পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
বিজনেস ইনসাইডার : সিরিয়ার ইদলিব প্রদেশে খান শেইখুনে সরকারিবাহিনী রাসায়নিক গ্যাস হামলা চালালে গত ৪ এপ্রিল প্রায় ৮০ জন নিহত হয়। এ হামলার জবাবে যুক্তরাষ্ট্র সিরিয়ার স্থানীয় সময় ৭ এপ্রিল সকালে বাশার আল-আসাদের নিয়ন্ত্রিত একটি বিমানঘাঁটি ও সামরিক অবকাঠামোতে ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায়।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রথম দিকে সিরিয়ার যুদ্ধে জড়ানোর ধারণা বাদ দিলেও ইদলিবে রাসায়নিক গ্যাস হামলার পর তার অবস্থানের পরিবর্তন ঘটে। তিনি হামলা চালানোর পর বলেন, ভয়ংকর রাসায়নিক অস্ত্রের বিস্তার রোধ ও ব্যবহার প্রতিহত করতে যুক্তরাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ জাতীয় স্বার্থে এ হামলা চালানো হয়।
এদিকে এ হামলা চালানোর পর বহু দেশ যুক্তরাষ্ট্রের প্রশংসা করেছে। অন্যদিকে সিরিয়া ও রাশিয়া দ্রæত এর নিন্দা জানায়। পরে ইরানও তাদের সাথে যোগ দেয়।
পক্ষে
যুক্তরাজ্য : যুক্তরাজ্যের প্রতিরক্ষামন্ত্রী মাইকেল ফ্যালন বলেছেন, যুক্তরাজ্য সরকার এ হামলার জন্য যুক্তরাষ্ট্র সরকারের প্রতি পূর্ণ সমর্থন জ্ঞাপন করছে। তিনি বলেন, সিরিয়ায় আসাদ প্রশাসনের রাসায়নিক অস্ত্র ব্যবহার সুস্পষ্টভাবে আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞা অতিক্রম করেছে।
ফ্যালন বিবিসিকে বলেন, আমেরিকার প্রতিরক্ষামন্ত্রী জিম ম্যাটিস আগের দিন আমার সাথে আসাদ সরকারের রাসায়নিক হামলা চালানোর সক্ষমতা নিয়ে আলাপ করেন। আমরা হামলা চালানোর পর রাশিয়ার সম্ভাব্য প্রতিক্রিয়া বোঝা ও সে ব্যাপারে করণীয় বিষয়ও মূল্যায়ন করি।
তিনি বলেন, এরপর তিনি প্রেসিডেন্টের কাছে উত্থাপন করার বিভিন্ন প্রস্তাব পর্যালোচনা করেন। পরে তিনি প্রেসিডেন্টের সিদ্ধান্ত বিষয়ে আমাকে জানান ও হামলার বিষয়টি অবগত করেন। আমাদের প্রধানমন্ত্রীও বিষয়টি জানতে পারেন।
তুরস্ক : তুরস্ক এ হামলাকে স্বাগত জানিয়েছে এবং নিরাপদ এলাকার জন্য সিরিয়ায় নো-ফ্লাই জোন প্রতিষ্ঠা করতে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি আহŸান জানিয়েছে। প্রেসিডেন্ট রজব তাইয়েব এরদোগানের মুখপাত্র ইরাহিম কালিন বলেন, মার্কিন বিমান হামলা আসাদ সরকারের যুদ্ধাপরাধীদের জন্য একটি ইতিবাচক জবাব। তিনি বলেন, বেসামরিক জনগণের বিরুদ্ধে রাসায়নিক ও প্রচলিত হামলা চালিয়ে যে বিনা বিচারে থাকা যায় না, শারিয়াত বিমানঘাঁটিতে হামলা হচ্ছে সে বিষয়ে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ।
ফ্রান্স ও জার্মানি : শুক্রবার জার্মান চ্যান্সেলর অ্যাঞ্জেলা মার্কেল ও ফরাসি প্রেসিডেন্ট ফ্রাসোঁয়া ওলাদেঁ ফোনে কথা বলার পর দেয়া এক যৌথ বিবৃতিতে বলেন, আসাদ রাসায়নিক হামলা চালিয়ে নিজেই এ হামলা ডেকে এনেছেন। তারা বলেন, প্রেসিডেন্ট আসাদ বারবার রাসায়নিক অস্ত্র ব্যবহার ও নিজ জনগণের বিরুদ্ধে অপরাধ করেছেন। তিনি এ সকল ঘটনার জন্য দায়ী। দু’নেতা বলেন, প্রেসিডেন্ট আসাদকে তার অপরাধজনক কাজের জন্য দায়ী করতে তাদের দেশ জাতিসংঘের অংশীদারদের সাথে কাজ করা অব্যাহত রাখবে।
অস্ট্রেলিয়া : অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী ম্যালকম টার্নবুল বলেন যে তার সরকার যুক্তরাষ্ট্র সরকারের দ্রæত ও ন্যায্য জবাব দানকে জোর সমর্থন করে। তিনি বলেন, এ জবাব সমানুপাতিক ও লক্ষ্য নির্ধারিত।
জাপান : প্রধানমন্ত্রী শিনজো অ্যাবে মার্কিন ক্ষেপণাস্ত্র হামলাকে সমর্থন করেছেন। জাপান মার্কিন কৌশল অনুধাবন ও সমর্থন করে। তিনি বলেন, ক্ষেপণাস্ত্র হালা পরিস্থিতির আরো অবনতি রোধ করবে।
ইউরোপীয় ইউনিয়ন : ইউরোপীয় কাউন্সিলের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড টাস্ক বলেন, রাসায়নিক হামলার পর এ ক্ষেপণাস্ত্র হামলার প্রয়োজন ছিল। এক টুইট বার্তায় তিনি বলেন, মার্কিন হামলা বর্বরোচিত কাজের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ছিল। তিনি বলেন, সিরিয়ায় বর্বরতার অবসানে ইইউ যুক্তরাষ্ট্রের সাথে কাজ করবে।
ইউরোপীয় কমিশনের প্রেসিডেন্ট জাঁ ক্লদ জাঙ্কার বলেন যে বারবার এ ধরনের অস্ত্র ব্যবহারের বিরুদ্ধে অবশ্যই জবাব দেয়া দরকার। এ উদ্যোগ ভবিষ্যত হামলাকে প্রতিহত করবে। তিনি আরো বলেন, ইইউ সিরিয়ার সমস্যার একটি রাজনৈতিক সমাধান খুঁজে পেতে সাহায্য করতে প্রস্তুত।
ইতালি : ইতালির পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যাঞ্জেলিনো আলফানো এক বিবৃতিতে বলেন, ইতালি হামলার পিছনের কারণ বুঝতে পেরেছে এবং এক উপযুক্ত নিরোধক মনে করছে। তিনি নিরাপত্তা পরিষদের একটি জরুরি বৈঠক ডাকার আহŸান জানান।
সউদি আরব : সউদি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একটি সূত্র সউদি প্রেস এজেন্সিকে জানান যে সউদি আরব সিরিয়ায় মার্কিন হামলার প্রতি জোর সমর্থন জানিয়েছে। সূত্র এ সামরিক অভিযানের জন্য এককভাবে সিরিয়া সরকারকে দায়ী করেন।
সিরীয় বিদ্রোহীরা : সিরিয়াার আসাদ সরকারবিরোধী বিদ্রোহীরা এ হামলাকে স্বাগত জানিয়েছে। সিরিয়ার জাতীয় রাজনৈতিক বিরোধী জোট গ্রæপের মিডিয়া অফিসের প্রধান আহমাদ রামাদান জানান, সিরিয়া সরকার যাতে আর বিমান হামলা চালাতে না পারে এবং তাদেরকে আন্তর্জাতিকভাবে নিষিদ্ধ অস্ত্র ব্যবহার থেকে বিরত রাখতে এ ধরনের হামলা অব্যাহত থাকবে বলে আমরা আশা করি।
বিপক্ষে
রাশিয়া : দি গার্ডিয়ান পত্রিকা জানায়, রুশ প্রেসিডেন্ট ভøাদিমির পুতিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ শুক্রবার সকালে বলেন, রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট এ হামলাকে আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন করে ও মিথ্যা অজুহাতে একটি সার্বভৌম রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে আগ্রাসন হিসেবে দেখছেন। পেসকভ আরো বলেন, সিরিয়ার কোনো রাসায়নিক অস্ত্র নেই। তিনি বলেন, এ হামলা রুশ-মার্কিন সম্পর্কে এক বিরাট আঘাত যা ইতোমধ্যেই দুর্বল পর্যায়ে রয়েছে।
সিরিয়া : সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদ শুক্রবার বলেন, মার্কিন হামলা বোকামি ও দায়িত্বজ্ঞানহীন। সিরিয়ার সেনাবাহিনী বর্বর আগ্রাসনের জন্য যুক্তরাষ্ট্রকে অভিযুক্ত করেছে। সেনাবাহিনী বলেছে, তারা সন্ত্রাসবাদ দমন অব্যাহত রাখার মাধ্যমে এর জবাব দেবে।
ইরান : রয়টারস জানায়, ইরান এ হামলাকে ধ্বংসাত্মক ও মারাত্মক বলে আখ্যায়িত করেছে। ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র বাহরাম কাসেমি এ হামলার নিন্দা করে বলেন, এ রকম একতরফা হামলা ও এ ধরনের পদক্ষেপ সিরিয়ার সন্ত্রাসীদের শক্তিশালী করবে, পাশাপাশি সিরিয়া ও এ অঞ্চলের পরিস্থিতিকে জটিল করবে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।