পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
অর্থনৈতিক রিপোর্টার : সরকারি কর্মচারীদের জন্য অষ্টম বেতন কাঠামো বাস্তবায়নের পর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকদের বেতনের ক্ষেত্রে সৃষ্ট বৈষম্য দূর করার দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি। জবাবে কমিটি গঠন করে পর্যালোচনার আশ্বাস দিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত।
গতকাল অর্থ মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে অর্থমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকে সমিতির নেতারা এ দাবি জানান। বৈঠকে প্রাথমিক ও গণশিক্ষামন্ত্রী মোস্তাফিজুর রহমান ফিজার, অর্থ সচিব হেদায়েতুল্লাহ আল মামুন, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের ভারপ্রাপ্ত সচিব মোহাম্মদ আসিফ-উজ-জামান উপস্থিত ছিলেন।
বৈঠকে শিক্ষকদের পক্ষে ছিলেন সমিতির নির্বাহী সভাপতি ওয়েছ আহমেদ চৌধুরী, মহাসম্পাদক আমিনুল ইসলাম চৌধুরীসহ নেতৃবৃন্দ।
বৈঠক শেষে অর্থমন্ত্রী বলেন, আজকের বৈঠকের উদ্দেশ ছিল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের সমস্যা সম্পর্কে অবহিত হওয়া, তা হয়েছি। তাদের সমস্যা রাতারাতি সমাধান করা সম্ভব নয়। পুরো বিষয়টি পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে দেখা হবে। এজন্য একটা কমিটি গঠন করা হবে। সেখানে বিষয়টি নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা শেষে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
২০১৪ সালের ৯ মার্চ প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের এক প্রজ্ঞাপন সাংবাদিকদের কাছে তুলে ধরেন বাংলাদেশ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির নির্বাহী সভাপতি ওয়েছ আহমেদ চৌধুরী।
প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ করা হয়েছে, সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত ও প্রশিক্ষণবিহীন প্রধান শিক্ষকদের পদমর্যাদা তৃতীয় শ্রেণি থেকে দ্বিতীয় শ্রেণিতে উন্নীত করে বেতন স্কেল ১২ নম্বর গ্রেড ও ১১ নম্বর গ্রেডে উন্নীত করা হলো। একই সঙ্গে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত ও প্রশিক্ষণবিহীন সহকারী শিক্ষকদের বেতন স্কেল যথাক্রমে ১৪ ও ১৫ নম্বর গ্রেডে উন্নীত করা হলো।
ওয়েছ আহমেদ চৌধুরী বলেন, ২০১৪ বছরের ২৭ নভেম্বরের অর্থ মন্ত্রণালয়ের দেওয়া অন্য আরেকটি চিঠির কারণে আমরা আগের ওই চিঠির সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছি। এরপর থেকেই জটিলতা শুরু হয়েছে। নতুন বেতন স্কেলেও তা সমাধান করা হয়নি। সুতরাং নতুন বেতন স্কেলে জ্যেষ্ঠ প্রধান শিক্ষকদের এতদিনের সিনিয়রিটি বা চাকরিকালীন টাইমস্কেল যুক্ত করে বেতন নির্ধারণ করলে সমস্যার সমাধান হবে।
বৈঠকে কেসস্টাডি হিসেবে মৌলভীবাজারের বড়লেখা উপজেলার দুই শিক্ষকের বেতন কাঠামো উপস্থাপন করা হয়। যেখানে প্রজেশ চন্দ্র দাস ১৯৯৯ সালের ৫ ডিসেম্বর ১৯৭৫ টাকা বেতন স্কেলে প্রধান শিক্ষক হিসেবে যোগ দিয়েছেন। অন্যদিকে মো. ছয়ফুল ইসলাম একই বছর ৬ এপ্রিল ১৮৭৫ টাকা বেতন স্কেলে সহকারী শিক্ষক হিসেবে যোগ দেন।
২০১৪ সালে প্রধান শিক্ষক ১১তম গ্রেডে এবং সহকারী শিক্ষকরা ১৪তম গ্রেডে অন্তর্ভুক্ত হন। অষ্টম বেতন কাঠামো কার্যকরের পরও প্রধান শিক্ষকদের বেতনে টাইম স্কেল যুক্ত হয়নি। অন্যদিকে সহকারী শিক্ষকদের বেতনে যুক্ত করা হয় তিনটি টাইম স্কেল, যা যুক্ত করে তাদের বেতন চূড়ান্ত করা হয়। যেখানে উভয় পদের বেতন ১৫ হাজার ৯৮০ টাকা হয়ে যায়।
বৈঠকে অর্থমন্ত্রীর কাছে বিদ্যমান বৈষম্যের চিত্র তুলে ধরা হয়। এতে বলা হয়েছে, সহকারী শিক্ষকের তুলনায় প্রধান শিক্ষক এক ধাপ ওপরের স্কেলে নিয়োগ পেলেও ১৫ বছর পর প্রধান শিক্ষক ও সহকারী শিক্ষকের বেতন স্কেল ও মূল বেতন সমান। সহকারী শিক্ষকের তুলনায় প্রধান শিক্ষক পদ ২০০৬ সালে দুই ধাপ এবং ২০১৪ সালে তিন ধাপ ওপরের স্কেলে উন্নীত হলেও বাস্তবে তার কোনো প্রতিফলন নেই। ২০১৪ সালের ৯ মার্চ প্রধান শিক্ষকদের উন্নীত বেতনে টাইম স্কেল যুক্ত করে নির্ধারণ না করায় প্রধান শিক্ষকরা বৈষম্যের শিকার হচ্ছেন।
এই বিবরণীর ব্যাখ্যায় সমিতির মৌলভীবাজার জেলার সভাপতি মঞ্জুলাল দে বলেন, প্রধান শিক্ষকদের টাইম স্কেল দেওয়া হলে তারা এখন ৮ নম্বর গ্রেডে চলে যেতেন।
সমিতির যুগ্ম সম্পাদক গিয়াস উদ্দিন বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০১৪ সালে আমাদের তৃতীয় গ্রেডে উন্নীত করার ঘোষণা দিয়েছিলেন। সেই ঘোষণা অনুসারে গেজেট হয়নি। রেট্রোসপেকটিভ ইফেক্ট দিয়ে সেই গেজেট হলেও এই সমস্যা থাকে না।
বৈঠকে সমিতির সভাপতি মো. আব্দুল আউয়াল তালুকদার বলেন, এ বৈষম্যের ফলে অনেক স্থানে প্রকৃত বেতন ও স্কেল উভয় দিক থেকে সহকারী শিক্ষকরা প্রধান শিক্ষকদের ওপরে চলে গেছেন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।