ্গিবাদের সাথে তাদের কোনো সম্পর্ক নেই।
দেশকে অকার্যকর করার ও উন্নয়ন কর্মকাÐ বাধাগ্রস্ত করতে বিভিন্নভাবে জঙ্গিরা আত্মপ্রকাশ করে বলে মন্তব্য করেন তিনি। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আরও বলেন, বাংলাদেশের জঙ্গি কারা সেটা ভালোভাবে জানেন। ’৭১-এর পর থেকে দেশকে অকার্যকর করার জন্য যারা প্রচেষ্টা চালিয়েছে তারা বিভিন্নভাবে, বিভিন্ন রূপে ও বিভিন্ন সময়ে আত্মপ্রকাশের ঘটনা আমরা দেখেছি। সীতাকুÐের জঙ্গি আস্তানা ও বিভিন্ন সময়ে পরিবারের সদস্যদের জঙ্গিবাদে সম্পৃক্ত হয়ে যাওয়ার ধারণা থেকে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীকে পরিবারের তথ্য দেয়ার বিষয়ে গুরুত্বারোপ করে তিনি বলেন, জঙ্গিবাদ বন্ধে দেশের মানুষ এক জায়গায়। এ জঙ্গিদের বন্ধ করতে হবে, থামাতে হবে। পুলিশের সক্ষমতা বাড়ানোর জন্য বিভিন্ন জনপ্রতিনিধিদের উদ্যোগ গ্রহণের প্রস্তাব প্রসঙ্গে মন্ত্রী বলেন, নিরাপত্তা বাহিনী কাজ করছে বলে আইন-শৃঙ্খলা ‘যথেষ্ট পরিমাণ’ ভালো। পুলিশ এখন আগের চেয়ে অনেক দক্ষ।
মাদকের বিস্তার বাড়ছে উল্লেখ করে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, সীমান্ত দিয়ে ইয়াবা আসা বন্ধে মিয়ানমারের সঙ্গে কথা বলে কোনো সুফল পাওয়া যাচ্ছে না। ইয়াবা আমাদের দেশে তৈরি হয় না। আমাদের দেশে আমরা কোনো মাদকই তৈরি করি না। ইয়াবা মিয়ানমার থেকে আসে। রোহিঙ্গাদের মাধ্যমে হোক আর যেভাবেই হোক, ইয়াবা আসছে।
এক সময় ভারত থেকে ফেনসিডিল আসত। এই ফেনসিডিল আসা বন্ধে ভারত সরকারের সঙ্গে কথাবার্তা বলে সেখানে আমরা কিছুটা সফল হয়েছি।
তিনি বলেন, আমি নিজে টেকনাফে গিয়ে অনেক ব্যবস্থা নিয়েছি। ছয় মাস ভালো থাকে, আবার দেখি শুরু হয়।  সীমান্ত পার করে ইয়াবা যদি টেকনাফে বিক্রি হয় আমার কাছে যা ইনফরমেশন আছে তা ৫০ থেকে ৬০ টাকা। কক্সবাজার আসলে ১৫০, চট্টগ্রামে ২৫০ এবং ঢাকায় ৫০০ থেকে ৬০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। সেজন্যই আমরা মনে করি, একেবারে পুলিশ অ্যাকশন দিয়ে, মানুষকে ধরে জেলখানায় পুরে দিয়ে কিংবা তাদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করলেই মাদক ব্যবসা নিয়ন্ত্রণে আনা যাবে না, যে পর্যন্ত মানুষ সচেতন না হয়।
জেলা আইন-শৃঙ্খলা কমিটির সভাপতি ও জেলা প্রশাসক মো. সামসুল আরেফিনের সভাপতিত্বে এতে আরও বক্তব্য রাখেন নজরুল ইসলাম এমপি, সিএমপির উপ-কমিশনার এস এম মোস্তাইন হোসেন, চট্টগ্রামের পুলিশ সুপার নূরে আলম মিনা, র‌্যাব-৭ এর অধিনায়ক লে. কর্নেল মিফতাহ উদ্দিন আহমেদ, চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের যুগ্ম সম্পাদক চৌধুরী ফরিদ ও সিইউজের সাবেক সাধারণ সম্পাদক হাসান ফেরদৌস।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ