পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
বøুমবার্গ : ইসরাইলের সাথে সম্পর্ক আরো গভীর করার লক্ষ্যে জুলাই মাসে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ইসরাইল সফরে যাচ্ছেন। মোদি সে দেশ সফরে যাওয়ার আগে ভারত তেল আবিবের সাথে দু’টি প্রতিরক্ষা চুক্তি স্বাক্ষর করতে চলেছে। এ চুক্তির মধ্যে রয়েছে ট্যাংক বিধ্বংসী ক্ষেপণাস্ত্র ও নৌ-বিমান প্রতিরক্ষা অস্ত্র ব্যবস্থা ক্রয় যার আওতায় ভারতকে ৮ হাজার ক্ষেপণাস্ত্র দেবে ইসরাইল। ওয়াকিবহাল মহল জানান, ইসরাইলে ভারতের কোনো প্রধানমন্ত্রীর এই প্রথম সফরের সিদ্ধান্ত থেকে আভাস পাওয়া যায় যে, ভারতের সাথে ইসরাইলের সামরিক সহযোগিতার সম্পর্ক নতুন উচ্চতায় উপনীত হয়েছে। শুধু তাই নয়, তা ভারতের সাথে ইসরাইলি অস্ত্রের বৃহত্তর ক্রেতার সম্পর্ককে ছাড়িয়ে গেছে।
রাজনৈতিক ঝুঁকি প্রতিষ্ঠান ইউরেশিয়া গ্রæপের সিনিয়র এশিয়া বিশ্লেষক শৈলেশ কুমার বলেন, মোদির এ সফর হবে এক মাইলফলক। উভয় দেশের কর্মকর্তারা মনে করেন যে, তারা সন্ত্রাসবাদের অভিন্ন হুমকির সম্মুখীন। যুক্তরাষ্ট্রের সাথে সম্পর্ক আরো গভীর করার লক্ষ্যে মার্কিন-ইসরাইল বন্ধুত্বের প্রেক্ষিতে ইসরাইলের সাথে কাজ করার ওপর গুরুত্ব দিচ্ছেন মোদি। উল্লেখ্য, ১৯৯২ সালে ভারত ইসরাইলের সাথে কূটনৈতিক সম্পর্ক প্রতিষ্ঠা করে। ১৯৯৭ সালে ইসরাইলের প্রেসিডেন্ট এজার ওয়াইজম্যান ভারত সফর করেন। কোনো ইসরাইলি প্রেসিডেন্টের সেই প্রথম ভারত সফর। অন্যদিকে ভারতের প্রেসিডেন্ট প্রণব মুখোপাধ্যায় ২০১৫ সালের অক্টোবরে ইসরাইল সফর করেন। কোনো ভারতীয় প্রেসিডেন্টের সেই প্রথম ইসরাইল সফর।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওয়াকিবহাল মহল জানান, ভারতীয় সেনাবাহিনীর জন্য স্পাইক ট্যাংক বিধ্বংসী ক্ষেপণাস্ত্র এবং নৌবাহিনীর জন্য বারাক-৮ বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা কেনার বিষয় দু’মাসের মধ্যে চূড়ান্ত হবে। চুক্তির আর্থিক পরিমাণ ১৫০ কোটি ডলার। চুক্তি স্বাক্ষরের দু’বছর পর থেকে ৮ হাজার ক্ষেপণাস্ত্রের সরবরাহ শুরু হবে।
ইসরাইলের সাথে অস্ত্র ক্রয়ের এ চুক্তি হলো চীন ও পাকিস্তানের সাথে উত্তেজনা বৃদ্ধির প্রেক্ষাপটে ২০২৫ সালের মধ্যে ২৫০ বিলিয়ন ডলার অর্থ ব্যয়ে মোদির সশস্ত্র বাহিনীর আধুনিকায়নের অংশ।
অস্ত্র বাণিজ্য
২০১৬ থেকে আগের তিন আর্থিক বছরে ভারত ইসরাইল থেকে ১০টি চুক্তির আওতায় ১শ’ কোটি ডলারের অস্ত্র কেনে। উল্লেখ্য, যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়া ভারতের কাছে প্রথম ও দ্বিতীয় বৃহৎ অস্ত্র বিক্রয়কারী দেশ। ভারতের কাছে অস্ত্র বিক্রেতা হিসেবে ইসরাইলের স্থান তৃতীয় স্থানে। তবে ইসরাইলি অস্ত্রের সর্ববৃহৎ ক্রেতা ভারত। প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র নিতিন ওয়াকংকর এ চুক্তি সম্পর্কে কোনো মন্তব্য করতে অস্বীকার করেন।
আর্নস্ট অ্যান্ড ইয়ং-এ মহাকাশ ও গবেষণার নয়াদিল্লিভিত্তিক ভাইস প্রেসিডেন্ট অংকুর গুপ্ত বলেন, ভারত-ইসরাইলের সম্পর্ক সব সময়ই শক্তিশালী ছিল। কিন্তু তা কখনো প্রকাশ করা হয়নি। যেহেতু ইসরাইল ভারতের অস্ত্র ও সংশ্লিষ্ট সর্বাধুনিক প্রযুক্তি সরবরাহকারী সে কারণে এ সম্পর্ক অত্যন্ত জোরালো ও মূল্যবহ।
মোদি ২০১৪ সালে ক্ষমতায় আসার পর তার সরকার ইসরাইলের সাথে ভারতের সম্পর্ক নিয়ে কথা বলা সংক্রান্ত রাখঢাক বাদ দেয়।
বিবেকানন্দ আন্তর্জাতিক ফাউন্ডেশনের জ্যেষ্ঠ গবেষণা সহযোগী আলভিত সিং নিংথুজাম বলেন, ভারত ক্রমশই মধ্যপ্রাচ্য বিষয়ে তার ঐতিহ্যবাহী ও মতাদর্শভিত্তিক পররাষ্ট্রনীতি দৃষ্টিভঙ্গি থেকে সরে আসছে। এটা পরিষ্কার বার্তা যে, ইসরাইলের সাথে ঘনিষ্ঠ হতে ভারতের আর দ্বিধা নেই। ভারত স্বাধীন পররাষ্ট্রনীতি অনুসরণ করে এবং এ অঞ্চলের কোনো দেশের সাথে সম্পর্কের বিনিময়ে সে ইসরাইলের সাথে সম্পর্ক প্রতিষ্ঠা করছে না।
শত কোটি ডলারের চুক্তি
ভারত গত সপ্তাহে মাঝারি ও দূরপাল্লার ভূমি থেকে আকাশে নিক্ষেপযোগ্য ২শ’ কোটি ডলারের ক্ষেপণাস্ত্র ক্রয় চুক্তি চূড়ান্ত করে। তারপর এ ক্ষেপণাস্ত্র চুক্তি হতে যাচ্ছে।
ইসরাইলের রাফায়েল ও আইএআই/এলটা এবং ভারত ইলেকট্রনিক্স লি:, ভারত ডায়নামিক্স লি: ও লারসেন অ্যান্ড টারবোর সহযোগিতায় ইসরাইলি এয়ারক্র্যাফট ইন্ডাস্ট্রিজ (আইএআই) ও ভারতের প্রতিরক্ষা গবেষণা ও উন্নয়ন সংস্থা ভারতের সেনাবাহিনীর জন্য মাঝারি পাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র তৈরি করেছে।
অ্যারোস্পেস পরিচালক অনুরাগ গার্গ বলেন, প্রতিবেশী দেশগুলোর এক্ষেত্রে যে অবস্থায় আছে সে প্রেক্ষিতে এ ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবস্থা আমাদের কৌশলগত প্রতিরক্ষা সক্ষমতা বৃদ্ধিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।
এ উভয় চুক্তিই হচ্ছে স্থানীয় উৎপাদন জোরদারের লক্ষ্যে মোদির ‘মেক ইন ইন্ডিয়া’ কর্মসূচির অংশ।
ব্রæকিংস ইন্ডিয়াতে পররাষ্ট্রনীতি ফেলো ধ্রæব জয়শংকর বলেন, ভারত-ইসরাইল সম্পর্ক প্রতিষ্ঠার ২৫তম বার্ষিকীতে মোদির ইসরাইল সফর অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এ সফর দু’দেশের সম্পর্ককে উন্মুক্ত করে দিতে যাচ্ছে। আমরা ভারত ও ইসরাইলের মধ্যে সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে বলে আশা করতে পারি, তা শুধু প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রে নয়, হোমল্যান্ড সিকিউরিটি, ফার্মাসিউটিক্যালস, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও পর্যটন ক্ষেত্রেও।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।