পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
সরকার আদম আলী, নরসিংদী থেকে : ইলিশ এখন সোনার হরিন। পয়লা বৈশাখে পান্তা-ইলিশ খাবার জন্য ইলিশের পিছে দৌড়াচ্ছে মানুষ। আর ইলিশ দৌড়াচ্ছে মানুষকে। এ এক অভিনব খেলায় পরিণত হয়েছে। কিন্তু ইলিশের নাগাল পাচ্ছে খুবই কম সংখ্যক ভাগ্যবান মানুষ।
বিক্রেতারা মওকা বুঝে ইলিশ বিক্রি করছে। গতকাল রোববার সকালে ব্রাহ্মন্দী নয়াবাজারে ৩ কেজি ৩ শত গ্রাম ওজনের ৩টি ইলিশ বিক্রি হয়েছে ৭ হাজার ৯২০ টাকায়। ৩টি ইলিশের ওজনই সমান এক কেজি ১০০ গ্রাম করে। এ ৩ টি ইলিশের দামকে ক্রেতা সাধারণ একটি খাসির দামের সাথে তুলনা করেছেন। তারা বলেছেন ৭ হাজার ৯২০ টাকা দিয়ে বাজার থেকে ২০ কেজি ওজনের একটি খাসি কেনা যেতো। এমনিভাবে বাজারে এখন নির্ধারিত দরে কোন ইলিশ বিক্রি হচ্ছে না। ধনী গ্রাহক হলে এক দাম, আবার মাঝারী গ্রাহক হলে আরেক দামে বিক্রি হচ্ছে ইলিশ। বিক্রেতারা বলছে ইলিশ বিক্রি করে টু-পাইস কামানোর এখনই সময়। পয়লা বৈশাখ হচ্ছে ইলিশ বিক্রেতাদের আশীর্বাদ।
নরসিংদীতে ইলিশ ব্যবসা হচ্ছে মাত্র কয়েকজন আড়তদারের মনোপলি ব্যবসা। রিপন, জোটন ও সুবল নামে ৩ ব্যক্তি দীর্ঘ দিন যাবত নরসিংদীতে ইলিশের মনোপলি ব্যবসা করছে। তারা ইলিশ আমদানী করে চাঁদপুর, নোয়াখালী ও চট্টগ্রাম থেকে। প্রতিদিন এসব স্থান থেকে কাঠের বক্স ভর্তি ইলিশ ট্রেনে করে নরসিংদী রেলস্টেশনে আসে। সেখান থেকে তারা নরসিংদী বাজারে নিয়ে একচেটিয়া দরে খুচরা বাজারগুলোতে সরবরাহ করে। এ ক্ষেত্রে দর থাকে নির্ধারিত। রিপন, জোটন ও সুবল যে দরে ইলিশ সরবরাহ করে এর বাইরে আর কারো কিছুই করার থাকে না। রিপন, জোটন ও সুবলের নির্ধারিত দরে কিনে নিয়ে খুচরা বিক্রেতারা নরসিংদী জেলার বিভিন্ন বাজারে নিজেদের সুবিধা অনুযায়ী দরে বিক্রি করে। ইলিশ বিক্রি করে বিশাল সম্পদের মালিক হয়েছে আড়তদাররা। যারা উৎপাদন স্থল থেকে পাইকারী বিক্রেতারা ইলিশ প্রেরণ করে। তারাই দর নির্ধারণ করে দেয়। প্রেরণকারী পাইকারী বিক্রেতারা যে দরে বিক্রি করার কথা বলে নরসিংদীর আড়তদাররা সে দামেই ইলিশ সরবরাহ করে। এ ক্ষেত্রে তারা শুধু কমিশন ভোগ করে।
প্রতি বছরই পয়লা বৈশাখ এলে ইলিশের বাজারে একটি নৈরাজ্যকর অবস্থার সৃষ্টি হয়। যারা পয়লা বৈশাখের সংস্কৃতির ধারক বাহক এবং ধনী, তারা চড়া দামেই ইলিশ কিনে খায় এবং ইলিশ মাছ দিয়ে অতিথি আপ্যায়ন করে। একইভাবে দেশের কিছু সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান, স্কুল, কলেজ, ক্লাব ইত্যাদি সামাজিক সংগঠনও পয়লা বৈশাখের পান্তা-ইলিশের জন্য বেপরোয়া হয়ে যায়। পয়লা বৈশাখের ২/১ দিন আগে থেকেই তারা বাজারে বাজারে হানা দিয়ে ইলিশ মাছ কিনতে থাকে। এ ক্ষেত্রে তারা দামকে কোন বিবেচনায় নেয় না। যখন যে দরে পায় সে দরেই তারা ইলিশ কিনে। সমাজের ধনীক শ্রেণীর মানুষের পান্তা-ইলিশ খাওয়া দেখে গরীব মানুষদের মনেও ইলিশ খাবার স্পৃহা জাগে। কিন্তু ইলিশ কিনে খাবার মত আর্থিক সংগতি তাদের নেই। ধনীরা যখন চড়া দামে ইলিশ কিনে, গরীবরা তখন চেয়ে চেয়ে দেখে। কিন্তু এদের কথা কেউ শুনে না।
এছাড়া নরসিংদীর একজন সাবেক জেলা প্রশাসক তার ফেসবুকে নাইলোটিকা মাছ ভাজা দিয়ে পান্তাভাত খাবার পরামর্শ দিয়েছেন। আরো কয়েকজন শিক্ষাবিদ বলেছেন, পুঁটি মাছের ভাজা দিয়ে পান্তাভাত ভাত খাওয়া হবে বাঙালীর সংস্কৃতির সবচেয়ে বেশী পরিপূরক। এছাড়া পান্তাভাতের সাথে বেলে মাছের একটি রাসায়নিক মিল রয়েছে। এই বেলে মাছের কাঁচা ঝোল দিয়েও পান্তাভাত খাওয়া যেতে পারে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।