Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

৬.৯ শতাংশ প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাস এডিবি’র

| প্রকাশের সময় : ৭ এপ্রিল, ২০১৭, ১২:০০ এএম

অর্থনৈতিক রিপোর্টার : রেমিটেন্স ও রফতানি আয়ের ধীরগতির কারণে চলতি অর্থবছরে জিডিপি প্রবৃদ্ধির কাক্সিক্ষত লক্ষ্যে বাংলাদেশ পৌঁছাতে পারবে নাÑ এমন মত দিয়েছে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক এডিবি। অর্থনীতির হাল-হকিকত নিয়ে এডিবির বার্ষিক প্রতিবেদন ‘এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট আউটলুক ২০১৭’ বলছে, এবার বাংলাদেশ ৬ দশমিক ৯ শতাংশ জিডিপি প্রবৃদ্ধি পেতে পারে।
প্রায় এক দশক ৬ শতাংশের বৃত্তে ‘আটকে’ থাকার পর গত ২০১৫-১৬ অর্থবছরে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ৭ শতাংশের ঘর অতিক্রম করে। চ‚ড়ান্ত হিসাবে প্রবৃদ্ধি হয় ৭ দশমিক ১১ শতাংশ।
সরকার এবারের বাজেটে ২০১৬-১৭ অর্থবছরে ৭ দশমিক ২ শতাংশ প্রবৃদ্ধির লক্ষ্য ঠিক করেছে। আর অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতের বিশ্বাস, আগামী দিনগুলোতে প্রবৃদ্ধি আর ৭ শতাংশের নিচে নামবে না।
তবে এডিবির মতো বিশ্ব ব্যাংকও সরকারের প্রত্যাশার সঙ্গে পুরোপুরি একমত হতে পারেনি। গত জানুয়ারিতে তাদের অর্ধবার্ষিক প্রতিবেদন ‘গেøাবাল ইকোনমিক প্রসপেক্টস’Ñ এ ৬ দশমিক ৮ শতাংশ প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাস দেয়া হয়েছে।
গতকাল এডিবির ঢাকা কার্যালয়ে প্রিন্সিপাল কান্ট্রি স্পেশালিস্ট জয়ৎসানা ভার্মা এবারের ‘এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট আউটলুক’ এর বিভিন্ন দিক তুলে ধরে বলেন, ‘মূলত রেমিটেন্স কমে যাওয়ায় এবং রফতানি আয়ের ধীর গতির কারণে বাংলাদেশের জিডিপি প্রবৃদ্ধি এবার কিছুটা কম হবে।’
মধ্যপ্রাচ্যসহ বিভিন্ন দেশের অর্থনীতি বাজে সময় পার করায় এবং তেলের বাজারে মন্দার কারণে সেসব দেশ থেকে প্রবাসীদের পাঠানো টাকার পরিমাণ গত দুই বছর ধরে কমছে।
গত অর্থবছরে রেমিটেন্সে বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধি কমেছে ১১ দশমিক ১৬ শতাংশ। এডিবির পূর্বাভাস বলছে, চলতি অর্থবছর শেষে রেমিটেন্স কমতে পারে ৭ শতাংশের মতো।
আর আগের অর্থবছরে পণ্য রফতানিতে বাংলাদেশের আয়ের প্রবৃদ্ধি ছিল ৮ দশমিক ৯ শতাংশ। গত কিছুদিনে রফতানি আয়ে ধীর গতির কারণে এবার তা কমে ৬ শতাংশ হতে পারে বলে মনে করছে এডিবি।
সংবাদ সম্মেলনে আরো উপস্থিত ছিলেন এডিবির ডেপুটি কান্ট্রি ডিরেক্টর চাই লি এবং বহিঃসম্পর্ক বিভাগের প্রধান গোবিন্দ বাড়।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ‘২০১৭ অর্থবছরে কৃষি ক্ষেত্রে জিডিপি প্রবৃদ্ধি কমে দাঁড়াবে ২ দশমিক ৪ শতাংশ। ২০১৮ অর্থবছরে এটি আরো কিছুটা কমে হবে ২ দশমিক ৩ শতাংশ’।
‘শিল্প খাতে ২০১৭ অর্থবছরে প্রবৃদ্ধি কমে হবে ১০ দশমিক ৬ শতাংশ। তবে ২০১৮ অর্থবছরে কিছুটা বেড়ে হবে ১০ দশমিক ৭ শতাংশ’।
‘অন্যদিকে সেবা খাতে ২০১৭ অর্থবছরে প্রবৃদ্ধি হবে ৬ শতাংশ ২০১৮ সালে অপরিবর্তিত থাকবে’।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ‘২০১৭ অর্থবছরে মূল্যস্ফীতি হবে ৬ দশমিক ১ শতাংশ, যা ২০১৬ অর্থবছরে ছিল ৫ দশমিক ৯ শতাংশ। ২০১৮ অর্থবছরে মূল্যস্ফীতি হবে ৬ দশমিক ৩ শতাংশ’।
প্রতিবেদনে বাংলাদেশের অর্থনীতির জন্য সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হিসাবে বলা হয়েছেÑ উৎপাদনমূখী কর্মসংস্থান সৃষ্টি করা। এ ছাড়া বাংলাদেশের অর্থনীতির বর্তমান অবস্থার প্রশংসা করা হয়েছে।
প্রতিবেদনে এশিয়ার ক্ষেত্রে বলা হয়েছে, ‘২০১৭ অর্থবছরে এশিয়া মহাদেশে প্রবৃদ্ধি হবে ৫ দশমিক ৭ শতাংশ। ২০১৮ অর্থবছরে প্রবৃদ্ধি হবে একই’।
এডিবি’র স্টাফ কনসালট্যান্ট জাহিদ হাসান বলেন, ‘দেশে ৬ শতাংশের বেশি বৃদ্ধি পাচ্ছে জিডিপি। অভ্যন্তরীণ অর্থনীতি দেশের ভেতরেই অভ্যন্তরীণ চাহিদা তৈরি করছে এবং এ চাহিদা টিকে থাকছে। এটি ইতিবাচক’।
‘সারা বিশ্বে গেøাবাল জিডিপির সঙ্গে গেøাবাল এক্সপোর্ট কমে আসছে। আগামীতে অনেক দেশকেই নিজেদের অভ্যন্তরীণ চাহিদার ওপর নির্ভর করতে হবে, অভ্যন্তরীণ জিডিপির বৃদ্ধির ওপর। এটি বাংলাদেশের জন্য ইতিবাচক’।
‘বাংলাদেশের সম্ভাবনার জায়গাটি হচ্ছেÑ অভ্যন্তরীণ চাহিদার ওপর নির্ভর করেই জিডিপি বৃদ্ধি সম্ভব।’
অর্থনৈতিক উন্নয়নের সঙ্গে কৃষির উৎপাদন কমে যাওয়াটা স্বাভাবিক বলেই মনে করেন তিনি। এখানে প্রযুক্তির মাধ্যমে উৎপাদন বৃদ্ধি করতে হবে বলে মত দেন জাহিদ হাসান।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ