Inqilab Logo

সোমবার, ০১ জুলাই ২০২৪, ১৭ আষাঢ় ১৪৩১, ২৪ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

বাজারে ইলিশের সংকট তীব্র

মনোপলি ব্যবসার জন্য সব মাছ হিমাগারে

| প্রকাশের সময় : ৮ এপ্রিল, ২০১৭, ১২:০০ এএম

সরকার আদম আলী, নরসিংদী থেকে : পহেলা বৈশাখকে সামনে রেখে নরসিংদীসহ দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় বাজারগুলোতে ইলিশের তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে। সংকটের কারণে মাছের দাম অস্বাভাবিকভাবে বেড়ে গেছে। বৈশাখ মাসের প্রথম দিনে পান্তার সাথে খাওয়ার জন্য ইলিশের পিছনে হন্যে হয়ে ঘুরছে এক শ্রেণীর অতি সংস্কৃতিবান ক্রেতা। সামর্থ্যবান এসব ক্রেতা ঢাকা থেকে ইলিশ সংগ্রহ করে নিজেদের ফ্রিজ ভর্তি করছে। অন্যেরা বাজার থেকে বাজারে ঘুরে বেড়াচ্ছে। কোথাও ইলিশ খুঁজে পাচ্ছে না। দেশে উৎপাদিত ইলিশের সিংহভাগ ভারতসহ বিভিন্ন দেশে বৈধ অবৈধ পথে রফতানী হয়ে যাবার কারণে প্রায় প্রতিবছরই এ অবস্থার সৃষ্টি হচ্ছে। রফতানী বা পাচারের পর যা কিছু বাকি থাকছে তা পহেলা বৈশাখে মনোপলি ব্যবসার জন্য মজুদদাররা সব ইলিশ পাঠিয়ে দেয়া হচ্ছে হিমাগারে। নরসিংদীসহ রাজধানী ঢাকার আশেপাশের জেলাগুলোতে কিছু কিছু ঠেঙ্গা ইলিশ (হিমায়িত) পাওয়া গেলেও বিক্রি হচ্ছে আকাশ ছোঁয়া দামে। পাঁচশত গ্রাম ওজনের একটি ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ৮ শত থেকে ৯শত টাকা কেজি দরে। ৬শ গ্রাম থেকে ১ কেজি ওজনের ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ১৬শত থেকে ২ হাজার টাকা কেজি দরে। ১ কেজির ওজনের ওপরে হলে তার দাম হাঁকা হচ্ছে ৩ থেকে ৪ হাজার টাকা পর্যন্ত। এরপরও ইলিশ বেচা কেনায় কোন কমতি নেই। এক শ্রেণীর ক্রেতা চড়া দামেই ইলিশ কিনে নিচ্ছে। এদিকে সচেতন ক্রেতারা জানিয়েছেন, উৎপাদক দেশ হয়েও বাঙালীরা পহেলা বৈশাখে ইলিশ খুঁজে পায় না। চড়া দাম দিয়ে ইলিশ কিনে খেতে হয়। কিন্তু কলকাতার বাজারে ইলিশের কোন ঘাটতি নেই। সেখানকার বাজার ও হোটেলগুলোতে বড় বড় ইলিশ মাছ বিক্রি হয়। বাংলাদেশের চেয়ে কম দামেই সেখানে ইলিশ পাওয়া যায়, খাওয়া যায়। ইলিশ না দিলে প্রেম দিবো না এ নীতিতেই বাংলাদেশের ইলিশ চলে যাচ্ছে বিদেশে।
খুচরা ইলিশ বিক্রেতারা জানিয়েছে, নরসিংদীতে ২/১ জন পাইকারী ব্যবসায়ী ঢাকা, নোয়াখালী, চাঁদপুর ও চট্টগ্রাম থেকে ইলিশ আমদানী করে তাদের মনগড়া দামে সরবরাহ করছে। খুচরা বিক্রেতারা বাধ্য হয়ে চড়া দামে কিনে চড়া দামে বিক্রি করছে। পহেলা বৈশাখ যত এগুবে দাম ততই বৃদ্ধি পাবে। এখন ইলিশ কিনছে ব্যক্তি পর্যায়ে পারিবারিকভাবে খাওয়ার জন্য। পহেলা বৈশাখের বিভিন্ন অনুষ্ঠান উপলক্ষে পান্তা ইলিশ দিয়ে আপ্যায়ন করার জন্য বিভিন্ন সংগঠন বা প্রতিষ্ঠান ইলিশের বাজারে হানা দিবে। তখন ৫শত গ্রামের নিচের ওজনের ইলিশও বিক্রি হবে এক দেড় হাজার টাকা কেজি দরে। ইলিশ সম্পর্কে খবর নিয়ে জানা গেছে দেশে এখন চাহিদা অনুযায়ী ইলিশ উৎপাদিত হয় না। নরসিংদীর মেঘনায় এক সময় প্রচুর ইলিশ পাওয়া যেতো। এখন নাব্যতা কমে যাওয়ায় ইলিশের সংখ্যাও কমে গেছে। তাছাড়া প্রতি বছর নরসিংদীর মেঘনা থেকে ব্যাপকভাবে জাটকা ধরা হয়। আর এসব জাটকা বিক্রি হয় ঢাকার পাইকারী বাজারে। আড়তদাররা তাদের খেয়াল খুশিমত দামে বিক্রি করে এসব জাটকা ও ইলিশ।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ