পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
বিশেষ সংবাদদাতা : ভারত সফরকে কেন্দ্র করে বিএনপির দেশ বেচে দেয়ার অভিযোগ সম্পর্কে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, এখানে আসার আগে কত কথাই শুনলাম। দেশ বেচে দেয়ার কথা শুনলাম। যারা দেশ বেচে দেয়ার কথা বলেন, তারা অর্বাচীন। তিনি বলেন, দু’দেশের মধ্যে সম্পাদিত চুক্তিগুলো জনগণ ও আঞ্চলিক কল্যাণে স্বাক্ষরিত হয়েছে। আমরা সামগ্রিকভাবে জনগণ ও আঞ্চলিক উন্নয়নের লক্ষ্যে ভারতের সঙ্গে চুক্তি করেছি।
শেখ হাসিনা আরো বলেন, প্রতিবেশীর সঙ্গে সমস্যা থাকবে। আলোচনার মাধ্যমে তা দূর করতে হবে। ঝগড়াঝাটি করে নয়। এখন আপনারাই ঠিক করুন। দেশ বেচে দিলাম, নাকি নিয়ে ফিরলাম, তা আপনারাই বলবেন। গতকাল সোমবার সকালে নয়াদিল্লির হোটেল তাজ প্যালেসে বাংলাদেশ ও ভারতের ব্যবসায়ী সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী এ কথা বলেন। সম্মেলনে দুই দেশের চার শতাধিক ব্যবসায়ী উপস্থিত ছিলেন। ফেডারেশন অব ইন্ডিয়ান চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (এফআইসিসি) এবং ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (এফবিসিসিআই) যৌথভাবে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।
শেখ হাসিনা এ অঞ্চলের জনগণের জীবন ও জীবনযাত্রার উন্নয়নে বাংলাদেশে ব্যবসা ও বিনিয়োগ করার জন্য ভারতের ব্যবসায়ীদের প্রতি আহ্বান জানান।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের লক্ষ্য হচ্ছে এমন একটি উদ্ভাবনী ও বাস্তবভিত্তিক অর্থনীতি বিনির্মাণ করা, যা অন্তর্ভুক্তিমূলক সমাজ ও কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করবে। আমি নিশ্চিত, আমরা একত্রে এ অঞ্চলের মানুষের জীবন ও জীবনমানের পরিবর্তন আনতে পারব।
শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশ একটি স্থিতিশীল দেশ। এ দেশ সঠিক পথে এগিয়ে যাচ্ছে এবং একসাথে উন্নয়নের লক্ষ্য ভারতের সঙ্গে রয়েছে বাংলাদেশের চমৎকার সম্পর্ক।
তিনি বলেন, আপনারা ধনী। এ জন্য আমি বাংলাদেশে আপনাদের ব্যবসা ও বিনিয়োগ করার আহ্বান জানাই। ভারতের ব্যবসায়ীরা বাংলাদেশের স্থিতিশীল অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি, বেশি মুনাফা সাশ্রয়ী ব্যয় ও বিপুল সংখ্যক ভোক্তার সুযোগ নিতে পারে।
আপনাদের বিনিয়োগের সুরক্ষায় আমাদের রয়েছে ইন্দো-বাংলা বিনিয়োগ চুক্তি। এতে রয়েছে শতভাগ মুনাফা ও পুঁজি ফেরত নেয়ার আকর্ষণীয় প্যাকেজ।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ বর্তমানে ইইউ, জাপান, অস্ট্রেলিয়া ও কানাডাসহ বিশ্বে ৩৮টি দেশ থেকে জিএসপি সুবিধা পায়। আপনারাও চীন, দক্ষিণ কোরিয়া, থাইল্যান্ড, মালয়েশিয়া ও চিলির মতো দেশগুলো থেকে বাংলাদেশকে দেয়া শুল্কমুক্ত ও কোটামুক্ত সুবিধার সুযোগ নিতে পারবেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, শিল্পায়ন ও বিদেশী বিনিয়োগ আকৃষ্ট করতে বাংলাদেশ ১শ’ বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠা করছে। এর মধ্যে মংলা, ভেড়ামারা ও মীরসরাই বিশেষভাবে ভারতীয় ব্যবসায়ীদের জন্য নির্দিষ্ট করা হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, তার সরকার তথ্যপ্রযুক্তি খাতে বিদেশী বিনিয়োগ আকৃষ্ট করতে হাইটেক পার্ক গড়ে তুলছে এবং বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কতৃর্পক্ষ (বিআইডিএ) গঠন করেছে। একই সঙ্গে বাংলাদেশ রফতানি প্রক্রিয়াজাতকরণ জোন কতৃর্পক্ষ (বিইপিজেডএ)ও গড়ে তুলেছে। তিনি বলেন, ব্যবসা-বাণিজ্য আরো সহজীকরণ করতে ‘ওয়ান স্টপ সার্ভিস’ চালুর বিষয়টিও চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে।
শেখ হাসিনা বলেন, জ্বালানি নিরাপত্তা আমাদের ব্যবসা-বাণিজ্যের প্রসারের একটি অন্যতম দিক। বর্তমানে আমাদের দৈনিক বিদ্যুৎ উৎপাদনের পরিমাণ ১৫ হাজার ৭২৬ মেগাওয়াট এবং আমরা ২০২১ সাল নাগাদ ২৪ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধার্য করেছি। বাংলাদেশ এখন অবকাঠামোগত উন্নয়নে বিশেষ করে পদ্মা বহুমুখী সেতু এবং রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণে বিনিয়োগ করছে বলেও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা উল্লেখ করেন। তিনি ভারতের বিনিয়োগকারীদের বাংলাদেশের অবকাঠামোগত উন্নয়নে বিশেষ করে বিদ্যুৎ ও জ্বলানি খাতে, যন্ত্রাংশ তৈরি এবং সড়ক পরিবহন খাতে বিনিয়োগেও উৎসাহিত করেন।
শেখ হাসিনা বলেন, বর্তমানে আমরা বড় রকমের অর্থনৈতিক এবং রাজনৈতিক অনিশ্চয়তার মধ্য দিয়ে সময় অতিবাহিত করছি। একই সঙ্গে আমরা দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর উন্নতি এবং অর্থনৈতিক সমৃদ্ধিও দেখতে পাচ্ছি। বর্তমানে দক্ষিণ এশিয়া বিশ্বের সবচেয়ে দ্রæত বর্ধনশীল অঞ্চলে পরিণত হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা ২০২১ সাল নাগাদ বাংলাদেশকে একটি মধ্যম আয়ের ডিজিটাল দেশ এবং ২০৪১ সাল নাগাদ উন্নত সমৃদ্ধ দেশ হিসেবে গড়ে তোলার পথে রয়েছি। ‘প্রাইস ওয়াটার হাউজ কুপারস’ তার স¤প্রতি প্রকাশিত ‘২০৫০ সালের বিশ্ব’ শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত এক রিপোর্টে অনুমান করেছে- ২০৩০ সালে ভারতের অর্থনীতি হবে বিশ্বের তৃতীয় সর্ববৃহৎ এবং বাংলাদেশ হবে ২৯তম বৃহৎ অর্থনীতির দেশ।
বাংলাদেশ গত অর্থবছরে ৭ শতাংশ হারে জিডিপি অর্জন করেছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা আশাবাদী আমাদের জিডিপি প্রবৃদ্ধির হার ২০২০ সাল নাগাদ ৮ শতাংশ হবে। বর্তমানেই আমাদের মাথাপিছু আয়ের পরিমাণ বেড়ে হয়েছে ১৪শ’ ৬৬ ডলার। আমাদের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের পরিমাণ প্রায় ৩০ বিলিয়ন ডলারের ওপরে। আমরা ইতোমধ্যেই আমাদের দেশে ২ বিলিয়ন ডলারেরও বেশি সরাসরি বিদেশী বিনিয়োগ (এফডিআই) আনতে সক্ষম হয়েছি এবং আমাদের লক্ষ্য এই বিনিয়োগের পরিমাণ ২০২০ সাল নাগাদ অন্তত ৯ দশমিক ৬ বিলিয়ন ডলারে উন্নীত করা।
‘সকলের সঙ্গে বন্ধুত্ব এবং কারো সঙ্গে বৈরিতা নয়’ তার সরকারের পররাষ্ট্রনীতি উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এই নীতির ওপর ভিত্তি করেই তার সরকার দেশকে উন্নয়ন এবং সমৃদ্ধির পথে নিয়ে যেতে চায়।
অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে ভারতের তেল ও প্রাকৃতিক গ্যাস সম্পদবিষয়ক মন্ত্রী ড. ধর্মেন্দ্র প্রধান, ভারতের সাবেক চেম্বার প্রধান আদি গোদরেজ এবং বর্তমান চেম্বার সভাপতি সন্দীপ জাইওদিয়া, এফবিসিসিআই সভাপতি আব্দুল মাতলুব আহমাদ এবং ভারতীয় ফেডারেশন অব চেম্বার্স অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সাবেক সভাপতি হর্ষ মরিয়ালা বক্তৃতা করেন।
সম্পর্কের ভবিষ্যৎ পানিবণ্টনে : শেখ হাসিনা
প্রতিশ্রæত তিস্তা চুক্তি হলে ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্ক রূপান্তরের আরও একটি পর্যায় অতিক্রম করবে বলে মনে করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেছেন, আমরা দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি, দুই দেশের সম্পর্ক আরও মজবুত করতে আমাদের যৌথ পানিসম্পদকে কাজে লাগাতে হবে। সব অভিন্ন নদীর পানিবণ্টনে অববাহিকাভিত্তিক একটি বিস্তৃত পরিকল্পনার মধ্যেই আমাদের যৌথ ভবিষ্যত নিহিত।
চার দিনের ভারত সফরের শেষ দিন গতকাল সোমবার সকালে নয়া দিল্লিতে ইন্ডিয়া ফাউন্ডেশনের দেয়া সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী। এ সফরে ঝুলে থাকা তিস্তা চুক্তি স্বাক্ষর হয়নি। তবে দুই দেশের সম্পর্কের জন্য তিস্তা চুক্তি যে গুরুত্বপূর্ণ, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিও তা স্বীকার করেছেন। শনিবার হাসিনার সঙ্গে শীর্ষ বৈঠকের পর তিনি বলেছেন, দুই দেশের বর্তমান সরকারের মেয়াদেই তিস্তার পানি বণ্টন সমস্যার সমাধানে পৌঁছানো যাবে বলে তিনি বিশ্বাস করেন।
সেই প্রসঙ্গ উল্লেখ করে সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে শেখ হাসিনা বলেন, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি যতদ্রæত সম্ভব তিস্তার সমাধান করতে তার সরকারের আন্তরিক আগ্রহের কথা পুনর্ব্যক্ত করেছেন। আর তা বাস্তবায়ন হলে ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্ক আরও একটি রূপান্তরের মাধ্যমে নতুন পর্যায়ে পৌঁছাবে।
অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোকে দারিদ্র্যমুক্ত করে জনগণের উন্নত জীবন নিশ্চিত করার জন্য এই অঞ্চলের দেশগুলোর পারস্পরিক বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রাখার ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন।
তিনি বলেন, বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক সবসময়ই জনকল্যাণের জন্য সুযোগ সৃষ্টি করে। এখানে কোন দেশটি বড় আর কোনটি ছোট, এটা কোনো বিবেচ্য বিষয় নয়। আমরা একটি সার্বভৌম দেশ। কাজেই আমরা সবসময় একে অপরকে সম্মান করি এবং বন্ধুত্বকে গুরুত্ব দেই, কারণ বন্ধুত্ব ছাড়া বিবাদপূর্ণ সম্পর্ক বজায় থাকলে কিছুই অর্জন সম্ভব নয়।
সাবেক উপ-প্রধানমন্ত্রী এবং ক্ষমতাসীন ভারতীয় জনতা পার্টি বিজেপির উপদেষ্টা পরিষদের চেয়ারম্যান এল কে আদভানী এবং ভারতের বাণিজ্যমন্ত্রী এবং ইন্ডিয়া ফাউন্ডেশনের পরিচালক নির্মলা সীতারমন অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করেন।
তিস্তা ইস্যুতে প্রধানমন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী আরো একবার এই ইস্যু সমাধানে তার সরকারের দৃঢ় আকাক্সক্ষার কথা পুনর্ব্যক্ত করে শীঘ্রই এটি সমাধানের উদ্যোগ নেয়া হবে বলে উল্লেখ করেছেন। আর এটি হলে ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্কের ক্ষেত্রে এটি ভিন্ন মাত্রা যোগ করবে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ সময় করতালির মধ্যে তিস্তা প্রসঙ্গে তার শঙ্কার কথা ব্যক্ত করে বলেন, দিদি মনি (মমতা ব্যানার্জি) তিস্তা ইস্যুতে আর কি করবেন তিনিই জানেন এবং আমি তার সঙ্গে কথা বলার পর তিনি আরো নতুন কিছু বিষয় আলোচনায় এনেছেন। যদিও মোদিজি (নরেন্দ্র মোদি) আমাদের আশ্বস্ত করেছেন, আমরা এখানে আছি এবং দেখছি তিনি কি করেন।
ভারতের সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের প্রসঙ্গ উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ভারত সেই দেশ, যারা আমাদের স্বাধীনতায় সহযোগিতা করেছে। আমাদের যে কোনো দুর্দিনে সবসময় আমাদের পাশে থেকেছে। আমরা একই মর্যাদা এবং ভ্রাতৃত্বের বন্ধনে আবদ্ধ হয়ে আমাদের জনগণের, বিশেষ করে দক্ষিণ এশিয়ার জনগণের ভাগ্যোন্নয়নে কাজ করে যাচ্ছি।
দারিদ্র্য দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর সাধারণ শক্র উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, কাজেই আমাদের ঐক্যবদ্ধভাবে এই দারিদ্র্যের বিরুদ্ধে লড়াই করতে হবে এবং রাজনীতিবিদ হিসেবে এটা আমাদের দায়িত্বের মধ্যেই পড়ে।
শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশ এবং ভারত সম্পর্ক পারস্পরিক স্বার্থ-সংশ্লিষ্ট ভিত্তির ওপর এবং একই ধরনের সাধারণ আকাক্সক্ষার ওপর প্রতিষ্ঠিত। যার মূলে রয়েছে স্বাধীনতার সামগ্রিক মূল্যবোধ, গণতন্ত্র এবং মৌলিক মানবাধিকার ও আইনের শাসন।
তিনি বলেন, এই সম্পর্কের ভিত্তি রচনা হয় বাংলাদেশ সৃষ্টির প্রারম্ভে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের হাত ধরে। এরপর থেকে যতই দিন গেছে এই সম্পর্ক আরো গতিশীল, পরিপূর্ণ এবং কৌশলগত পূর্ণতা লাভ করেছে।
‘কুছ তো মিল গেয়্যা’
ইংরেজি ভাষায় দেয়া বক্তব্যের একপর্যায়ে হঠাৎই হিন্দিতে কথা বললেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিস্তা ইস্যুতে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রসঙ্গ টেনে শেখ হাসিনা বলেন, ‘দিদিকি সাথ বাত হুয়ি। পানি মাঙ্গা মাগার ইলেকট্রিসিটি তো মিলা। কুছ তো মিল গেয়্যা’। (দিদির সঙ্গে তিস্তা নিয়ে কথা হয়েছে। পানি না পেলেও বিদ্যুৎ তো পেলাম। কিছু তো পেলাম।)
ইন্ডিয়া ফাউন্ডেশনের দেয়া সংবর্ধনায় একপর্যায়ে লিখিত বক্তব্যের বাইরে এসব কথা বলেন শেখ হাসিনা। ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি) গবেষণা প্রতিষ্ঠান ইন্ডিয়া ফাউন্ডেশনের সংবর্ধনায় অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, ভারতের সাবেক উপ-প্রধানমন্ত্রী এল কে আদভানি।
তিনি বাংলাদেশ-ভারত স্থলসীমান্ত চুক্তির প্রটোকল স্বাক্ষরকে একটি ‘ঐতিহাসিক ঘটনা’ হিসেবে বর্ণনা করেন এবং ভারতের লোকসভায় সকল দলের সম্মতিতে ওই চুক্তি অনুমোদনের ঘটনাকে বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধের মতো ঐতিহাসিক ঘটনা’।
শেখ হাসিনা বলেন, ভারতীয় সেনারা আমাদের মুক্তিযোদ্ধাদের সাথে রক্ত দিয়ে বাংলাদেশের স্বাধীনতা এনে দিয়েছিল। ১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সপরিবারে নিহত হওয়ার পর দীর্ঘদিন ভারতে নির্বাসিত জীবন কাটানোর কথাও স্মরণ করেন প্রধানমন্ত্রী। আমরা মুহূর্তে রিফিউজি হয়ে যাই। ইন্দিরা গান্ধী আমাদের ভারতে নিয়ে আসেন। প্রথম দু-তিন বছর আমরা কারও সাথে কথা বলা বা মেলামেশা করার মতো অবস্থায় ছিলাম না। এরপর যখন ভারতের বিভিন্ন দলের রাজনীতিবিদদের সঙ্গে যোগাযোগ শুরু করেন, তখন তাদের আন্তরিকতায় অভিভ‚ত হয়েছিলেন বলে জানান হাসিনা। দলমত নির্বিশেষে সকলেই আন্তরিক ছিলেন। আপনাদের সহায়তা না পেলে আমাদের কি হত, তা জানি না।
প্রতিবেশীদের সঙ্গে বন্ধুত্বের মাধ্যমে সমাধানের ওপর গুরুত্বারোপ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘প্রতিবেশীদের সঙ্গে সমস্যা হয়, কিন্তু শান্তিপূর্ণভাবে সমস্যা সমাধানেরও সুযোগ রয়েছে। আমরা একসঙ্গে কাজ করলে এই অঞ্চলের মানুষকে উন্নত জীবন দিতে পারব।
বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ককে ‘খুবই গুরুত্বপূর্ণ’ হিসেবে বর্ণনা করে শেখ হাসিনা বলেন, ছোট দেশ, বড় দেশ; সেটা বড় কথা না। আমরা স্বাধীন দেশ, সার্বভৌম দেশ। আমরা একে অপরকে সম্মান করি। আমরা বন্ধুত্বকে সবসময় গুরুত্ব দিই। বন্ধুত্বের সব থেকে বড় জিনিস হলো যার মাধ্যমে যে কোনো সমস্যা সমাধান করা যায়।
বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী বলেন, ঝগড়া করে সমস্যার সমাধান হয় না, সমমর্যাদা ও বন্ধুত্বের ভিত্তিতেই তার দেশ চলবে।
২৫ মার্চ গণহত্যা দিবস হিসাবে পালনের যে প্রস্তাব বাংলাদেশের সংসদে গ্রহণ করা হয়েছে, তা আন্তর্জাতিকভাবে পালনে ভারতের সমর্থনের কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা এটাকে ক্ষমা করতে পারি, কিন্তু এটা ভুলে যেতে পারি না।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।