Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

মূর্তি অপসারণ মঙ্গল শোভাযাত্রা বাতিল না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবে-মজলিসের সমাবেশে শীর্ষ নেতৃবৃন্দ

মূর্তি ও রাম-বামদের বিরুদ্ধে কঠিন আন্দোলনের ডাক দেয়া হবে

| প্রকাশের সময় : ১৬ এপ্রিল, ২০১৭, ১২:০০ এএম

স্টাফ রিপোর্টার : সুপ্রিমকোর্টের সামনে থেকে মূর্তি অপসারণ, মঙ্গল শোভাযাত্রা বাধ্যতামূলকের সিদ্ধান্ত বাতিল এবং সন্ত্রাস-জঙ্গিবাদ নির্মূলের দাবীতে বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস আয়োজিত জাতীয় সমাবেশে বিভিন্ন ইসলামী দলের শীর্ষ নেতৃবৃন্দ এবং প্রখ্যাত উলামায়ে কেরাম বলেছেন, বাংলাদেশের শতকরা ৯০ ভাগ মুসলিম। এদেশের জনগণ ধর্মীয় সেন্টিমেন্ট বিরোধী কিছু হলে তারা গর্জে উঠে। এটাই হচ্ছে এদেশের ইসলামী জনতার চেতনা।
তাই সর্বোচ্চ বিচারালয় সুপ্রিমকোর্ট প্রাঙ্গণে ভিনদেশের, ভিন্ন ধর্মের গ্রীক দেবীর মূর্তি স্থাপন এবং নববর্ষ উদযাপন উপলক্ষে হিন্দু ধর্মীয় পূজার মঙ্গল শোভাযাত্রা মুসলমানদের উপর চাপিয়ে দেয়ায় এদেশের ইসলামী জনতা গর্জে উঠেছে। অবিলম্বে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য অনুযায়ী মূর্তি অপসারণ এবং হিন্দু ধর্মের মঙ্গল শোভাযাত্রা বাতিলের ব্যবস্থা নিতে হবে। নেতৃবৃন্দ ও উলামায়ে কেরাম বলেন, মূর্তি ও মঙ্গল শোভাযাত্রার পক্ষ নিয়ে দু’চারজন রাম-বাম মনগড়া বক্তব্য দিচ্ছে। এসব বক্তব্য তাদের ধর্মীয় জ্ঞানের দেওলিয়াত্ব প্রমাণ করে। তাছাড়া এসব রাম-বামদের বক্তব্য ধর্মপ্রাণ জনগোষ্ঠী আমলেই নেয়না। তারা বুঝে এসব মুসলিম নামধারী দালালরা ইসলাম ধর্মের যে বিষয়ে বিরোধীতা করে এটাই ইসলামের সঠিক কথা। এসব দালালরা মূর্তি ও মঙ্গল শোভাযাত্রার পক্ষে কথা বলে ইসলামী আকীদার বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে মুরতাদ হয়ে গেছে। ইসলামের আইনে এদের শাস্তি মৃত্যুদÐ। তাই এদের বিরুদ্ধে তীব্র আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে। নির্বাচনে জামানত হারানো হাসানুল হক ইনু ও রাশেদ খান মেনন সাহেবেরা আওয়ামীলীগের কাঁধে ভর করে ক্ষমতায় বসে যখন তখন ইসলামের বিরুদ্ধে মিথ্যাচার করছে। এরা একদিকে ইসলাম ও ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের হেয় প্রতিপন্ন করছে অপরদিকে আওয়ামীলীগের ভোটার কমিয়ে সরকারী দলের চরম ক্ষতি করছে। এটা প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামীলীগকে অনুধাবন করতে হবে। আওয়ামীলীগকে এটাও বুঝতে হবে জামায়াত যেমন বিএনপির জন্য ভয়ংকর তেমনি বাম-রামরা আওয়ামীলীগের জন্য ভয়ংকর।
নেতৃবৃন্দ বলেন, কওমী সনদের সরকারী স্বীকৃতি ছাত্রদের নাগরিক অধিকার। প্রধানমন্ত্রীর এই ঘোষণার পরপরই কিছু রাম-বাম ও কথিত সুশীল নামধারী দালালদের গাত্রদাহ শুরু হয়েছে। তাই অবিলম্বে ইনু-মেননদের মন্ত্রিত্ব থেকে অপসারণ করে ইসলামের বিরুদ্ধে আস্ফালন বন্ধ করতে হবে।
গতকাল বিকালে রাজধানীর গুলিস্তানের কাজী বশির মিলনায়তনে দলের আমীর প্রিন্সিপাল আল্লামা হাবীবুর রহমানের সভাপতিত্বে ও মহাসচিব মাওলানা মাহফুজুল হকের পরিচালনায় সমাবেশে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলনের আমীরে শরীয়ত হাফেজ মাওলানা শাহ আতাউল্লাহ, ইসলামী ঐক্যজোটের চেয়ারম্যান মাওলানা আব্দুল লতিফ নেজামী, জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের মহাসচিব মাওলানা নূর হোসাইন কাসেমী, ইসলামী ঐক্য আন্দোলনের আমীর মাওলানা ড. ঈসা শাহেদী, জাতীয় পার্টির যুগ্ম-মহাসচিব এহিয়া চৌধুরী এমপি, ইসলামী আন্দোলনের সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব অধ্যাপক মাওলানা এটি এম হেমায়েত উদ্দীন, মুসলিম লীগের মহাসচিব কাজী আবুল খায়ের, মধুপুরের পীর মাওলানা আব্দুল হামিদ, জামিয়া জাকারিয়ার মহাপরিচালক মুফতি মিজানুর রহমান সাঈদ, বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলনের মহাসচিব মাওলানা হাবীবুল্লাহ মিয়াজী, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের সিনিয়র নায়েবে আমীর মাওলানা ইসমাঈল নূরপুরী, মাওলানা আফজালুর রহমান, মাওলানা রেজাউল করিম জালালী, মাওলানা আলী উসমান, যুগ্ম-মহাসচিব মাওলানা মামুনুল হক, মাওলানা জালালুদ্দীন আহমদ, মাওলানা আতাউল্লাহ আমীন, সাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা কোরবান আলী, মাওলানা আব্দুল আজিজ, কেন্দ্রীয় বায়তুলমাল ও অফিস সম্পাদক মাওলনা আজিজুর রহমান হেলাল, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক মাওলানা মুহসিনুল হাসান, সহ-প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক মাওলানা হারুনুর রশীদ ভূঁইয়া, আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক মাওলানা হোসাইন হাবীবুর রহমান, ঢাকা মহানগরীর সাধারণ সম্পাদক মাওলানা রুহুল আমীন, ছাত্র মজলিসের কেন্দ্রীয় সভাপতি মুহাম্মদ আব্দুর রহীম সাঈদ ও যুব মজলিসের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মাওলনা আবুল হাসানাত বেলালী প্রমুখ।
আল্লামা নূর হোসাইন কাসেমী বলেন, ইসলামের তাহযীব তামাদ্দুন ধ্বংস করে হিন্দুয়ানী সংস্কৃতি প্রতিষ্ঠার চক্রান্ত চলছে। এর ধারাবাহিকতায় সুপ্রিমকোর্ট প্রাঙ্গণে স্থাপিত মূর্তি রমজানের পূর্বেই অপসারণ করতে হবে এবং মঙ্গল শোভাযাত্রা বাধ্য করার সিদ্ধান্ত বাতিল করতে হবে। অন্যথায় কঠিন আন্দোলনের ডাক দেয়া হবে।
মাওলানা শাহ আতাউল্লাহ বলেন, গ্রীক দেবী একটি মূর্তি একে সম্মান দেখালে ঈমান নষ্ট হয়ে যাবে। এ মূর্তি যিনি বসিয়েছেন মূর্তির সাথে তাকেও অপসারণ করতে হবে।
মাওলানা আব্দুল লতিফ নেজামী বলেন, কোনো জাতির সংস্কৃতি অধিকাংশ জনগোষ্ঠীর আচার-আচরণ। এদেশের সংখ্যাগরিষ্ট লোক মুসলমান সুতরাং মুসলিমদের সংস্কৃতিই এদেশের সংস্কৃতি।
দলের মহাসচিব মাওলানা মাহফুজুল হক বলেন, ইসলামে জিহাদ একটি পবিত্র ইবাদত। নামায রোযা যেমনিভাবে ফরজ তেমনিভাবে সময়ের প্রেক্ষাপটে জিহাদও মুমিনদের উপর ফরজ করা হয়েছে। জিহাদ সম্পর্কে কুরআন ও হাদিসের অসংখ্য জায়গায় বর্ণিত হযেছে। জিহাদ এসেছে শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য সুতরাং জিহাদের সাথে জঙ্গিবাদের সামান্যতম সম্পর্ক নেই। ইসলামের প্রকৃত শিক্ষা না থাকায় সরলপ্রাণ মুসলমান ও তরুণ প্রজন্ম জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাসে জড়িয়ে পড়ছে। তাই জঙ্গিবাদ, সন্ত্রাসবাদ ও উগ্রবাদের বিরুদ্ধে সকলকে ঐক্যবদ্ধভাবে রূখে দাঁড়াতে হবে। একই সাথে এই বিষয়ে ইসলামের শিক্ষাকে শহরে বন্দরে, গ্রামে-গঞ্জে, হাটবাজারে ও মাহফিলে প্রচারের ব্যবস্থা নিতে হবে ইমাম খতীব ওয়ায়েজীন এবং উলামায়ে কেরামকে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ