পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
চট্টগ্রাম ব্যুরো : মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীনের পর এবার চসিক কাউন্সিলররা ক্ষমতায় থাকাকালে সাবেক মেয়র এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরীর বিরুদ্ধে দুর্নীতি ও অনিয়মের অভিযোগ আনলেন। গতকাল (বৃহস্পতিবার) চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে কাউন্সিলররা বলেন, প্রায় ১৭ বছর মেয়রের দায়িত্ব পালনকালে তিনি চসিকের অসংখ্য পদে আত্মীয়-স্বজন ও অস্থায়ী লোক নিয়োগ দিয়ে গেছেন। অন্যদিকে নিয়ম-নীতির তোয়াক্কা না করে অনেক পদের নিয়োগ স্থায়ী করা হয়েছে। যার দলিল ও প্রমাণাদি সিটি কর্পোরেশনের সংশ্লিষ্ট শাখায় রয়েছে। এছাড়াও চসিকের নিজস্ব জায়গাসমূহে অপরিকল্পিতভাবে স্থাপনা নির্মাণের কারণে আবাসিক ও বাণিজ্যিক ক্ষেত্রে কোনো সুফল আসেনি। এমনকি অপরিকল্পিতভাবে ওষুধ কারখানা, রং তৈরির কারখানা, টিউবলাইট তৈরির কারখানা, লাকড়ি তৈরির কারখানা, বিদ্যুৎ উৎপাদন প্লান্ট ও পানি উৎপাদন কারখানাসহ অসংখ্য প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলা হয়েছে যেগুলোর কোন অনুমোদন ছিল না।
সংবাদ সম্মেলনে মহিউদ্দিন চৌধুরীর স্ত্রী সাহেদা মহিউদ্দিনসহ কাজের মেয়ে রানু, সন্তোষ, রবি, ওয়াজিউল্লাহ হত্যাকাÐের সুষ্ঠু তদন্তের দাবি জানানো হয়। সংবাদ সম্মেলনে কাউন্সিলরদের পক্ষে লিখিত বক্তব্য উপস্থাপন করেন প্যানেল মেয়র-১ চৌধুরী হাসান মাহমুদ হাসনী। লিখিত বক্তব্যে হাসান মাহমুদ হাসনী বলেন, ১০ এপ্রিল লালদিঘী মাঠে সমাবেশে এবং ১১ এপ্রিল প্রিমিয়ার বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে সংবাদ সম্মেলনে সাবেক মেয়র ও চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরী বর্তমান মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীনের নামে নানামুখী উদ্দেশ্য প্রণোদিত মিথ্যা, বানোয়াট বক্তব্য দিয়েছেন। তিনি চসিককে পাগলের আড্ডাখানা বলে মন্তব্য করেছেন। এর ফলে মেয়র, কাউন্সিলর এবং নগরীর সম্মানিত ভোটার এবং সাধারণ নাগরিকদের মনে নানামুখী সন্দেহ, সংশয় ও প্রশ্নের উদয় হয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে মহিউদ্দিন চৌধুরীর বিরুদ্ধে অনিয়মের বিভিন্ন চিত্র তুলে ধরে তিনি বলেন, সাবেক মেয়রের উত্তর খুলশী কোবে সিটি হাউজিং প্রকল্প এবং মাদারবাড়ী পোর্ট সিটি হাউজিং প্রকল্পসমূহের দলিলপত্রের বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে এবং বরাদ্দ প্রাপ্তদের প্লট বুঝিয়ে দেয়া হয়নি। লেক সিটি হাউজিং প্রকল্পে বরাদ্দ প্রাপ্তদের মধ্যে প্রায় শতাধিক প্লটগ্রহীতা প্লট প্রাপ্তি থেকে আজো বঞ্চিত রয়েছে। নগরীর গুরুত্বপূর্ণ জায়গা যেমন- প্রবর্তক মোড়, কে সি দে রোড, মুরাদপুর, বহদ্দারহাটসহ বহু জায়গায় নালার উপর বিশ্ববিদ্যালয় ভবন, রাজস্ব অফিস, দোকানপাট, বাসের কাউন্টার ইত্যাদি স্থাপনা তৈরি করে পানি চলাচলের পথ রুদ্ধ করে স্থায়ী পানিবদ্ধতার সৃষ্টি করা হয়েছে। এ কারণে ১/১১ সরকারের আমলে মুরাদপুরের এবং আগ্রাবাদ এক্সেস রোডের উপর নির্মিত অনুমতিবিহীন স্থাপনা, দোকানপাট ও সিএনজি ফিলিং স্টেশন ভেঙে ফেলা হয়েছে। সাবেক এ মেয়রের আমলে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের জনবল কাঠামোরও কোনো অনুমোদন ছিল না।
‘সিটি কর্পোরেশনের দরজায় তালা মেরে সারাক্ষণ বন্দর চেয়ারম্যানের রুমে বসে থাকেন’ মহিউদ্দিন চৌধুরীর এ মন্তব্য প্রসঙ্গে হাসনী বলেন, চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের প্রধান কার্যালয়ে সার্বক্ষণিকভাবে সিসি টিভি ক্যামেরা সক্রিয় হয়েছে। এছাড়াও চট্টগ্রাম বন্দরের চেয়ারম্যানের কক্ষসহ বন্দরের প্রধান কার্যালয়ের সর্বত্র সিসি টিভি ক্যামেরা সক্রিয় আছে। এ সকল ক্যামেরাই প্রমাণ করবে সাবেক মেয়রের বক্তব্য অসাড় ও মিথ্যা।
‘উনি এক কমিশনারকে বলেছেন, ‘জানছনি, আঁই হাসি হাসি গুলি গরিত পারি’। আপনি একজন খুনি। আপনি ১২টা লোককে হত্যা করেছেন মহিউদ্দিন চৌধুরীর এমন মন্তব্য প্রসঙ্গে তিনি বলেন, মহিউদ্দিন চৌধুরী যে কাউন্সিলরের উদ্ধৃতি দিয়েছেন সে কাউন্সিলরের নাম তার বক্তব্যে উল্লেখ করা বাঞ্চনীয় ছিল। যে ১২ জন লোক হত্যার কথা উল্লেখ করেছেন আমরা তার কাছ থেকে সে লোকগুলোর নাম, ঠিকানা জানতে চাই এবং সাথে সাথে আমরা সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে তার স্ত্রী সাহেদা মহিউদ্দিন হত্যার বিচার চাই।
‘অথর্ব মেয়রকে অপসারণের জন্য প্রধানমন্ত্রীর কাছে প্রস্তাব পাঠাব’ এ মন্তব্য প্রসঙ্গে তিনি বলেন, বর্তমান মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন দায়িত্ব গ্রহণের পর চট্টগ্রামের নৈসর্গিক সৌন্দর্য ফিরে আনার জন্য সকল বিলবোর্ড অপসারণ, পরিবেশ বান্ধব নগরী গড়ার লক্ষে বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় আমূল পরিবর্তন, নান্দনিক পরিবেশের জন্য সবুজায়ন কর্মসূচি, ৭ শত ১৬ কোটি টাকা উন্নয়ন প্রকল্প, ১ শত ৯০ কোটি টাকার (মন্ত্রী ও এমপিদের প্রস্তাব) উন্নয়ন প্রকল্প, জাইকার ২০১ কোটি টাকার প্রকল্প, একনেকে অনুমোদনের অপেক্ষায় ৮৯৮ কোটি টাকার প্রকল্প, বিএমডিএফ এর আওতায় প্রস্তাবিত ১৫০ কোটি টাকার প্রকল্প ইত্যাদি বিষয়গুলো কি একজন অথর্ব মেয়রের কাজ?
‘টাকা দিয়ে মেয়র পদে দলীয় মনোনয়ন কেনা প্রসঙ্গে’ তিনি বলেন, এ বিষয়ে আমাদের বক্তব্য হচ্ছে বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রাম ও বাঙালির স্বাধিকার আন্দোলনের নেতৃত্বদানকারী ঐতিহ্যবাহী দল বাংলাদেশ আওয়ামী লীগকে কলঙ্কিত করা হয়েছে। এ ছাড়াও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভানেত্রী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সততা ও সুশাসনের সুনামকে প্রশ্নবিদ্ধ করা হয়েছে। তিনি বলেন, সাবেক মেয়রের এহেন আচরণ ও কর্মকাÐ রাজনীতি ও রাজনীতিবিদদের কর্মকাÐ, আচরণ ও রুচিবোধকে জনসাধারণের কাছে হেয়প্রতিপন্ন করেছে। এহেন নানাবিধ কারণে নতুন ও পরবর্তী প্রজন্ম সাবেক মেয়রকে কখনো ক্ষমা করবে না।
সংবাদ সম্মেলনে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের ৫৫ জন কাউন্সিলর ও সংরক্ষিত কাউন্সিলরের মধ্যে ৫২ জন উপস্থিত ছিলেন। এর মধ্যে ১৫ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর দেশের বাইরে রয়েছেন এবং ৩ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর ও ২৩ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর অসুস্থ থাকায় উপস্থিত থাকতে পারেননি বলে সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।