Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

টেকনাফে নৌকা আরোহী বিজিবি গুলি বিনিময় : রোহিঙ্গা নারী নিহত

| প্রকাশের সময় : ১৪ এপ্রিল, ২০১৭, ১২:০০ এএম


মুহাম্মদ ছিদ্দিকুর রহমান, টেকনাফ থেকে : নাফনদীর শাহপরীরদ্বীপ পয়েন্টে নৌকা আরোহীদের সাথে বিজিবির গুলি বিনিময়ে জাহেদা (৫০) নামে এক রোহিঙ্গা নারী নিহত হয়েছেন। নিহত নারী হচ্ছেনÑ মিয়ানমারের মংডুর কালু মিয়ার স্ত্রী। এসময় গুলিবিদ্ধ হয়ে আহত হয়েছে আরো চারজন। এছাড়া ২৮ হাজার ইয়াবাসহ সাবরাং ইউনিয়নের শাহপরীরদ্বীপ মিস্ত্রীপাড়ার মৃত আব্দুল মোনাফের ছেলে মোঃ শফিককে আটক করেছে বিজিবি। বিজিবি সূত্র জানায়, মিয়ানমার থেকে ইয়াবা আসার গোপন সংবাদে বদরমোকাম (গোলারচর) এলাকায় অবস্থান নেয় বিজিবি। বুধবার দিবাগত রাত সাড়ে ১২টার দিকে মিয়ানমারের থেকে ২টি নৌকা বাংলাদেশের দিকে আসতে দেখে থামানোর সংকেত দিলে তারা বিজিবির উপর গুলিবর্ষণ শুরু করে। এসময় বিজিবিও আত্মরক্ষার্থে পাল্টা ১৭ রাউন্ড গুলিবর্ষণ করে এবং দুইটি নৌকার মধ্যে একটি মিয়ানমারের দিকে চলে যায়, অপর নৌকা চরে আটকা পড়ে। পরে ওই নৌকা থেকে ২৮ হাজার ইয়াবাসহ শফিক নামে একজনকে আটক করা হয়।
আহতরা হলেন, শাহপরীরদ্বীপ মিস্ত্রি পাড়ার নৌকার মাঝি আবদুল গফুরের ছেলে মোঃ শফিক (২৫), মিয়ানমারের মংডুর মেরুল্লার মৃত মকবুল আহমদের ছেলে মোঃ কাশেম (৮০), মংডুর নলবইন্যার আলী জোহারের স্ত্রী মজুমা প্রকাশ মুজালাফা (৫০) ও একই এলাকার মোঃ তৈয়ুবের রশিদা (২৫)।
জানা যায়, শাহপরীরদ্বীপের দক্ষিণপাড়ার অবৈধ রোহিঙ্গা পারাপারের ঘাট হতে ১৩-১৫ জন নারী পুরুষ নৌকা করে নাফ নদ পেরিয়ে মিয়ানমারের দিকে যাচ্ছিল। নৌকাটি মিয়ানমারের সীমান্তে নাফনদের নাইক্ষ্যংদিয়া বরাবর পৌঁছলে হঠাৎ বর্ডার গার্ড পুলিশ (বিজিপি) নির্বিচারে গুলি চালিয়ে ধাওয়া করে। তখন প্রাণ বাঁচাবার উদ্দেশ্যে ফের বাংলাদেশের দিকে চলে আসে রোহিঙ্গা বোঝাই নৌকাটি। গুলির শব্দ শুনে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) বেশ কয়েক রাউন্ড ফাঁকা গুলি ছুঁড়ে। এতে মিয়ানমারের বিজিপি পালিয়ে যায়। পরে বিজিবি জওয়ানরা রোহিঙ্গা বোঝাই নৌকাটি দেখে উদ্ধার করে এবং গুলিবিদ্ধ আহতদের টেকনাফ হাসপাতালে ভর্তি করে।
এ বিষয়ে টেকনাফ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক টিটু চন্দ্র শীল বলেন, গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে বিজিবি গুলিবিদ্ধ পাঁচজনকে হাসপাতালে নিয়ে আসে। এর মধ্যে জাহেদা বেগম নামে এক নারী নিহত হয়েছেন। তার বুকে গুলির চিহ্ন রয়েছে।
তিনি আরও বলেন, বাকি চারজনকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে উন্নত চিকিৎসার জন্য কক্সবাজার সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। তাদের হাত-পা, বুক ও গলায় গুলির আঘাত রয়েছে।
এ প্রসঙ্গে টেকনাফ ২ বর্ডার গার্ড ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে. কর্নেল আবুজার আল জাহিদ জানান, বুধবার রাতে নাফ নদী পার হয়ে ইয়াবার একটি বড় চালান আসছেÑ এমন গোপন সংবাদ পেয়ে বিজিবির একটি দল সেখানে অভিযান পরিচালনা করে বিজিবি। এসময় পাচারকারীরা বিজিবিকে লক্ষ্য করে গুলি ছুড়ে। আত্মরক্ষার্থে বিজিবিও গুলি চালায়। এসময় দু’পক্ষে গুলিবিনিময় হয়। এতে এক নারী নিহত ও আর চারজন আহত হন। এ ঘটনায় ২৮ হাজার ইয়াবা উদ্ধার রয়েছে।
তিনি আরো জানান, সুস্থ একজন ও আহত চারজনের বিরুদ্ধে সরকারী কর্তব্যে নিয়োজিত বিজিবি সদস্যদের উপর গুলিবর্ষণ, মাদকদ্রব্য বহন ও অবৈধভাবে বাংলাদেশে অনুপ্রবেশের দায়ে টেকনাফ মডেল থানায় মামলা দায়েরের প্রক্রিয়া চলছে।
টেকনাফ মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাইন উদ্দিন জানান, নিহত লাশ উদ্ধার করে, ময়নাতদন্তের জন্য কক্সবাজার মর্গে প্রেরণ করা হবে।
খবর পেয়ে টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ভারপ্রাপ্ত) ও সহকারী কমিশনার ভূমি হাসপাতালে আহতদের দেখতে যান এবং তাদের খোঁজ-খবর নেন।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ