পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
স্টাফ রিপোর্টার : আওয়ামী ওলামালীগ নেতৃবৃন্দ বলেছেন, মঙ্গল শোভাযাত্রা হিন্দু দূর্গা পুজার দর্শনের সাথে সম্পৃক্ত। হিন্দু ধর্মমতে, অসুরকে দমন করে দেবী দূর্গা। হিন্দুদের শ্রী শ্রী চন্ডীগ্রন্থে আছে ‘দুর্গম অসুর’কে বধ করে বলে হিন্দুদের দেবীর নাম হয়েছে দুর্গা। আর মঙ্গল শোভাযাত্রায় অসুর থেকে মঙ্গল কামনা করা হয়। এছাড়া শ্রী কৃষ্ণের জন্ম হয়েছে অশুভ শক্তিকে বিনাশ করতে। তাই হিন্দুরা অশুভ তাড়াতে শ্রী কৃষ্ণের জন্মদিনে তথা জন্মাষ্টমীতে প্রতিবছর সারাদেশে মঙ্গল শোভাযাত্রার আয়োজন করে। মোগল আমল থেকে প্রবর্তনেরও এর কোন ঐতিহাসিক ভিত্তি নেই। এটা পুরোপুরি হিন্দুদের ধর্মীয় সংস্কৃতির অংশ। পশ্চিমবঙ্গের বরোদা আর্ট ইন্সটিটিউটের ছাত্র তরুণ ঘোষ ১৯৮৯ সালে এদেশে চারুকলা ইন্সটিটিউটের কাঁধে ভর করে মুসলিম ছাত্র-ছাত্রীদের উপর চাপিয়ে দেয়। ১৯৮৯ সালে চারুকলার প্রবর্র্তিত এ হিন্দু সংস্কৃতি বাঙ্গালীর ঐতিহ্য বা সংস্কৃতি হতে পারেনা। স্বাধীনতা পূর্ববর্তী বা পরবর্তী সময়ে চারুকলা থেকে বের হওয়া ছাড়া এর অন্য কোন উদাহরণ নেই। বাংলাদেশ আওয়ামী ওলামালীগের সভাপতি মাওলানা আখতার হুসাইন বুখারী, কার্যকরী সভাপতি হাফেজ মাওলানা মুহম্মদ আব্দুস সাত্তার, সাধারণ সম্পাদক আলহাজ কাজী মাওলানা মুহম্মদ আবুল হাসান শেখ শরীয়তপুরী, মাওলানা শওকত আলী শেখ, মাওলানা মুজিবুর রহমান চিশতি, লায়ন মাওলানা আবু বকর সিদ্দীক, মাওলানা তাজুল ইসলাম একযুক্ত বিবৃতিতে এসব কথা বলেন।
ওলামালীগ নেতৃবৃন্দ বলেন, ইসলামে শব্দ উচ্চারণেই সব কিছু। কারণ ইসলামের শব্দ উচ্চারণেই সকালে ঈমানদার আবার বিকালে ঈমানহারা হতে হয়। অমঙ্গল যাত্রার বিরোধিতা মঙ্গল নামের কারণে নয় বরং যে দর্শন নিয়ে এই যাত্রা হচ্ছে তা চরম অনৈসলামিক। ইসলামে ছবি ও মুখোশের কোন ব্যবহার নেই। এদেশের মুসলমান আগে মুসলমান, পরে বাঙালি। আগে বাঙালি নয়। বাংলাদেশ একটি স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্র। ইউনেস্কোর আজ্ঞাবহ নয়। ইউনেস্কো কিছু চাপিয়ে দিলো আর তাতে গা ভাসিয়ে দেয়া হলো, এসব বাংলাদেশের সংস্কৃতি নয়। ইউনেস্কো মাতৃভাষা দিবসের ভিডিওতেই বাংলা ভাষার পুরো মর্যাদা দেয়নি। এছাড়া এই মঙ্গল যাত্রার মঙ্গলদাতা কে তা বোধগম্য নয়। কারণ মঙ্গল যাত্রায় মহান আল্লাহ পাকের প্রতি বিশ্বাস ও ঈমান রাখা হয়না। ইসলামী পরিভাষায় মঙ্গলের সমার্থক রহমত। কাজেই এ মঙ্গল যাত্রায় বিভিন্ন পুরুষ মহিলার ঢলাঢলি, উদোম বেহায়াপনা, কামুক পুরুষ কর্তৃক মহিলার গালে উল্কি আঁকায় রহমত বর্ষিত হয়না। এসবই কুফরি লানতি কাজ। এ থেকে মুসলমানদের বেঁচে থাকা ফরজ। এ যাত্রা গযব হাসিলের শোভাযাত্রা।
তারা বলেন, উলুধ্বনিও ইসলামী শব্দ নয়। হিন্দু ধর্ম মতে, উলুধ্বনি হল ওঁ কার ধ্বনি। “অ” তে সৃষ্টি, “উ” তে স্থিতি, “ম” তে লয়। এই নাদ ধ্বনি ব্রহ্মতরঙ্গ অ উ ম কে স্বরল হরিতে উচ্চারণ করেই উলুধ্বনি করা হয়। এই উলুধ্বনি মহাচৈতন্য শক্তির জাগরণ জয়ধ্বনি। তাই এই ওঁ কার জয়ধ্বনি উলুধ্বনি রূপে মাঙ্গলিক কাজে উচ্চারণ করা হয়। আর ক্বাবা শরীফে উলুধ্বনি দেয়ার প্রশ্নই আসে না। কারণ এটা হিন্দুদের নিজস্ব ধর্মীয় শব্দ। যেখানে কুরআন মাজিদে ভালমন্দ দুই অর্থে ব্যবহৃত ‘রঈনা’ শব্দ না বলে শুধু ভাল অর্থে উনজুরনা ব্যবহার করতে বলা হয়েছে, সেখানে ক্বাবা শরীফে কীভাবে সরাসরি হিন্দুদের শব্দ উচ্চারণ হতে পারে?
ওলামালীগ নেতৃবৃন্দ বলেন, মঙ্গল শোভাযাত্রায় যে সূর্য, ইঁদুর, হনুমান, গাভী, ক্ষ্যাপা ষাঁড়, ঈগল, পেঁচা, রাজহাস, সিংহ, বাঘ, হাঁস, ময়ূর, মহিষ, বহন করা হয় সেগুলো হিন্দুদের বিভিন্ন বিশ্বাসেরই উপাত্ত। দৃষ্টান্ত ইঁদুর গণেশের বাহন, ঈগল বিষ্ণুর বাহন, সিংহ বাঘ দুর্গার যানবাহন, হাঁস ব্রহ্মা ও সরস্বতীর বাহন, মহিষ মৃত্যু দেবীর যানবাহন, ক্ষ্যাপা ষাঁড় শিবের যানবাহন, পেঁচা মঙ্গলের প্রতীক ও ল²ীর বাহন, ময়ূর কার্তিকের বাহন ইত্যাদি (সুধীর চন্দ্র সরকার সংকলিত পৌরাণিক অভিধান)। মঙ্গল শোভাযাত্রার সমগ্র চিত্রই হচ্ছে হিন্দুতত্তে¡র উৎস ও ভিত্তিভূমি। গণেশ মঙ্গল ও সিদ্ধিরজনক বলে সবার আগে পূজিত হন (সুধীরচন্দ্র সরকার সংকলিত পৌরাণিক অভিধান, পৃ. ১১২)। আর এই গণেশই মঙ্গল শোভাযাত্রায় প্রধান আকর্ষণ।
তারা বলেন মঙ্গল শোভাযাত্রায় সূর্যের প্রতিকৃতি দেখা যায়। এটা হচ্ছে হিন্দুদের সূর্য দেবতার প্রতিকৃতি। সূর্য আর্যদের উপাস্য দেবতা (সুধীরচন্দ্র সরকার সংকলিত পৌরাণিক অভিধান, পৃ. ৪৫১)। উইকিপিডিয়ায় বলা হয়েছে, হিন্দুধর্মের প্রধান সৌর দেবতা সূর্য। সে হলো, আদিত্যগণের অন্যতম এবং কশ্যপ ও তার অন্যতমা পতœী অদিতির পুত্র। কোনো কোনো মতে, সে ইন্দ্রের পুত্র। আসলে শোভাযাত্রায় বহনকৃত সকল মুখোশ-ফটোই যে হিন্দুধর্ম থেকে গ্রহণ করা হয়েছে এটা সর্বজনস্বীকৃত। অতএব, মুসলমানদের জন্য বিধর্মীদের অনুষ্ঠান অমঙ্গল শোভাযাত্রা পালন করা সম্পূর্ণরূপে কুফরি শিরকীর অন্তর্ভুক্ত।
এ প্রসঙ্গে পবিত্র হাদিস শরিফে বর্ণিত রয়েছে-মহানবী মুহাম্মদুর রাসূলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেন, ঐ ব্যক্তি আমার উম্মতের অন্তর্ভুক্ত নয়, যে বিজাতীয়দের সাথে সাদৃশ্য রাখে।”
ওলামালীগ নেতৃবৃন্দ বিবৃতিতে আরো বলেন, বিধর্মীয় অনুষ্ঠান পালন করলে তা কুফরি শিরকী হয়ে থাকে। আর শিরক সম্পর্কে আল্লাহ পাক বলেন, “নিশ্চয়ই আল্লাহ পাক ঐ ব্যক্তিকে ক্ষমা করবেন না যে তাঁর সাথে কাউকে শরীক করে। এছাড়া যাকে ইচ্ছা তিনি তাকে ক্ষমা করেন। যে ব্যক্তি আল্লাহ পাকের সাথে শরীক করে, সে সুদূর গোমরাহীতে পতিত হবে।
কুরআন মজিদে বর্ণিত আছে, ‘যে ব্যক্তি দীন ইসলাম ব্যতীত অন্য দীন তালাশ করবে বা গ্রহণ করবে তার থেকে তা কখনোই গ্রহণ করা হবে না বরং সে পরকালে ক্ষতিগ্রস্তদের তথা জাহান্নামীদের অন্তর্ভুক্ত হবে। নাউযুবিল্লাহ! তাই পহেলা বৈশাখ মঙ্গল শোভাযাত্রা পালনের মুসলমানদের বাধ্য করা যাবে না বরং অবিলম্বে অমঙ্গল যাত্রার ঘোষণা বাতিল করতে হবে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।