Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

ভারত-পাকিস্তান সম্পর্কোন্নয়নে হাসিনাকে চান আদভানি

| প্রকাশের সময় : ১১ এপ্রিল, ২০১৭, ১২:০০ এএম

বিশেষ সংবাদদাতা : ভারত ও পাকিস্তানের দীর্ঘদিনের বৈরিতার অবসানে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মধ্যস্থতা চেয়েছেন ভারতের সাবেক উপ-প্রধানমন্ত্রী এল কে আদভানি। নয়াদিল্লিতে শেখ হাসিনার জন্য আয়োজিত এক সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে ভারতীয় জনতা পার্টির উপদেষ্টা পরিষদের চেয়ারম্যান আদভানি বলেন, ভারতের সঙ্গে পাকিস্তানের সম্পর্কোন্নয়নে শেখ হাসিনা সহায়তা করতে পারেন। এই অঞ্চলের সকলের মধ্যে যেন স্নেহপূর্ণ সম্পর্ক হয়। খবর বাংলা নিউজ পোর্টাল বিডিনিউজ ২৪। শেখ হাসিনার ভারত সফরের শেষ দিন গতকাল সোমবার সকালে ইন্ডিয়া ফাউন্ডেশনের এই সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের ভ‚য়সী প্রশংসা করেন আদভানি। তিনি বলেন, শেখ হাসিনার নেতৃত্ব বাংলাদেশকে অনন্য উচ্চতায় নিয়ে গেছে। তার নেতৃত্বেই বাংলাদেশের জনগণের জীবনমানের আরো উন্নয়ন ঘটবে বলে আশা প্রকাশ করেন ভারতের এই প্রবীণ নেতা। ভারতের রাজনীতিবিদ ও বিশিষ্ট ব্যক্তিরা দিল্লির দি ইম্পেরিয়াল হোটেলে এ সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।
বিজেপি নেতা আদভানি তার বক্তব্যের এক পর্যায়ে পাকিস্তানের নাম উল্লেখ না করে বলেন, আমাদের এক প্রতিবেশী, যারা স্বাধীনতার আগেও ভারতের অংশ ছিল, আমি চাই তাদের সাথে আমাদের সম্পর্ক স্বাভাবিক হয়ে যাক।
উল্লেখ, কাশ্মির নিয়ে ভারত-পাকিস্তানের সম্পর্কের টানাপড়েন পুরনো। এ নিয়ে দু’দেশের মধ্যে তিনবার যুদ্ধ হয়েছে। গতবছর ১৮ সেপ্টেম্বর উরি ঘাঁটিতে জঙ্গি হামলায় ১৯ সেনা নিহত হওয়ার পর থেকে পাকিস্তানকেই দায়ী করে আসছে ভারত। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এ অঞ্চলে সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদের বিস্তারের জন্য পাকিস্তানকে অভিযুক্ত করে দেশটিকে একঘরে করে ফেলারও হুমকি দিয়েছেন।
তবে ক্ষমতাসীন দলের নেতা আদভানি বলছেন, তারা ভারতেরই অংশ ছিল। ওখানে আমার জন্মস্থান। সিন্ধু আমার জন্মস্থান। কিন্তু এখন তারা ভারতের সাথে নেই। এটা আমার দুঃখ।
বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ককে ‘অনন্য উচ্চতায়’ নিয়ে যেতে শেখ হাসিনার উদ্যোগের প্রশংসা করে আদভানি পাকিস্তানের সঙ্গে সম্পর্কোন্নয়নেও তার মধ্যস্থতা চান।
অনুষ্ঠানের শুরুতে তিনি বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর হাতে ফুলের তোড়া তুলে দেন এবং শাল পরিয়ে দেন। পরে ভারতের কেন্দ্রীয় বাণিজ্যমন্ত্রী এবং ইন্ডিয়া ফাউন্ডেশনের পরিচালক নির্মলা সীতারমণ বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর হাতে তুলে দেন ক্রেস্ট।
শেখ হাসিনাকে সম্মাননা জানানোর এই অনুষ্ঠানকে একটি ‘শুভ মুহূর্ত’ হিসেবে বর্ণনা করে আদভানি বলেন, সব সময় এ রকম মুহূর্ত আসে না। আমার জানা নেই, আমাদের কোনো প্রতিবেশী দেশের নেতা আমাদের সঙ্গে এত সময় কাটিয়েছে কিনা।
১৯৭৫ সালের ১৫ অগাস্ট বাংলাদেশে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সপরিবারে নিহত হওয়ার পর ১৯৮১ সালের ১৫ মে পর্যন্ত শেখ হাসিনা তার পরিবার নিয়ে ভারতে নির্বাসিত জীবন কাটান।
আদভানি জানান, সে সময় তার ঠিক পাশের বাসাতেই শেখ হাসিনা থাকতেন। উনাকে সম্মান জানাতে পারা আমার জন্যও সম্মানের বিষয়, বলেন আদভানি।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ ও ভারতের সম্পর্ক আরো মজবুত করতে শেখ হাসিনা কাজ করে যাচ্ছেন। সেজন্য তাকে নিজের দেশেও বিভিন্ন প্রতিক‚লতার মুখে পড়তে হচ্ছে।
নির্মলা সীতারমণ অনুষ্ঠানের স্বাগত বক্তব্যে শেখ হাসিনাকে ‘ভারতের বিশেষ বন্ধু’ অভিহিত করে বলেন, ‘ভারত আপনার মতো বন্ধু খুঁজে পেয়েছে।
বাংলাদেশে ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট শেখ হাসিনাকে হত্যার জন্য গ্রেনেড হামলার ঘটনা স্মরণ করে নির্মলা বলেন, কোথাও এ ধরনের হামলা হতে পারে; সেটা আমরা চিন্তাও করতে পারি না।’
বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসবিরোধী সমাবেশে ওই হামলায় আইভী রহমানসহ ২৪ জন নিহত হন। শেখ হাসিনাও সেদিন আহত হন। তার শ্রবণ ইন্দ্রিয় ক্ষতিগ্রস্ত হয়।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ