Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গণ থেকে গ্রিক দেবীর ভাস্কর্য সরাতে চান প্রধানমন্ত্রীও

| প্রকাশের সময় : ১২ এপ্রিল, ২০১৭, ১২:৪৩ এএম


কওমি মাদরাসার দাওরায়ে হাদিসকে মাস্টার্সের সমমান ঘোষণা

বিশেষ সংবাদদাতা : সুপ্রিম কোর্টে স্থাপিত ভাস্কর্যের বিরোধিতাকারী ওলামাদের দাবির সঙ্গে একমত পোষণ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, এটি সরাতে তিনিও চান।
গতকাল মঙ্গলবার রাতে গণভবনে কওমি মাদরাসার আলেমদের সঙ্গে এক সাক্ষাতে তাদের এই প্রতিশ্রæতি দেন তিনি।
এই বৈঠকে কওমি মাদরাসাগুলোর শীর্ষ প্রতিনিধি ও হেফাজতে ইসলামের আমির শাহ আহমদ শফীও ছিলেন।
রোমান যুগের ন্যায়বিচারের প্রতীক ‘লেডি জাস্টিস’র আদলে একটি ভাস্কর্য কিছুদিন আগে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ আদালত প্রাঙ্গণে স্থাপন করা হয়।
এরপর থেকে হেফাজতসহ কয়েকটি ইসলামী সংগঠন তার বিরোধিতায় নামে। হেফাজত এই ভাস্কর্য সরানোর দাবি জানিয়ে সরকারকে ৫ মে মতিঝিলে ফের সমাবেশের হুমকি দিয়ে আসছে। ওলামা লীগও তা অপসারণের দাবি জানিয়ে আসছিল।
গণভবনের বেঠকে শোলাকিয়ার ইমাম মওলানা ফরীদ উদ্দীন মাসঊদ জাতীয় ঈদগাহের পাশেই স্থাপিত ‘মূর্তি’ সরানোর বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেন।
ভাস্কর্যটির বিষয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমি নিজেও এটা পছন্দ করিনি। বলা হচ্ছে এটা নাকি গ্রিক মূর্তি আমাদের এখানে গ্রিক মূর্তি আসবে কেন? আমি নিজে ব্যক্তিগতভাবে মনে করি, এটা এখানে থাকা উচিত না। এটা কেন করা হল? কারা করল? কীভাবে, জানি না।”
“গ্রিকদের পোশাক ছিল এক রকম। এখানে আবার দেখি শাড়ি পরিয়ে দিয়েছে। এটাও হাস্যকর হয়েছে।”
ভাস্কর্য অপসারণের বিষয়ে প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহার সঙ্গে কথা হয়েছে বলে প্রধানমন্ত্রীর মুখে শোনার পর গণভবনের অনুষ্ঠানে উপস্থিত কয়েকশ আলেম হর্ষধ্বনি হয়ে ওঠেন।
হেফাজত আমির শফীকে পাশে রেখে শেখ হাসিনা বলেন, ‘প্রধান বিচারপতির সঙ্গে খুব শিগগিরই বসব। আপনারা ধৈর্য ধরেন, এটা নিয়ে হৈ চৈ করা নয়। আমার উপর আপনারা এটুকু ভরসা রাখবেন। এটায় যা যা করা দরকার আমরা তা তা করব।’
প্রধানমন্ত্রী ভাস্কর্য সরানোর দাবিতে একমত হলেও তার দলের কয়েকজন নেতা হেফাজতের দাবির সমালোচনা করে আসছিলেন।
এদিকে, কওমি মাদরাসার দাওরায়ে হাদিসকে মাস্টার্সের সমমান ঘোষণা করেছেন  প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। মঙ্গলবার রাতে গণভবনে আলেমদের সঙ্গে বৈঠককালে তিনি বলেন, ‘কওমি মাদ্রাসার সর্বোচ্চ ক্লাস দাওরায়ে হাদিসকে মাস্টার্সের মান দেওয়া হলো।’
শেখ হাসিনা আরও বলেন, ‘আমরা একটি আরবি বিশ্ববিদ্যালয় করেছি। যাতে এর মাধ্যমে কওমি মাদ্রাসার স্বীকৃতি হতে পারে। অনেক সমস্যাই এখন থাকতে পারে এখানে। কিন্তু ধীরে ধীরে আমরা এগুলো আলোচনার মাধ্যমে দূর করবো।’
এর আগে  প্রধানমন্ত্রী  শেখ হাসিনার আহŸানে বৈঠকে যোগ দিতে রাত সোয়া ৮টার দিকে গণভবনে আসেন হেফাজতে ইসলামের আমির ও বেফাকুল মাদারিসিল আরাবিয়া বাংলাদেশের (বেফাক) সভাপতি আল্লামা শাহ আহমদ শফী।  তার নেতৃত্বে গেছেন  প্রায় ৩০০ জন আলেম এ বৈঠকে অংশ নেন। বৈঠকে কওমি আলেমদের উপস্থিতিতে আনুষ্ঠানিকভাবে কওমি মাদ্রাসার সনদের স্বীকৃতি দিলেন  প্রধানমন্ত্রী।
 প্রসঙ্গত, কওমি মাদ্রাসার দাওয়ায় হাদিসের মান হচ্ছে এমএ (আরবি/ ইসলামের ইতিহাস) সমমান।  সনদের স্বীকৃতির মধ্য দিয়ে কওমিপন্থীদের সঙ্গে সরকারের টানাপড়েনের অবসান ঘটল।



 

Show all comments
  • গালিব ১২ এপ্রিল, ২০১৭, ৬:২৮ এএম says : 0
    আমরা কাজে বিশ্বাসি, কথায় নয়।
    Total Reply(0) Reply
  • ১২ এপ্রিল, ২০১৭, ৭:০০ এএম says : 1
    কওমী মাদরাসার স্বীকৃতি নিয়ে তারা কোন হেড লাইন করে নাই ?
    Total Reply(0) Reply
  • Nur- Muhammad ১২ এপ্রিল, ২০১৭, ১২:২৭ পিএম says : 1
    কথাটি বিশ্বাস যোগ্য হলো না। দেশের সর্বউচ্চ ক্ষমতাধর ব্যাক্তি চাইলে এখন ও মূর্তি থাকে কি করে। প্রধানমন্রী রাস্তায় বাহির হলে সব কিছু থমকে যায়। জনসাধারনের জন্য রাস্তা ঘাট বন্ধ হয়ে যায়। জনগণ ঘন্টার পর ঘন্টা রোদ বৃষ্টি মাথায় নিয়ে দাড়ায়া থাকে। প্রধানমন্রী মনের উল্লাসে রাস্তায় চলে, মন্চে অনেক কথা বলে। বলতে দেরী তালিম হতে দরী নয়। ক্যাডার আর জ্বি হুজুরের দল বসে থাকে, চাওয়ার চেয়ে অধিক কিছু প্রঃ মন্রীর সামনে তোলে ধরে। এমতাবস্হায় প্রঃ মন্রী চাচ্ছে মূর্তি এখন ও সুপ্রিমকোর্টের সামনে আছে তা কি বিশ্বাসযোগ্য? মাদ্রাসার ছাত্রদের মাস্টাস এর একটি দাবী মাননীয় প্রধানমন্রী আজ পুরন করলো। ডিগ্রীটি যদি সত্যই মাস্টাস এর সমতোল্য হয় তা হলে প্রঃমন্রীকে প্রাণ ঢালা ধন্যবাদ। সবায়কে ধন্যবাদ।
    Total Reply(0) Reply
  • Md Sattar Ahmed ১২ এপ্রিল, ২০১৭, ১:২২ পিএম says : 0
    কওমী স্বীকৃতি দিয়ে বর্তমান সরকার যে নাটক করেছে এই নাটকের মূল ভূমিকা কিছুদিন গেলেই বোঝা যাবে।।
    Total Reply(0) Reply
  • Salman ১২ এপ্রিল, ২০১৭, ৩:১০ পিএম says : 0
    দুঃখিত! জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশিলতার প্রমাণ পেলামনা! ১৪হাজারোর্ধ কওমী মাদরাসার প্রায় ১৪লাখ শিক্ষার্থীর প্রাণের দাবি 'সনদের ঘোষণা'র স্বতন্ত্র নিউজ হলোনা! এটাই কি জনমতে শ্রদ্ধা?
    Total Reply(0) Reply
  • হাফিজ ১২ এপ্রিল, ২০১৭, ৭:৩৬ পিএম says : 0
    প্রধান মন্ত্রীর কথা ও কাজ এক হোক এটাই কামনা করছি।
    Total Reply(0) Reply
  • মুফতি নূরুল ইসলাম ১২ এপ্রিল, ২০১৭, ৮:০৭ পিএম says : 0
    ইনকিলাবের সম্পাদক মহোদয় সমীপে : জনাব, আপনার ইনকিলাব পত্রিকাটিকে এদেশের মানুষ ইসলাম ও মুসলমানদের মুখপাত্র হিসেবে চিনে । ওলামায়ে কেরাম এই পত্রিকাটিকে নিজের কলিজার টুকরার চেয়েও বেশী মহব্বত করে । ইনকিলাবের বিপদ ও দুর্দিনে সবসময় আলেম সমাজ তার পাশে থাকে । কিন্তু আজকের পত্রিকাটি পড়ে এদেশের লাখো লাখো আলেম ও ছাত্ররা চরম ভাবে কলিজায় আঘাত পেয়েছে । কারন বহু কাংখিত কওমি মাদ্রাসার সনদের স্বীকৃতির সংবাদটি আজকের ইনকিলাবের কোথাও খুঁজে পাইনি । আমরা ধারণা করেছিলাম একটি ঐতিহাসিক সিদ্ধান্ত, আবার রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ ব্যক্তির কার্যালয়ের সংবাদ অবশ্যই সেটা হেড লাইন হবে । কিন্তু পত্রিকা কিনে পড়ার পর সবারই মনটা ভেঙ্গে খান খান হয়ে যায় । কেন ইনকিলাব আমাদের সাথে এমন আচরণ করলো । স্বীকৃতির বিষয়ে ইনকিলাবের ভিন্নমত থাকতে পারে তাই বলে কি সাংবাদিকতার সর্বনিম্ন দায়িত্বশীলতার পরিচয় টুকুও দিবেন না । কেন স্বীকৃতির বিষয়ে ইনকিলাব লাখো লাখো আলেমদেরকে আজকে আহত করলো, আগামী কাল এর জবাবসহ বিস্তারিত রিপোর্ট চাই । আল্লাহ আপনাকে তৌফিক দান করুন ।
    Total Reply(0) Reply
  • Mohammed Shah Alam Khan ১২ এপ্রিল, ২০১৭, ৯:০৮ পিএম says : 0
    আমি জননেত্রী শেখ হাসিনাকে জানাই আমাদের অর্জিত লাল সবুজের সালাম। তিনি একটা মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ট দেশের প্রধানমন্ত্রী তাই উনাকে সেদিকেও খেয়াল রাখতে হবে এবং এটাই হবে ওনার যোগ্যতা। উনি এদের দাবী মূর্তে অপসারণ নিয়ে বলেছেন কিভাবে এটা হয়েছে সেটা উনি পরে জেনেছেন এটা ঠিক আছে কারন বিচার বিভাগ স্বাধীন ওদের আঙ্গিনা ওরা কিভাবে সাজাবে সেটা ওদের বিষয় সেখানে প্রধানমন্ত্রীর একতিয়ার না থাকারই কথা। আজকের সভায় তিনি যা বললেন এটা খুবই সুন্দর বলেছেন। আমি মনে করি প্রধান বিচারপতির সাথে প্রধানমন্ত্রীর একান্ত আলোচনার প্রয়োজন আছে। আমি বিশ্বাস করি শেখ হাসিনা ও এস কে সিনহার সাথে দেশে আইনের শাসন নিয়ে কথা বলা দরকার। এতে করে বিচারপতির অনেক আক্ষেপ আছে সরকারের প্রতি সেটাও নিরসন হবে বলে আমি মনে করি। আল্লাহ্‌ আমাকে এবং সবাইকে বুঝার ও সেইভাবে চলার শক্তি দিন। আমীন
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: প্রধানমন্ত্রী


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ