Inqilab Logo

সোমবার, ০১ জুলাই ২০২৪, ১৭ আষাঢ় ১৪৩১, ২৪ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

কাশ্মীরে নাক গলানোর হুমকি চীনের

অরুণাচলে তিব্বতী ধর্মগুরু দালাই লামা

| প্রকাশের সময় : ৮ এপ্রিল, ২০১৭, ১২:০০ এএম

টাইমস অব ইন্ডিয়া. কম : চীন তার রাষ্ট্র পরিচালিত মিডিয়াকে আবারো হুমকি দেয়ার জন্য ব্যবহার করছে। সর্বশেষ এ হুমকিতে রাষ্ট্র পরিচালিত মিডিয়া ভারতকে ‘ঘুষির বদলে ঘুষি’ জবাব প্রদান ও চীন সীমান্ত ঘেঁষা ভারতের অশান্ত উত্তরাঞ্চলীয় রাজ্যের ব্যাপারে নাক গলাতে বেইজিংয়ের প্রতি আহŸান জানিয়েছে।
চীনের সীমান্তবর্তী ভারতীয় রাজ্য অরুণাচল প্রদেশে তিব্বতী ধর্মীয় নেতা দালাই লামার সফরে চীনের বিচলিত হয়ে পড়াটা গত সপ্তাহে স্পষ্ট হয়ে ওঠে। ৬ এপ্রিল রাষ্ট্র পরিচালিত চায়না ডেইলি ও গেøাবাল টাইমস পত্রিকার দু’টি সম্পাদকীয় থেকে তা আরো পরিষ্কার হয়েছে।
চায়না ডেইলির সম্পাদকীয়তে দালাই লামার সফর বিষয়ে বলা হয়, নয়া দিল্লী যদি নোংরা খেলা খেলতে চায় তাহলে বেইজিংকে তার জবাবে কোনো দ্বিধা না করে ‘ঘুষির বদলে ঘুষি’ মারতে হবে। গেøাবাল টাইমসের সম্পাদকীয়তে সীমান্ত রাষ্ট্রের নাম উল্লেখ না করে কাশ্মীরে নাক গলানোর হুমকি দেয়া হয়েছে।
সম্পাদকীয়তে হুমকি দিয়ে বলা হয়, ভারতের চেয়ে চীনের জিডিপি বৃদ্ধির হার কয়েকগুণ বেশী, সামরিক সামর্থে ভারত মহাসাগর তার নাগালে এবং ভারতের প্রতিবেশী দেশগুলোর সাথে ভালো সম্পর্ক রয়েছে। ভারতের উত্তরাঞ্চলে আছে গোলযোগপূর্ণ রাজ্য। চীন যদি ভারতের সাথে ভূরাজনৈতিক খেলায় লিপ্ত হয়, তাহলে কি নয়া দিল্লী বেইজিংয়ের সাথে এঁটে উঠতে পারবে? তাদের সংশয়মূলক ভাষার অর্থ দাঁড়ায় চীন যদি চায় তাহলে কাশ্মীর ও অন্যান্য সীমান্তবর্তী রাজ্যে নাক গলাতে পারে।
মনে হয়, কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী কিরেন রিজিজুর মন্তব্য এবং অরুণাচল সফরে তার দালাই লামার সফরসঙ্গী হওয়া বেইজিংকে ক্ষুব্ধ করেছে।
রিজিজু ৫ এপ্রিল বলেন, দালাই লামার সফর নিয়ে চীনের আপত্তি করা ঠিক নয় এবং ভারতের অভ্যন্তরীণ ব্যাপারে তাদের হস্তক্ষেপ করা উচিত নয়।
চায়না ডেইলি ৬ এপ্রিল এ মন্তব্যে চীনের বিপুল অসন্তোষ প্রকাশ করেছে। পত্রিকার সম্পাদকীয়তে বলা হয়, রিজিজু চীনের কূটনৈতিক প্রতিনিধিত্ব থেকে একটি লাইন ধার করে নিজেকে চতুর ভাবতে পারেন, তবে তিনি এখানে মৌলিক পার্থক্যটুকু উপেক্ষা করেছেনঃ তাইওয়ান ও চীনের অন্য যে কোনো অংশের মত তিব্বত হচ্ছে চীনা ভূখÐের অংশ তা নয়া দিল্লী মানুক আর না মানুক।
রিজিজুর মন্তব্যে চীন যে ক্ষুব্ধ তা চীনা কম্যুনিস্ট পার্টি পরিচালিত পত্রিকা গেøাবাল টাইমসও বলেছে। পত্রিকার সম্পাদকীয়তে বলা হয়, দালাই লামা আগেও বিরোধপূর্ণ অঞ্চলে গেছেন। কিন্তু এবার তার সফরে যা পার্থক্য তা হচ্ছে এবার তাকে স্বাগত জানিয়েছেন ও সাথে রয়েেেছন ভারতের স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী কিরেন রিজিজু।
দক্ষিণ তিব্বত ভারতের অবিচ্ছেদ্য অংশ বলে রিজিজুর মন্তব্যের প্রেক্ষিতে চায়না ডেইলি ব্রিটিশ উপনিবেশ আমলের ইতিহাসের দিকে দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে। সম্পাদকীয়তে বলা হয়, চীনের অভ্যন্তরীণ গোলযোগের সুযোগে সাবেক ঔপনিবেশিক প্রভু চীনের কাছ থেকে দক্ষিণ তিব্বত চুরি করে।
৫ এপ্রিল চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় দালাই লামাকে সাথে নিয়ে খেলা করার মাধ্যমে ভারত তার মর্যাদা হারাচ্ছে বলে অভিযোগ করে।
৬ এপ্রিলের সম্পাদকীয়গুলোর একটিতে রাষ্ট্র পরিচালিত মিডিয়া বলে যে দালাই লামার সফরকে বেইজিংয়ের বিরুদ্ধে ‘টিট ফর ট্যাট’ হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে। উল্লেখ্য, চীন নিউক্লিয়ার সাপ্লায়ার্স গ্রæপে (এনএসজি) ভারতের সদস্য পদ সমর্থন করতে অস্বীকার করেছে এবং পাকিস্তানভিত্তিক সন্ত্রাসী মাসুদ আজহারকে নিষিদ্ধ করতে বাধা দেয়।
গেøাবাল টাইমস বলে, এবার অরুণাচল প্রদেশে দালাই লামার সফরে নয়া দিল্লী তাকে চীনের উপর চাপ সৃষ্টির জন্য কূটনৈতিক অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করছে বলে দেখা যাচ্ছে। কিন্তু এটা হচ্ছে নোংরা ও অশিষ্ট পদক্ষেপ। চীনের কূটনীতিতে দালাইলামা গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক প্রতীক।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ