পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
মানিকগঞ্জ থেকে ফিরে মালেক মল্লিক : গণশুনানিতে সরকারি সেবাবঞ্চিত সাধারণ মানুষ বলে যাচ্ছিলেন নিজেদের ভোগান্তির কথা। ভোগান্তির শিকার একজন জানালেন বিনামূল্যের ওষুধ ৫ টাকার জন্য দেয়নি কমিউনিটি ক্লিনিক।
সরকারি এক কর্মকর্তার নাম ধরেই অভিযোগ করলেন একজন। অশ্রæসিক্তভাবে একজন হতাশা ও ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, সেবার পরির্বতে সরকারি কোনো কোনো কর্মকর্তারা খারাপ আচরণও করে থাকেন। এসময় যেন সেবা বঞ্চিতদের ক্ষোভে কোণঠাসা হয়ে পড়েন সরকারি সংশ্লিষ্ট দফতরের কর্মকর্তারা। পরে আগামীতে এমন কিছু হবে না বলে প্রতিশ্রæতি দিচ্ছিলেন ওইসব দফতরের কর্মকর্তারা। গতকাল বৃহস্পতিবার মানিকগঞ্জ জেলার শিংগাইর উপজেলা পরিষদের সামনে সরকারি সেবা নিয়ে গণশুনানির দৃশ্য ছিল এমনই। দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) এ গণশুনানির আয়োজন করে। নারী ও পুরুষ মিলে ৩০ জন সেবা বঞ্চিত সাধারণ মানুষ তাদের অভিযোগ ভোগান্তির কথা তুলে ধরেন। গণশুনানিতে সবচেয়ে বেশি অভিযোগ আসে উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ও পল্লীবিদ্যুতের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তার বিরুদ্ধে।
শিংগাইর উপজেলার সরকারি দফতর নিয়ে এ গণশুনানি অনুষ্ঠিত হয়।সহকারী কমিশনার (ভূমি) কার্যালয়, সাব-রেজিস্ট্রার কার্যালয়, উপজেলা বিদ্যুৎ সমিতি কার্যালয়, উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ কার্যালয় এবং প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষা কার্যালয়ের কর্মকর্তারাসহ ১০টি সেবাগ্রহীতাদের নানা প্রশ্ন ও অভিযোগের জবাব দেন। দুদক ও জেলা প্রশাসনের শীর্ষস্থানীয় ব্যক্তিরাও অভিযোগ নিয়ে কর্মকর্তাদের নির্দেশনা দেন।
সিঙ্গাইর উপজেলার কাশিমনগর গ্রামের বাসিন্দা মো. সানাউল্লাহ সাকিব। সন্তান অসুস্থ হওয়ায় কাশিমনগর কমিউনিটি ক্লিনিকে গিয়ে সেবার পরিবর্তে হয়েছেন হয়রানির শিকার। এমনকি মাত্র ৫ টাকা দিতে না পারায় ক্লিনিক থেকে পাননি ওষুধও। কিন্তু সরকারি ওষুধ তো বিনামূল্যে দেয়ার কথা। আর ওষুধ না পেয়ে সন্তান দিনে দিনে হয়েছে আরও অসুস্থ। এসব কথাই বলছিলেন অশ্রæসিক্ত সাকিব। শুধু সানাউল্লাহই নন, তার মতো আরো অনেকেই বিনামূল্যের ওষুধ না পাওয়ার অভিযোগ করেন
স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. মো. সেকেন্দার আলী মোল্লাকে কেন তারা ওষুধ পাননি জানতে চাইলে তিনি বলেন, এমন ঘটনা ঘটলে সেটি দুঃখজনক। বিষয়টি তদন্তের জন্য কমিটি গঠন করব। প্রকৃত দোষীদের খুঁজে বের করে শাস্তি দেয়া হবে।
ভবিষ্যতে এমন কোনো ঘটনা যেন আর না ঘটে, সেজন্য সতর্ক থাকবেন বলেও জানান ডা. সেকেন্দার। এক বৃদ্ধ আকবর আলী বলেন, বয়স্কভাতার কার্ডে ৩ হাজার টাকা দেয়ার স্বাক্ষর নিয়ে ১ হাজার ২শ’ টাকা দেয়া হয়েছে। কিন্তু কেন? বয়স্ক বলে এভাবে দুর্নীতি করবেন, এটি মেনে নেয়া যায় না। এভাবে বয়স্কদের সঙ্গে প্রতারণা করা হলে দেশ এগোবে কেমন করে।
এ বিষয়ে সমাজসেবা কর্মকর্তা আখিনুর ইয়াসমিন বলেন, এমন ঘটনা তার জানা নেই। বিষয়টি অনুসন্ধানের জন্য সময়ের আবেদন করেন তিনি। নিখিল চন্দ্র ভৌমিকের বলেন, তার পৈত্রিক ১৮ শতাংশ জমি খারিজের জন্য গেলে ২০ হাজার টাকা ঘুষ দাবি করা হয়েছে।
ভূমি অফিসের সহকারী কমিশনার বলেন, তিনি এখানে কয়েক মাস আগে যোগদান করেছেন। এ বিষয়ে তার কিছু জানা নেই। তবে তিনি তদন্ত করে দেখবেন। যদি কোথাও কোনো দুর্নীতি হয় তাহলে তাদের আইনের আওতায় আনবেন বলে কথা দেন এলিনা আকতার।
গণশুনানি শেষে কমিশনার ড. নাসির উদ্দিন আহমেদ বলেন, দুর্নীতবাজদের কোনো ছাড় দেয়া হবে না। দুর্নীতি করলে বাড়ি পাঠানো হবে। সরকারি চাকরিজীবীদের বাড়ি পাঠানো সবচেয়ে সহজ। সরকারি কর্মকর্তারা যদি দুর্নীতি করেন, তাহলে তাদেরকে জেলে পাঠানো হবে। দুর্নীতি করলে তিনি রাজনৈতিক কর্মকর্তা হন আর যতো বড় কর্মকর্তা হন, কাউকেই ছাড় দেয়া হবে না। কাজেই ভালোভাবে কাজ করুন, না হলে খবর আছে।
অনুষ্ঠানে দুদকের ঢাকা বিভাগীয় পরিচালক নাসিম আনোয়ারের উপস্থাপনায় অন্যান্যর মধ্যে বক্তব্য রাখেন দুর্নীতি প্রতিরোধ বিষয়ক গবেষক আসাদ ইসলাম, শিংগাইর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. জুবায়ের, পৌর মেয়র খুরশেদ আলম ভূইয়া, জেলা দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটির সভাপতি মো. জলিল উদ্দিন প্রমুখ।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।