Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

অভ্যন্তরীণ ব্যাপারে কারো হস্তক্ষেপ বাংলাদেশের জনগণ মেনে নেবে না -খালেদা জিয়া

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১৪ এপ্রিল, ২০১৭, ৭:০৯ পিএম

স্টাফ রিপোর্টার : নতুন বাংলা বছরের দেশবাসীকে শুভেচ্ছা জানিয়ে বাংলাদেশের ‘অভ্যন্তরীণ ব্যাপারে কারো হস্তক্ষেপ’ জনগণ মেনে নেবে না বলে হুশিয়ারি দিয়েছেন খালেদা জিয়া।

আজ শুক্রবার বিকালে দলের বর্ষবরণ অনুষ্ঠানে এক সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে বিএনপি চেয়ারপার্সন এই হুশিয়ারি দেন।

তিনি বলেন, বাংলাদেশের অবস্থা দেখে অনেকে এগিয়ে আসতে চায় অভ্যন্তরীণ ব্যাপারে হস্তক্ষেপ করার জন্য এবং বাংলাদেশের উন্নয়নের নামে দেশের অভ্যন্তরে ঢুকে দেশকে দুর্বল করার জন্য।

বাংলাদেশে যখন ৮ কোটি লোক ছিলো নিজেরা ঐক্যবদ্ধভাবে যুদ্ধ করে দেশ স্বাধীন করেছিলো। আজকে ১৬/১৭ কোটি লোক ঐক্যবদ্ধ, তাদের কারোর সাহায্যের প্রয়োজন নাই। আমরা স্পষ্ট ভাষায় বলতে চাই, আমরা সকলকে বন্ধু হিসেবে দেখতে চাই, কিন্তু কেউ যদি আমাদের বন্ধু হয়ে প্রভু হতে চায়, সেটা আমরা কখনো মেনে নেবো না, মানবো না। কারো প্রভুত্ব বাংলাদেশের মানুষ স্বীকার করবে না।

নতুন বছর সকলের জন্য শুভ হবে কামনা করে দেশবাসীসহ নেতা-কর্মীদের অভিনন্দন জানান খালেদা জিয়া।

তিনি বলেন, নববর্ষ যেন বাংলাদেশের মানুষের মনের সত্যিকারের প্রত্যাশা পূরণ করতে পারে। আমরা কী চাই? আমরা চাই গণতন্ত্র, আমরা চাই উন্নয়ন, আমরা চাই শান্তি, আমরা চাই জনগণের কল্যাণ, প্রতিটি মানুষের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করা, শিক্ষা সুযোগ প্রদান ও স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিত করা।

তাই গণতন্ত্র ও জনগণের কল্যাণের জন্য প্রয়োজন জাতীয় ঐক্য। বিএনপি সবসময়ে জনগণের কল্যাণ ও জাতীয় ঐক্যের বিশ্বাস করে। আমরা ঐক্যবদ্ধ থাকলে দেশের উন্নয়ন সম্ভব। আমরা দেশ থেকে বিদায় করবো সন্ত্রাস, গুম-খুন-হত্যা ও জঙ্গি হামলা বিদায় করবো। বিদায় করবো নানারকম ষড়যন্ত্র। এসব বিদায় করে দেশে প্রতিষ্ঠা করবো শান্তি ও সুশাসন।

নয়া পল্টনে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে ‘জাতীয়তাবাদী সামাজিক সাংস্কৃতিক সংস্থা-জাসাস’ এর আয়োজনে বাংলা নববর্ষ-১৪২৪ উপলক্ষে এই অনুষ্ঠান হয়।

দুপুর থেকে নয়া পল্টনের সড়কে হাজার হাজার নেতা-কর্মীর উপস্থিতিতে পহেলা বৈশাখের অনুষ্ঠান সমাবেশে রূপ নেয়। বিকাল সাড়ে ৪টায় সুতির শাড়ি পরিহিতা খালেদা জিয়া গাড়ি থেকে নেমে হাজার হাজার নেতা-কর্মীদের উদ্দেশ্যে হাত নেড়ে নববর্ষের শুভেচ্ছা জানান।

বর্ণাঢ্য আয়োজনে তবলা, হারমোনিয়াম, ডুগডুগি, বাঁশিসহ নানা বাদ্যযন্ত্রের মূর্ছনায় শুরু হয় পহেলা বৈশাখের জাসাসের এই অনুষ্ঠান। অনুষ্ঠানে জাসাস শিল্পীরা ভাটিয়ালী, দেশাত্মবোধক, বাউল গান পরিবেশন করেন।

বিএনপি চেয়ারপার্সন দলীয় নেতা-কর্মীদের আহবান জানিয়ে বলেন, আজকে প্রয়োজন ঐক্যের, প্রয়োজন শান্তির, প্রয়োজন কল্যাণের। আসুন বাংলা নতুন বছরে আমরা আজকে শপথ করি, দেশের মানুষের দুঃখ-দুর্দশা দূর করবো এবং জনগণের কল্যাণ করবো।

দেশের মানুষ কষ্টে আছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, কয়েকদিন আগের যে বৃষ্টি ও বাইর থেকে পানি এসে আমাদের হাওড় অঞ্চলের ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। সেজন্য গরীব কৃষকদের পাশে গিয়ে আমাদের দাঁড়াতে হবে।তাদের সাহায্য করতে হবে তারা যেন এই দুর্যোগ কাটিয়ে উঠতে পারে।

খালেদা জিয়া বলেন, ‘আমাদের পানি সমস্যা একটা বড় সমস্যা। সামনে শুকনো মৌসুম আসছে, এই মৌসুমে আমাদের পানির প্রয়োজন। সেজন্য আমরা বলতে চাই, আমাদের যে পানির প্রাপ্য যে পানি আমরা চাই। আমরা কারো কাছে দয়া চাচ্ছি না, কিন্তু আমরা আমাদের যতটুকু অধিকার, সেই অধিকারটুক চাই।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সদ্য সমাপ্ত ভারত সফরের প্রতি ইংগিত করে তিনি বলেন, বর্তমান স্বঘোষিত প্রধানমন্ত্রী বেরিয়ে এসেছেন কিন্তু নিজের দেশের মানুষের স্বার্থের কথা, নিজের দেশের মানুষের অধিকারের কথা বলতে পারেননি, কিছু করতে পারেননি। বরং আজকে তিনি নিজের দেশের মানুষের জন্য কিছু না করে দেশের মানুষের স্বার্থের কথা কিছু চিন্তা না করে নিজের দেশের সব কিছু অন্যের কাছে দিয়ে এসেছেন, তার বিনিময়ে কিছুই আনতে পারেননি।

তিনি বলেন, আজকে এতোগুলো চুক্তি ও এমইউ হয়েছে। আমরা বলতে চাই, যদি তিনি(শেখ হাসিনা) সাহস করে শুধু একটা কথা বলতেই পারতেন, যে বলতে পারতেন হ্যাঁ চুক্তি ও সমঝোতাগুলো আমার দেশের সাথে আলাপ করে আমরা করবো। কিন্তু আজকে তিস্তার পানির ন্যায্য হিস্যা দেন, তাহলে আমি সমঝোতা করবো, তা নাহলে করবো না। এটা বললে আমরা সবাই তার পাশে থেকে সাহস ও সমর্থন জানাতাম।

বেগম খালেদা জিয়া বলেন, দেশের জন্য, দেশের মানুষের জন্য সংগ্রাম যদি করতে হয়, আমরা সেই সংগ্রাম করবো ইনশাল্লাহ এবং আমরা বিজয়ী হবো।

অনুষ্ঠানে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, রুহুল কবির রিজভীও বক্তব্য রাখেন।

জাসাস সভাপতি অধ্যাপক মামুন আহমেদের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক চিত্র নায়ক হেলাল খানের পরিচালনায় অনুষ্ঠানে বিএনপির খন্দকার মোশাররফ হোসেন, তরিকুল ইসলাম, মাহবুবুর রহমান, মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, মোহাম্মদ শাহজাহান, ইনাম আহমেদ চৌধুরী, এজেডএম জাহিদ হোসেন, আহমেদ আজম খান, নিতাই রায় চৌধুরী, আমানউল্লাহ আমান, গাজী মাজহারুল আনোয়ার, আতাউর রহমান ঢালী, খায়রুল কবীর খোকন, হাবিবউন নবী খান সোহেল, ফজলুল হক মিলন, সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স, শামা ওবায়েদ, সানাউল্লাহ মিয়া, মাসুদ আহমেদ তালুকদার, নুরী আরা সাফা, আজিজুল বারী হেলাল, আমিনুল হক, হেলেন জেরিন খান, আমিরুল ইসলাম খান আলীম, তাইফুল ইসলাম টিপু, নিপুণ রায় চৌধুরী, সাইফুল ইসলাম নিরব, সুলতান সালাহউদ্দিন টুকু, মোরতাজুল করীম বাদরু, শফিউল বারী বাবু, আবদুল কাদের জুয়েল, রাজীব আহসান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

জাসাসের চিত্র নায়ক আশরাফউদ্দিন উজ্জ্বল, বাবুল আহমেদ, শায়রুল কবির খান, মনিরুজ্জামান মুনির, আহসান উল্লাহ চৌধুরী, সালাহউদ্দিন ভুঁইয়া শিশির, সানাউল হক, সিবা সানু প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

পরে খালেদা জিয়া বর্ষবরণের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান উপভোগ করেন বিকাল সাড়ে ৫টায় গুলশানের উদ্দেশ্যে রওনা হন।



 

Show all comments
  • মিলটন ১৫ এপ্রিল, ২০১৭, ৭:২২ এএম says : 0
    ঠিক
    Total Reply(0) Reply
  • Nur- Muhammad ১৫ এপ্রিল, ২০১৭, ১১:৫৫ এএম says : 0
    মাননীয় সাবেক প্রধানমন্রী, আপনাকে ও নব বর্ষের প্রাণ ঢালা শুভেচ্ছা। স্বাধীনতার পর আমরা পাকিস্তানিদের হস্তক্ষেপ হতে বাঁচছি। কিন্তু পাশের দেশের অযাচিত হস্তক্ষেপ হতে বাঁচতে পারছি না। ২০১৪ সালে সারা বিশ্ব আপনার তথা জনগণের আন্দোলনকে সমর্থন জানালো কিন্তু পাশের দেশ ভোটারবিহীন সরকারকে সায় দিয়ে ক্ষমতায় বসালো। এই ভোটারবিহীন সরকার ই আজ জনগণের মতামতকে উপেক্ষা করে চুক্তি করছে। আপনি বলছেন এই চুক্তি রিভিউ হবে। জনগণ চুক্তি সহ সকল কিছুর ই রিভিউ চায়। তাই এখন ই গণ আন্দোলনের ডাক দিন। জনগণকে জুলুম অত্যাচার থেকে বাঁচতে দিন। জনগণ চায় ভোটাধিকার। চায় জনগণের এমপি, মন্রী ও প্রধানমন্রী। আশা করি অচিরেই জনগণের এই আশা পূরন হবে। গণতন্র ফিরে পাবে। ধন্যবাদ। সবায়কে ধন্যবাদ।
    Total Reply(0) Reply
  • Nur- Muhammad ১৫ এপ্রিল, ২০১৭, ১১:৫৯ এএম says : 0
    মাননীয় সাবেক প্রধানমন্রী, আপনাকে ও নব বর্ষের প্রাণ ঢালা শুভেচ্ছা। স্বাধীনতার পর আমরা পাকিস্তানিদের হস্তক্ষেপ হতে বাঁচছি। কিন্তু পাশের দেশের অযাচিত হস্তক্ষেপ হতে বাঁচতে পারছি না। ২০১৪ সালে সারা বিশ্ব আপনার তথা জনগণের আন্দোলনকে সমর্থন জানালো কিন্তু পাশের দেশ ভোটারবিহীন সরকারকে সায় দিয়ে ক্ষমতায় বসালো। এই ভোটারবিহীন সরকার ই আজ জনগণের মতামতকে উপেক্ষা করে চুক্তি করছে। আপনি বলছেন এই চুক্তি রিভিউ হবে। জনগণ চুক্তি সহ সকল কিছুর ই রিভিউ চায়। তাই এখন ই গণ আন্দোলনের ডাক দিন। জনগণকে জুলুম অত্যাচার থেকে বাঁচতে দিন। জনগণ চায় ভোটাধিকার। চায় জনগণের এমপি, মন্রী ও প্রধানমন্রী। আশা করি অচিরেই জনগণের এই আশা পূরন হবে। গণতন্র ফিরে পাবে। ধন্যবাদ। সবায়কে ধন্যবাদ।
    Total Reply(0) Reply
  • Nannu chowhan ১৫ এপ্রিল, ২০১৭, ১:১৬ পিএম says : 0
    This addres is very real & perfect.we wish BNP will now start real movement,people is waitiing for real movement.....
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ