Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

পরিবার পরিকল্পনা অধিদফতরের কেন্দ্রীয় পণ্যের গুদামে আগুন পুড়ে গেছে জন্মনিয়ন্ত্রণের সব সামগ্রী

তিনটি পৃথক তদন্ত কমিটি গঠন

| প্রকাশের সময় : ১০ এপ্রিল, ২০১৭, ১২:০০ এএম

স্টাফ রিপোর্টার : রাজধানীর মহাখালীর টোমার মোড়ে অবস্থিত পরিবার পরিকল্পনা অধিদফতরের কেন্দ্রীয় পণ্যের গুদামে শনিবার রাতে ভয়াবহ অগ্নিকাÐের ঘটনা ঘটেছে। এতে কেউ হতাহত হয়নি। তবে পুড়ে গেছে পরিবার পরিকল্পনার জন্য ব্যবহৃত (জন্ম নিয়ন্ত্রণের) যাবতীয় সামগ্রী।
গুদামে রাসায়নিক উপকরণ থাকায় আগুন নেভাতে বিলম্ব হয়। প্রাথমিকভাবে আগুন লাগার কারণ ও ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ জানা যায়নি। রাত ১২টার পরে লাগা আগুন দীর্ঘ চেষ্টার পর গতকাল সন্ধ্যায় পুরোপুরি নেভাতে সক্ষম হয় ফায়ার কর্মীর। এ ঘটনায় পৃথক তিনটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।
গুদামের নিরাপত্তারক্ষী মুসলিম শিকদার বলেন, টিনসেড ভবনের এ গুদামের মূল গেইটে শনিবার রাতে দায়িত্ব পালন করছিলেন তিনি। গুদামের ভেতরে তখন কেউ ছিলেন না। মূল গেইট ছিল তালাবদ্ধ। ঘটনার সময় রাত আনুমানিক সাড়ে ১২টা থেকে পৌনে ১টা। এ সময় হঠাৎ বৈদ্যুতক বাতি নিভে যায়। সঙ্গে সঙ্গে আবার জ্বলে ওঠে। এর পর পরই তিনি গুদামে আগুন দেখতে পান। তখন তিনি আগুন আগুন বলে চিৎকার করতে থাকেন। ঘটনাস্থলে ছুঁটে আসেন আশপাশের বাসিন্দারা। আগুন লাগার কথা মসজিদের মাইক থেকে ঘোষণা করা হয়। খবর পেয়ে পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা ঘটনাস্থলে আসেন। কোনো ধরনের লুটপাট কিংবা অনাকাক্সিক্ষত ঘটনা এড়াতে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারি বাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থল ঘিরে রাখেন।
ফায়ার সার্ভিসের সহকারী পরিচালক মাসুদুর রহমান আকন্দ জানান, আগুন লাগার খবর পেয়ে ফায়ার সার্বিস সদর দফতরসহ, গুলশান, মোহাম্মদপুরসহ বিভিন্ন স্টেশন থেকে মোট ১৪টি ইউনিট ঘটনাস্থলে ছুটে যায়। ঘটনাস্থলের আশপাশে আবাসিক এলাকা। যে কারনে আগুন যাতে ছড়িয়ে না পড়ে, সে ব্যবস্থা আগে নিতে হয়েছে ফায়ার কর্মীদের। তিনি আরো জানান, গুদামের ভেতরে প্রচুর পরিমাণে রাসায়নিক উপকরণ ছিল। তা ছাড়াও ছিল পানির অভাব । মূলতঃ এসব কারণে আগুন পুরোপুরি নেভাতে বেগ পেতে হয়। দীর্ঘ ৬ ঘণ্টারও বেশি সময় পরে ভোর সাড়ে ৬টার দিকে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হয়। তবে পুরোপুরি আগুন নির্বাপণ করা সম্ভব হয়েছে গতকাল সন্ধ্যা ৬টায়। ফায়ার সার্ভিসের কর্মকর্তারা জানান, আগুন পুরোপুরি নেভাতে পণ্যাগারের টিনের চালা খুলে ফেলা হয়েছে। গতকাল রোববার সন্ধ্যা ৬টার পর ফায়ার সার্ভিসের গাড়ি ঘটনাস্থল ত্যাগ করে।
এদিকে আগুনে ক্ষয়ক্ষতি প্রসঙ্গে স্বাস্থ্য অধিদফতরের অতিরিক্ত পরিচালক (ড্রাগ অ্যান্ড স্টোর) হানিফুর রহমান বলেন, এখানে পরিবার পরিকল্পনার যত মেথড, বিশেষ করে কনডম, জন্ম নিয়ন্ত্রণের অপারেশনে ব্যবহৃত গøাভস, ওষুধের কার্টন, মা ও শিশু স্বাস্থ্যের জন্য ব্যবহারকৃত ৩৬ ধরনের ওষুধ ছিল। সবই পুড়ে গেছে। তবে ঠিক কত টাকার ওষুধ ছিল তা বলা সম্ভব হচ্ছেনা। হিসেব নিকেশের পরে বলা বলা যাবে।
এদিকে পরিবার পরিকল্পনা অধিদফতরের গোডাউনে অগ্নিকাÐের ঘটনায় পৃথক তিনটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। পরিবার পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়, পরিবার পরিকল্পনা অধিদফতর দু’টি কমিটি গঠন করেছে। এ ছাড়া কী পরিমাণ ক্ষতি হয়েছে তা জানতে আলাদা ইনভেনটরি কমিটি গঠন করেছে পরিবার পরিকল্পনা অধিদফতর। পরিবার পরিকল্পনা অধিদফতরের মহাপরিচালক (ডিজি) কাজী মোস্তফা সরওয়ার কমিটি গঠনের ব্যাপারে তথ্য দেন। তিনি বলেন, অধিদফতরের পক্ষ থেকে একটি পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটি করা হয়েছে। অধিদফতরের তথ্য মূল্যায়ন বিভাগের (আইইএম) পরিচালক ফেরদৌস আলমকে প্রধান করে এ কমিটি গঠন করা হয়। ঘটনায় ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ জানতে অধিদফতরের পরিচালক (মা ও শিশু স্বাস্থ্য) ডা. মো. শরীফকে প্রধান করে একটি ইনভেনটরি কমিটি গঠন করা হয়েছে। এ ছাড়া পরিবার পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে পাঁচ সদস্যের একটি কমিটি করা হয়েছে। মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব আব্দুল মালেককে কমিটির প্রধান করা হয়েছে। পাঁচ কার্যদিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে কমিটিকে বলা হয়েছে। তিনি বলেন, প্রাথমিকভাবে শর্ট সার্কিট থেকে আগুন লাগার আমরা ধারণা করছি। তবে এটি নাশকতা কি না তাও খতিয়ে দেখা হবে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ