Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

মঙ্গল শোভাযাত্রা ঈমান-আক্বিদা ও ইসলামী আদর্শের বিরোধী-আল্লামা জুনায়েদ বাবুনগরী

| প্রকাশের সময় : ১০ এপ্রিল, ২০১৭, ১২:০০ এএম

চট্টগ্রাম ব্যুরো : পয়লা বৈশাখে বর্ষবরণের নামে বিভিন্ন জীবজন্তুর মূর্তি নিয়ে মঙ্গল শোভাযাত্রা ঈমান-আক্বিদা ও ইসলামী আদর্শের ঘোরতর বিরোধী বলে উল্লেখ করেছেন হেফাজতে ইসলামের মহাসচিব আল্লামা হাফেজ মুহাম্মদ জুনায়েদ বাবুনগরী। গত শনিবার এক বিবৃতিতে তিনি বর্ষবরণের নামে মুখে উল্কি আঁকা এবং নারী-পুরুষের অবাধ বিচরণসহ সকল অনৈসলামিক ও বিজাতীয় সংস্কৃতি থেকে দূরে থাকার জন্য মুসলমান জনসাধারণের প্রতি আহŸান জানিয়েছেন।
আল্লামা বাবুনগরী চলতি বছর পয়লা বৈশাখ দেশের সকল সরকারি স্কুল কলেজে মঙ্গল শোভাযাত্রার ন্যায় ঈমান বিধ্বংসী আগ্রাসী সংস্কৃতির আয়োজনকে শিক্ষা অধিদপ্তর কর্তৃক বাধ্যতামূলক করার তীব্র নিন্দা এবং অবিলম্বে ঈমান-আক্বীদা ও ইসলামবিরোধী এই নির্দেশনা প্রত্যাহারেরও দাবি জানান। তিনি বলেন, মুসলিম ছাত্রদের ঈমানবিরোধী রীতি পালনে বাধ্য করা যায় না। এটা নাগরিকদের অধিকার রক্ষায় সংবিধানের মৌলিক নীতিমালা বিরোধী। আমরা দেশীয় রীতি ও সংস্কৃতির বিরোধী নই। তবে সংস্কৃতির লেবেল সেঁটে দিয়ে মুসলমানদের ঈমান হরণ করার আয়োজনে চুপ থাকার সুযোগ নেই।
বিবৃতিতে তিনি বলেন, বর্ষবরণের নামে মূলত মুসলমনাদের ঈমান-আক্বীদাবিরোধী ভিনদেশি হিন্দুত্ববাদী ও আগ্রাসী সংস্কৃতির প্রসার ঘটানোর অপচেষ্টা চলছে। নতুন বছরের প্রথম দিনে বিভিন্ন প্রাণির ছবি ও মুখোশ পরে মঙ্গল শোভাযাত্রার নামে যে র‌্যালি বের করা হয়, এখানে কার কাছে মঙ্গল ও কল্যাণ কামনা করা হচ্ছে? ইসলামের বিশ্বাস মতে কোন জীবজন্তু, বন্যপ্রাণী ও দেবদেবীর মূর্তির কাছে কল্যাণ ও মঙ্গল কামনা করলে ঈমান থাকবে না।
তিনি বলেন, মুসলমানদের বিশ্বাস মতে ভাল-মন্দ, মঙ্গল-অমঙ্গল সবকিছুই আল্লাহর ইচ্ছায় হয়ে থাকে। মুসলমানকে কল্যাণ ও মঙ্গল কামনা করতে হবে একমাত্র আল্লাহর কাছেই। কাজেই মুসলমানদের জন্যে মঙ্গল শোভাযাত্রার সংস্কৃতি চর্চা অবশ্যই পরিত্যাজ্য। তিনি বিস্ময় প্রকাশ করে বলেন, স্কুল-কলেজ পড়–য়া ৯২ ভাগ মুসলমানের সন্তানকে কী করে শিক্ষা অধিদপ্তর ঈমান বিধ্বংসী মঙ্গল শোভাযাত্রা পালনের নির্দেশ দিতে পারে! যে সংস্কৃতির রীতি ও ধরণ সম্পর্কে দেশের মানুষের কোনো ধারণা নেই- এমন রীতি দেশীয় সাংস্কৃতি হয় কী করে?
বিবৃতিতে হেফাজত বলেন, নারী-পুরুষের অবাধ চলাচলের বহুমুখী ক্ষতিকর দিক রয়েছে। ২০১৫ সাল, আগেও বহুবার বর্ষবরণের অনুষ্ঠানে নারী নির্যাতন ও নারীদের সম্ভ্রমহানীর মতো ন্যাক্কারজনক ঘটনা ঘটেছে। তাই মা-বোনদের প্রতি আহŸান জানাই, তারা যেন বর্ষবরণের নামে ইসলামবিরোধী বিজাতীয় এসব অনুষ্ঠানে শরিক হওয়া থেকে বিরত থাকেন।
বিবৃতিতে হেফাজত মহাসচিব আরো বলেন, ধর্মনিরপেক্ষতা প্রতিষ্ঠার নামে দেশে দৃশ্যত শিক্ষা, সংস্কৃতি ও আদর্শিকভাবে জাতিকে ধর্মহীন করার উদ্যোগই চলছে। বর্তমানে স্কুল-কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়ে ইসলামী শিক্ষাকে সঙ্কুচিত করা হয়েছে। সামাজিক আচার-অনুষ্ঠানসহ সাংস্কৃতিক ক্ষেত্রেও পৌত্তলিক কালচার, বেহায়াপনা, নগ্নপনা এখন রীতি হয়ে উঠছে। ঘরে-বাইরে, রাস্তায়, মার্কেটে, জনমাধ্যমে, টেলিভিশন, সিনেমায় সর্বত্রই এখন ভোগ-বিলাসিতা ও যৌনউদ্দীপক আচরণের ছড়াছড়ি। কথায় কথায় ওলামা-মাশায়েখ, ইসলামী শিক্ষা এবং দাঁড়ি-টুপি ও হিজাবধারীদের বিরুদ্ধে বিষোদ্গার, কট‚ক্তি, অপবাদ ও হেয় প্রতিপন্ন করা হচ্ছে। আল্লামা জুনায়েদ বাবুনগরী ঈমান-আক্বীদা বিরোধী শিরকী এসব প্রথা বন্ধের জন্য সরকারের প্রতি আহŸান জানিয়ে বলেন, জাতি হিসেবে মূলত আমাদের কোন দিকে ঠেলে দেয়া হচ্ছে তা প্রত্যেকেরই ভেবে দেখা দরকার।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ