Inqilab Logo

মঙ্গলবার ১৯ নভেম্বর ২০২৪, ০৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৬ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

বাংলাদেশের স্বার্থ ক্ষুন্ন করে ভারতের সঙ্গে কোনো চুক্তি করা হবে না : প্রধানমন্ত্রী

| প্রকাশের সময় : ৬ এপ্রিল, ২০১৭, ১২:০০ এএম

বিশেষ সংবাদদাতা : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বাংলাদেশ এবং ভারতের মধ্যে কোনো চুক্তি হলে তা বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রেখেই হবে, দেশের জন্য ক্ষতিকর এমন কিছুই করা হবে না। বাংলাদেশের স্বার্থ ক্ষুন্ন করে ভারতের সঙ্গে কোনো চুক্তি করবেন না বলে দেশবাসীকে আশ্বস্ত করার পাশাপাশি এ নিয়ে বিএনপির বিরোধিতাকে আমলে নিচ্ছেন না বলেও জানিয়ে দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা
প্রধানমন্ত্রী বলেন, অনেকে অনেক কথা বলবে, নিজের বিবেক যদি ঠিক থাকে, দেশপ্রেম থাকে, আমার দেশের ক্ষতি অন্তত আমাদের দ্বারা হবে না। একটি স্বার্থান্বেষী মহল ১৯৭৪ সালে ভারতের সঙ্গে সম্পাদিত ২৫ বছরের সমঝোতা চুক্তিকে গোলামির চুক্তি হিসেবে আখ্যায়িত করেছিল। কিন্তু এই চুক্তি থেকে সীমান্ত সমস্যা সমাধানসহ বাংলাদেশেরই অর্জন বেশি।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গতকাল বুধবার তার তেজগাঁওস্থ কার্যালয়ে বাংলাদেশ পুলিশ অফিসার্স বহুমুখী সমবায় সমিতির উদ্যোগে বাস্তবায়নাধীন পুলিশ অফিসার্স হাউজিং সোসাইটির প্লটের বরাদ্দ পত্র পুলিশ বাহিনীর বিভিন্ন পদমর্যাদার ২৫ জন পুলিশ সদস্যের মধ্যে বিতরণকালে প্রধান অতিথির ভাষণে একথা বলেন।
শেখ হাসিনা বলেন, দেশ বেঁচে কী চুক্তি করবে, এই চুক্তি হলে মানব, ওই চুক্তি হলে মানব না, কে তারা? কী মানলো না মানলো, কার কী আসে যায়?
ইন্দিরা-মুজিব চুক্তি নিয়ে তিনি বলেন, এক সময় বিএনপি নেতারা এটাকে গোলামির চুক্তি বলত। তারপর দেখা গেল, সেই চুক্তি বাস্তবায়ন করে বাংলাদেশ লাভবান। গোলামি না, বরং অনেক জমি অনেক কিছু বাঙালিরা পেয়েছে। জিয়াউর রহমান ক্ষমতায় থাকতে এই চুক্তির কথা একবারের জন্য ভারতের কাছে তুলে ধরেছে কি? সাহসই পায়নি। এরপর জেনারেল এরশাদ ক্ষমতায়, সেও কোনো দিন তোলেনি।
তিনি আরো বলেন, সীমান্তে সন্ত্রাসী কর্মকান্ড নিয়ে উদাসীন ছিল বিএনপি-জামায়াত। তাদের শাসনামলে দেশের ভেতরের সব সন্ত্রাসী কর্মকান্ড পরিচালনা হতো। বহুল আলোচিত ১০ ট্রাক অস্ত্র পাচারের মূল হোতা ছিল তারা। ওই অস্ত্র বাংলাদেশের ভেতর দিয়ে চোরাচালান হয়ে ভারতে যাচ্ছিল। তাহলে দালালিটা কে করেছে, সমালোচকদের উদ্দেশ্যে প্রশ্ন রেখে প্রধানমন্ত্রী বলেন, নিজেরা করতে পারবে না, আবার অন্যরা করতে গেলে শর্ত দিবে, তা হয় না।
জঙ্গি দমনে পুলিশের ভূমিকার প্রশংসা করে এই বাহিনীর অভিযান নিয়ে প্রশ্ন তোলার সমালোচনাও করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর বিরামহীন কাজের কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, আমার খারাপ লাগে এই ভেবে যে, দিনরাত পরিশ্রম করা, সব সময় একটা চাপ মাথায় নিয়ে কাজ করা। প্রশংসা করবে, সাধুবাদ দিবে, উৎসাহ দিবেÑ তা না করে এটা হলো না কেন, ওটা হলো কেন? এটা হলে ওটা হতো। নানা জ্ঞান ছড়াতে থাকে। যাদের দায়িত্ব নেই তারা অনেক কিছুই বলতে পারে।
জঙ্গি দমনে বাংলাদেশের পুলিশ উন্নত দেশগুলোর চেয়ে বেশি সফলতা দেখিয়েছে বলে মন্তব্য করেন সরকারপ্রধান। উন্নত দেশগুলোতেও দেখলাম না, ঘটনা ঘটার আগে যারা এ ধরনের কর্মকান্ড করতে যাচ্ছে বা সন্ত্রাসী কর্মকান্ডে লিপ্ত, তাদেরকে তারা কিন্তু এ পর্যন্ত ধরতে পারেনি। এই দৃষ্টান্তটা আমরা বাংলাদেশে দেখাতে পেরেছি।
শেখ হাসিনা বলেন, তার সরকার দেশের জনসংখ্যার সঙ্গে সাদৃশ্য রেখে পুলিশ বাহিনীর সদস্য সংখ্যা আরো বাড়ানোর পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। ইতোমধ্যেই ৪১ হাজার পুলিশ সদস্যকে বাহিনী অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে এবং শীঘ্রই আরো ১০ হাজারকে অন্তর্ভুক্ত করা হবে।
পুলিশ বাহিনীর সদস্য এবং তাদের পরিবার-পরিজনদের কল্যাণে সরকারের পদক্ষেপ তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তার সরকারই প্রথম ২০০০ সালে পুলিশ স্টাফ কলেজ প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ গ্রহণ করে। তার সরকার অন্যান্য সরকারি চাকরিজীবীদের সঙ্গে পুলিশ কর্মকর্তাদেরও আবাসনের উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। কিন্তু এই প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হতে ১৭ বছর লেগে গেছে বলে আক্ষেপ করে তিনি বলেন, পুলিশ সদস্যদের জন্য এ ধরনের আবাসন সুবিধা জেলা ও বিভাগীয় পর্যায়েও স¤প্রসারণ করা হবে।
এর আগে পুলিশের আইজিপি মো. শহীদুল হক শত প্রতিকুলতা সত্তে¡ও পুলিশ হাউজিং সোসাইটিকে বাস্তব রূপ দেয়ায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ধন্যবাদ জানান। এ সময় অন্যান্যের মধ্যে প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব ড. কামাল আব্দুল নাসের চৌধুরী, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সচিব সুরাইয়া বেগম উপস্থিত ছিলেন।
চেকোশ্লোভাকিয়ার সঙ্গে পুরনো সম্পর্ক পুনরুজ্জীবিত করার ওপর গুরুত্ব আরোপ
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশ এবং চেকোশ্লোভাকিয়ার মধ্যে পুরনো সম্পর্ক পুনরুজ্জীবিত করার ওপর গুরুত্ব আরোপ করেছেন।
আইপিইউ সম্মেলনে যোগদান উপলক্ষে ঢাকায় আগমনকারী চেক রিপাবলিকের একটি প্রতিনিধি দল গতকাল বুধবার প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে তার সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাতে এলে তিনি একথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী ‘ডাবল ট্যাক্সেশন’ এড়ানোসহ অর্থনৈতিক এবং প্রতিরক্ষা সহযোগিতা জোরদারের মাধ্যমে দু’দেশের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক শক্তিশালীকরণে গুরুত্বারোপ করেন। চেক প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেন গ্রোসপিক এমপি।
বৈঠকের পরে সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আইপিইউ সম্মেলনে যোগ দিতে ঢাকায় আসার জন্য চেক রিপাবলিকের প্রতিনিধি দলকে ধন্যবাদ জানান। প্রধানমন্ত্রী এ সময় বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধে চেকোশ্লোভাকিয়ার অবদানের কথা স্মরণ করে দু’দেশের বিদ্যমান পুরনো সম্পর্ক পুনরুজ্জীবনের ওপর গুরুত্বারোপ করেন।
তিনি এ সময় দেশের একশ’ অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠায় তার সরকারের উদ্যোগ তুলে ধরে এসব জোনে চেক উদ্যোক্তাদের বিনিয়োগে এগিয়ে আসার আহবান জানান। চেক বিনিয়োগকারীদের জন্য এসব ইকোনমিক জোনে বিনিয়োগের পর্যাপ্ত সুযোগ-সুবিধা থাকবে বলে উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী।
উত্তরে গ্রোসপিক এমপি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ অভূতপূর্ব উন্নতি সাধন করে ৭ ভাগের ওপরে প্রবৃদ্ধি অর্জনে সক্ষম হয়েছে। তিনি এ সময় চেক রিপাবলিকের পক্ষ থেকে বাংলাদেশকে কারিগরি সহায়তাদানেরও প্রস্তাব করেন।



 

Show all comments
  • sumon ৬ এপ্রিল, ২০১৭, ২:০৭ এএম says : 1
    joy bangla
    Total Reply(0) Reply
  • ৬ এপ্রিল, ২০১৭, ৬:১৫ এএম says : 0
    আমরা স্বাধীনতা অর্জন করেছি কারো সাথে চুক্তি করে বসবাসের জন্য নয়।..............................................
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: প্রধানমন্ত্রী


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ