Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

ভেজাল তেলের ব্যবসা জমজমাট

ফিলিং স্টেশনে নামকাওয়াস্তে অভিযান

| প্রকাশের সময় : ১৬ এপ্রিল, ২০১৭, ১২:০০ এএম

বিশেষ সংবাদদাতা : দেদারছে মানহীন ভেজাল জ্বালানি তেল বিক্রি হচ্ছে দেশের বিভিন্ন ফিলিং স্টেশনে। প্রশাসনের জ্ঞাতসারেই এই ভেজাল তেলের ব্যবসা জমজমাট বিধায় এসব বন্ধে সাঁড়াশি কোন অভিযান নেই বললেই চলে। নামকাওয়াস্তে কিছু অভিযান চললেও আইনের ফাঁক-ফোকর দিয়ে ভেজাল তেল ব্যবসায়ীরা পার পেয়ে যাচ্ছে।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে বাংলাদেশ স্ট্যান্ডার্ডস অ্যান্ড টেস্টিং ইনস্টিটিউশনের (বিএসটিআই) পক্ষ থেকে জানানো হয়, ইতোমধ্যেই এসব অভিযোগে বেশ কয়েকটি ফিলিং স্টেশনের বিরুদ্ধে ঢাকার সিএমএম আদালতে মামলা করেছে বিএসটিআই। নাম প্রকাশ না করার শর্তে প্রতিষ্ঠানটির এক কর্মকর্তা জানান, জ্বালানি তেল বাজারজাতে বিএসটিআই-এর সনদ বাধ্যতামূলক হলেও তা নিচ্ছে না প্রতিষ্ঠানগুলো।
এদিকে পরিবহন মালিকদের অভিযোগ হচ্ছে- দেশের বিভিন্ন ফিলিং স্টেশন মানহীন ভেজাল জ্বালানি তেল বিক্রি করায় তা ব্যবহার করে গাড়ীর ইঞ্জিন নষ্ট ও বিকল হয়ে যাচ্ছে। এ ব্যাপারে মালিক সমিতির পক্ষ থেকে বিষয়টি জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগকে জানানো হয়েছে। কিন্ত ভেজাল তেল বিক্রি বন্ধে কার্যকর কোন পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে না।
বিএসটিআই কর্মকর্তারা জানান, জ্বালানি তেল ব্যবসায় ওজনে কম দেয়ার অভিযোগ দীর্ঘদিনের। কিন্তু এবার জ্বালানি তেল পরীক্ষা করে তাতে ভেজাল পাওয়া গেছে। ডিজেলের বিশুদ্ধতার গুরুত্বপূর্ণ নির্দেশক হলো এর সিটেন নাম্বার বা দাহ্যতার সময়। জাতীয় মান অনুযায়ী ডিজেলে সিটেন নাম্বার থাকার কথা সর্বোচ্চ ৪৫। অথচ সংগৃহীত নমুনা পরীক্ষা করে পাওয়া গেছে ৫২ দশমিক ২০।
শুধু সিটেন নাম্বার নয়, ডিজেলের ১৪টি প্যারামিটার পরীক্ষা করে ১১টিতেই অসামঞ্জস্যতা পাওয়া গেছে। একইভাবে পেট্রোলের সর্বোচ্চ বয়েলিং পয়েন্ট ২১০ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড। কিন্তু পরীক্ষা করে পাওয়া গেছে ২৪৮ দশমিক ৭০ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড। পরীক্ষায় পেট্রলের ১৪টি প্যারামিটারের মধ্যে সাতটিতে ত্রæটি পাওয়া গেছে। এছাড়া অকটেনের মোট ১৩টি প্যারামিটার পরীক্ষা করে সাতটিতেই নেতিবাচক ফল পাওয়া গেছে।
বিএসটিআই সূত্রে জানা গেছে, জ্বালানি তেলের মান খারাপ পাওয়ায় ১৯৮৫ সালের বিএসটিআইয়ের অর্ডিন্যান্স ও সংশোধনী আইন, ২০০৩-এর ২৪ ধারা অনুযায়ী ১৫টি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে।
ভেজাল ও মানহীন জ্বালানি তেল বিক্রির অভিযোগে যে সব প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে সেগুলো হচ্ছে- রাজধানীর শাহবাগের ১৭/১, কাজী নজরুল ইসলাম এভিনিউর মেসার্স মেঘনা মডেল সার্ভিস সেন্টার, শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ সরণির মেসার্স শিকদার ফিলিং অ্যান্ড সার্ভিস সেন্টার, মাদারীপুর জেলার মেসার্স হাজি হাসমত ফিলিং স্টেশন, বাগেরহাটের মেসার্স জিএম ব্রাদার্স ফিলিং স্টেশন, রাজশাহীর মেসার্স সুমী ফিলিং স্টেশন, মেসার্স লতা ফিলিং স্টেশন ও বরিশালের ইসরাইল তালুকদার ফিলিং স্টেশন।
বিএসটিআই সূত্র জানায়, অকটেন, পেট্রোল ও ডিজেল তিনটি জ্বালানি পণ্যই বিএসটিআইয়ের বাধ্যতামূলক পণ্য। কিন্তু বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ মন্ত্রণালয়ের অধীনস্থ বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশন (বিপিসি) পণ্য তিনটির লাইসেন্স নিচ্ছে না। এছাড়া বেসরকারি ১৩টি প্রতিষ্ঠানও মান সনদ গ্রহণ করছে না। মান ছাড়াই জ্বালানি তেল বিক্রি করছে তারা।
জানতে চাইলে বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশনের পরিচালক (বিপণন) মীর আলী রেজা বলেন, জ্বালানি তেলের মান সনদ কারা নেবে সেটি পরিষ্কার নয়। এছাড়া জাতীয় মান অনুযায়ী অকটেন ও পেট্রোলে যে নম্বর রয়েছে, সেটিও আন্তর্জাতিক মানে তৈরি করা হয়নি। তবে বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের মান সনদ নেয়া উচিত।
সার্বিক বিষয়ে জানতে চাইলে বিএসটিআইয়ের ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা বলেন, জ্বালানি তেলের মান সনদ নেয়ার ব্যাপারে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ মন্ত্রণালয় এবং বিপিসিকে চিঠি দেয়া হয়েছে। পাশাপাশি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোকেও চিঠি দেয়া হয়।



 

Show all comments
  • Md. Mohiuddin ১৬ এপ্রিল, ২০১৭, ৭:১৫ এএম says : 0
    advertise with wizard ai ad ta amar computer theke jai na ami paper porte pari na
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ