পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
স্টাফ রিপোর্টার : হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের রানওয়ে বড় ধরনের দুর্ঘটনা থেকে রক্ষা পেযেছে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের একটি উড়োজাহাজ। দুর্ঘটনার শিকার নতুন কেনা বোয়িং ৭৩৭-৮০০ এয়ারক্রাফটটি হ্যাঙ্গারে রাখা হয়েছে। পাইলটের অদক্ষতা ও ভুলে বোয়িং কোম্পানির এ নতুন উড়োজাহাজ বিকল হয়ে পড়ার ঘটনায় তদন্ত চলছে। তবে পাইলটের অদক্ষতা ও ভুলের কারণে এ ধরনের ঘটনা ঘটার পরও তাদের বিরুদ্ধে কোনো ধরনের ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। পাইলট ও কো-পাইলট নেশাগ্রস্ত ছিলেন নাকি অন্য কোনো মানসিক সমস্যায় ভোগছিলেন তাও জানা যায়নি। নিয়মমাফিক তাদের রক্তসহ শারীরিক পরীক্ষা-নিরীক্ষাও করা হয়নি বলে অভিযোগ ওঠেছে। জানা গেছে, ওই ফ্লাইটের পাইলট ছিলেন ক্যাপ্টেন আহসান জয়। আর কো-পাইলট (ফার্স্ট অফিসার) ছিলেন ক্যাপ্টেন অন্তরা। ওই ঘটনার পর তাদের দু’জনকেই সাধারণ ছুটি দেয়া হয়েছে বলে বিমানের বলাকা ভবন সূত্র জানিয়েছে।
অ্যাভিয়েশন বিশেষজ্ঞরা জানান, এ ঘটনায় পাইলট ও ফার্স্ট অফিসারের অজ্ঞতা প্রমাণিত হয়েছে। তাদের মতে, এ ধরনের ঘটনায় আকাশে চলন্ত অবস্থায় এয়ারক্রাফটের মাঝ বরাবর ভেঙে পড়ার আশঙ্কা ছিল। এতে বড় ধরনের দুর্ঘটনার শিকার হতে পারত যাত্রী ও ক্রুরা। নিয়ম অনুযায়ী, এ ক্ষেত্রে পাইলটের উচিত ছিল দ্রæত বিমানবন্দরের আশপাশে কোথাও অতিরিক্ত জ্বালানি তেল ফেলে দিয়ে জরুরি অবতরণ করা। আড়াই ঘণ্টা ফুয়েল পুড়িয়ে তারপর অবতরণ করা কোনোভাবেই ঠিক হয়নি। বিমানের নতুন কেনা এই বোয়িংয়ে ফিউল ডাম্পিং সিস্টেম ছিল। পাইলট ইচ্ছে করলে মুহূর্তেই সব তেল ডাম্পিং করতে পারতেন। কিন্ত এ ক্ষেত্রে তিনি তা অনুসরণ না করে আড়াই ঘণ্টাব্যাপী ডাম্পিং করায় একদিকে যাত্রীদের জানমাল যেমন চরম ঝুঁঁকিতে ঠেলে দিয়েছেন, তেমনি সিডিউলেরও ক্ষতি করেছেন। কিন্তু এ ঘটনায় বিমানের পরিচালক ফ্লাইট অপারেশন সংশ্লিষ্ট পাইলট ও কো-পাইলটের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থ নেননি বলে অভিযোগ ওঠেছে। নিয়ম অনুযায়ী এ ধরনের দুর্ঘটনার শিকার পাইলট ও কো-পাইলটকে তাৎক্ষণিক গ্রাউন্ডেড করে তাদের রক্ত ও মানসিক অবস্থা পরীক্ষা করানোর কথা।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে, বিমানের প্রধান ডাক্তার তাসলিমা জানান, তিনি এ ধরনের কোনো চিঠি পাননি। বিমান ম্যানেজমেন্ট ও সিভির অ্যাভিয়েশনের কাছ থেকে চিঠি পাওয়ার পর তিনি পাইলট ও কো-পাইলটের প্রয়োজনীয় স্বাস্থ্য পরীক্ষা করে দেখবেন।
বিমানের প্রকৌশল বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, পাইলটের ভুলে টেকঅফের সময় উড়োজাহাজটির টেলের (লেজে) সঙ্গে রানওয়েতে বড় ধরনের ঘর্ষণ হয়। সাধারণত এ ধরনের দুর্ঘটনা কবলিত এয়ারক্রাফট মাঝ বরাবর ভেঙে যেতে পারে। তবে টেল স্কিড (স্প্রিং) থাকায় বোয়িং ৭৩৭-৮০০ উড়োজাহাজটি বড় ধরনের দুর্ঘটনার হাত থেকে রক্ষা পায়।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিমানের একজন কর্মকর্তা বলেছেন, এটা দুর্ঘটনা নাকি বড় ধরনের নাশকতার চেষ্টা তা বের করতে পাইলটদের জিজ্ঞাসাবাদের জরুরি প্রয়োজন। ওই কর্মকর্তা বলেন, এটি নজিরবিহীন ঘটনা। তাছাড়া পাইলটদের বিরুদ্ধে তাৎক্ষণিক কোনো ব্যবস্থা না নেয়ার বিষয়টিও রহস্যজনক।
বিমানের জেনারেল ম্যানেজার (জনসংযোগ) শাকিল মেরাজ বলেন, এ ঘটনার কারণ নির্ণয়ের জন্য তদন্ত শুরু হযেছে। একই সঙ্গে ফ্লাইটটি মেরামত সম্পন্ন করা হয়েছে।
গত রোববার সন্ধ্যা সোয়া ৭টায় বিজি-০২৭ ফ্লাইটটি শাহজালাল বিমানবন্দর থেকে আবুধাবী যাওয়ার পথে দুর্ঘটনার শিকার হয়। পাইলট টেকঅফ করার পর বুঝতে পারেন, প্লেনটির লেজের সঙ্গে রানওয়ের ঘর্ষণ লেগেছে। এরপর পাইলট বিমানবন্দরের টাওয়ারের সঙ্গে যোগাযোগ করে ফ্লাইটটি ফের অবতরণের ক্লিয়ারেন্স চান। রাত ৯টা ৩৫ মিনিটে তিনি আবারো শাহজালালে অবতরণ করেন। এরপর ওই ফ্লাইটের যাত্রীদের অপর একটি ফ্লাইটে আবুধাবী পাঠানো হয়।
তবে টাওয়ারের ক্লিয়ারেন্স পাওয়ার পরও পাইলটের ঝুঁকিপূর্ণভাবে আরো আড়াই ঘণ্টা ফ্লাইট চালানোর ঘটনা বড় ধরনের ঝুঁঁকিপূর্ণ ছিল।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিমানের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক এয়ার কমোডর জাকিউল ইসলাম বলেন, সাধারণত এ ধরনের উড়োজাহাজ উড্ডয়নের সময় টেল স্কিড করে না। বিমানেও অতীতে এমনটি ঘটার কোনো নজির নেই। তবে মাঝে মাঝে উড়োজাহাজ অবতরণের সময় পাইলটের অদক্ষতা, ভুল বা প্রতিক‚ল আবহাওয়ার কারণে টেল স্কিড করতে পারে।
বিমানের প্রকৌশল বিভাগ বলছে, তারা ইতোমধ্যে উড়োজাহাজটির মেরামত কাজ সম্পন্ন করেছে। বোয়িংয়ের চেক লিস্ট অনুযায়ী ১৮ ধরনের পরীক্ষা- নিরীক্ষা শেষে তারা উড়োজাহাজটি অপারেশনের জন্য তৈরিও করেছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।