Inqilab Logo

শুক্রবার, ০৫ জুলাই ২০২৪, ২১ আষাঢ় ১৪৩১, ২৮ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

শহীদুল্লাহ হলের সেই পুকুরে ডুবে আবারো ঢাবি ছাত্রের মৃত্যু

| প্রকাশের সময় : ৬ এপ্রিল, ২০১৭, ১২:০০ এএম

স্টাফ রিপোর্টার : আবারও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদুল্লাহ হলের পুকুরে গোসলে নেমে লাশ হতে হয়েছে ছাত্রাবাসটির বায়েজীদ বোস্তামি (২২) নামে এক ছাত্রকে। ওই ছাত্র আইএসআরটি বিভাগের প্রথম বর্ষে অধ্যয়নরত ছিলেন। তার গ্রামের বাড়ি ঠাকুরগাঁও জেলা সদরে। বাবার নাম আবু বাছেদ আলী।
মেডিক্যাল সূত্র জানায়, গতকাল বুধবার বিকেল ৪টার দিকে কয়েক বন্ধুর সঙ্গে শহীদুল্লাহ হলের পুকুরে গোসল করতে নামে বায়েজীদ বোস্তামি। এক সময় সে পুকুরে তলিয়ে যায়। খবর পেয়ে পরে ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি দল এসে তাকে অচেতন অবস্থায় উদ্ধার করেন। দ্রæত তাকে নিয়ে যাওয়া হয় ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। সেখানে জরুরি বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদুল্লাহ হলের ছাত্র রিফাত শামীম বলেন, প্রতি বছর ওই পুকুরে গোসল করতে নেমে কেউ না কেউ লাশ হয়ে ফিরে আসে। এরপরেও কর্তৃপক্ষ কোনো পদক্ষেপ নেয়নি। এভাবে একের পর এক বিশ্ববিদ্যালয়ের মেধাবী ছাত্রদের জীবন দিতে হচ্ছে। তিনি বলেন, কর্তৃপক্ষ ছাত্রদের হয় পুকুরে নামা বন্ধ করুক, না হয় পুকুরটিতে কী আছে তা তদন্ত করুক।
এর আগে, ২০১৬ সালের ১৩ আগস্ট গোসল করতে নেমে মোহাম্মদ আলী নামে বংশালের বীরশ্রেষ্ঠ মতিউর রহমান স্কুলের নবম শ্রেণির ছাত্র লাশ হয়ে ফেরেন। জানা যায়, সাত বন্ধুসহ আলী শহীদুল্লাহ হলের পুকুরে আসে সাঁতার কাটতে। এ সময় চার বন্ধু গোসল করতে নামলেও তিনজন নামেনি। কিছুক্ষণ পর আলী পানিতে ডুবে যায়। পরে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা এসে তাকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। একই বছরের ৭ ফেব্রæয়ারি পুকুরে গোসল করতে নেমে লুঙ্গি পরিহিত এক যুবকের মৃত্যু হয়।
শহীদুল্লাহ হলের কর্মচারীদের কাছ থেকে জানা যায়, গত ৩০ বছরে এ পুকুরে ডুবে মারা গেছে ২০ জন। অধিকাংশই মারা গেছেন সাঁতার কাটতে গিয়ে। এর মধ্যে বেশ কয়েকজন বহিরাগতও রয়েছেন। হলের প্রবীণ কর্মচারী আব্দুর রাজ্জাক জানান, এটি অনেক পুরনো পুকুর। পুকুরটি নিয়ে অনেক আগে থেকেই ভৌতিক কাহিনি রয়েছে। এখানে সাঁতার কাটতে গিয়ে পুকুরের মাঝখান থেকে নিচের দিকে তলিয়ে গেছে একাধিক শিক্ষার্থী। পরে তাদের লাশ ভেসে ওঠে। এসব কারণে পুকুরে গোসল ও সাঁতার কাটা নিষেধ লেখা একটি সাইনবোর্ড ঝুলিয়ে দেয়া হয়। তবে বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে প্রশাসনিক তদারকি করা জরুরি হয়ে পড়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের মৃত্তিকা, পানি ও পরিবেশ বিভাগের একাধিক শিক্ষকের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, পানির যে মান থাকা দরকার তা এ পুকুরের পানিতে নেই। ফলে পানিতে ডুব দিলে রক্তচাপজনিত সমস্যা সৃষ্টি হয়। তখন যাদের বেশি সমস্যা হয় তারা আর ভেসে উঠতে পারে না বলে মারা যায়।
এ ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রক্টর অধ্যাপক ড. এএম আমজাদ বলেন, শহীদুল্লাহ হলের পুকুরটিতে কেউ যেন না নামে। এ সংক্রান্ত নিষেধ সংবলিত একটি সাইনবোর্ড টাঙানো ছিল। তারপরও অনেকেই গোসল করতে নামে। সকলকে এ বিষয়ে সচেতন থাকা দরকার।

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ